আমদানি মূল্য ৪০ পাইকারিতে বিক্রি ৭০ টাকা 

মিয়ানমারের পেঁয়াজ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ভারতীয় পেঁয়াজের সাথে পাল্লা দিয়ে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মিয়ানমারের পেঁয়াজও। গতকাল মঙ্গলবার নগরীর খাতুনগঞ্জে মিয়ানমারের ২৪ টন পেঁয়াজ ঢুকেছে। আড়তে এ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭২ টাকা কেজি দরে। অথচ এই পেঁয়াজের আমদানি মূল্য পড়েছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা। অর্থাৎ কেজি প্রতি ৩০-৩২ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। নগরীর খুচরা বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের সাথে পাল্লা দিয়ে মিয়ানমারের পেঁয়াজও বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে।

আমদানি বন্ধের কারণে দেশে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম উর্ধ্বমুখী হয়েছে। পাইকারি বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৭০ টাকা। মিয়ানমারের পেঁয়াজের দামও সমান দামে বিক্রি হচ্ছে।

খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের আড়ত হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ইদ্রিস মিয়া জানান, মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খাতুনগঞ্জে ২৪ টন মিয়ানমারের পেঁয়াজ ঢুকেছে। এ পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৭০-৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের একজন আড়তদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুপ্রভাতকে জানান, মিয়ানমারের পেঁয়াজের আমদানি মূল্য পড়েছে ৪০ টাকা। বন্দর থেকে হাত ঘুরিয়ে বাজারে আসতেই আরো ৩০-৩২ টাকা বেড়ে গেছে। ভারতীয় পেঁয়াজের রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়াতে মিয়ানমারের ব্যবসায়ীরাও দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে বাজারে মিয়ানমারের পেঁয়াজের মূল্য ৫০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়।

গতকাল চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা ৫৮ মেট্টিকটন পেঁয়াজ খালাস হয়েছে।

এদিকে গত ১৫ দিন ধরে খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজ বিক্রির পরিমাণ একেবারে কমে গেছে বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা। তারা এখন দিনে ১ বস্তার বেশি পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন।

খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের কমিশন এজেন্ট এসএন ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী আলী হোসেন সুপ্রভাতকে বলেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের পর অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ীও অতি মুনাফার লোভে পেঁয়াজ কিনে মজুদ করেছিলেন। কিন্তু এবার সাধারণ ক্রেতারা হুজুগে পেঁয়াজ কিনে মজুদ করেননি। ফলে আড়তে পেঁয়াজের বিক্রি কমে গেছে। ১ থেকে ৫ বস্তার বেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় না আড়তগুলোতে। যেখানে আগে  ৪০-৫০ বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি হতো। খাতুনগঞ্জের মোহাম্মদীয়া বাণিজ্যালয়ের স্বত্ত্বাধিকারী মিন্টু সওদাগর বলেন, ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার পর খুচরা ব্যবসায়ীরা ভেবেছিল গত বছরের মতো পেঁয়াজের দাম ২০০ টাকা কেজি ছাড়িয়ে যেতে পারে। কিন্তু এবার মিয়ানমার, পাকিস্তান, তুরস্ক, মিশর, নিউজল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাসহ আরো কয়েকটি দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। এ কারণে এবার ভারতীয় পেঁয়াজের দাম আর বাড়েনি।  দক্ষিণ ভারতে বন্যায় পেঁয়াজের ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়াতে সপ্তাহ খানেক আগে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম ২৫ থেকে একলাফে ৫০টাকা বেড়ে যায়। সংকটের কারণে ভারত গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে। পরদিন থেকে পাইকারী বাজারে হু হু করে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। দাম চড়ে যায় ৭০ টাকায়। খুচরা বাজারে ৮০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।