হালদা : দ্বিতীয় দফায় নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ

নিজস্ব প্রতিনিধি, রাউজান »
দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে দ্বিতীয় দফায় নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ।
গতকাল সোমবার বিকাল থেকে ডিম সংগ্রহকারীদের জালে নমুনা ডিম উঠতে শুরু করে। তবে পরিমাণ ছিল অনেক কম। টানা বর্ষণ ও ঘূর্ণিঝড়ের জলোচ্ছ্বাস এবং পাহাড়ী ঢল সৃষ্টি হওয়ায় জো ছাড়াই নমুনা ডিম ছেড়েছে বলে দাবি হালদা বিশেষজ্ঞদের।
সরেজমিন দেখা যায়, নৌকা ও বাঁশের ভেলা নোঙর করে জাল ফেলে বসে আছেন ডিম আহরণকারীরা। কছেশ ঘন্টা পর পর জাল তুললে ১০০ গ্রাম বা তার চেয়ে কম- বেশি ডিম উঠছে জালে।
ডিম সংহগ্রহকারীরা জানান, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পানি বেড়ে যায়। তবে জোয়ার আসার পর নদীতে স্রোত সৃষ্টি হলে নমুনা ডিম ছাড়তে শুরু করে মা মাছ। এর আগে থেকে হালদা নদীর রাউজান ও হাটহাজারী অংশের ৫ শতাধিক ডিম সংগ্রহকারী জাল ও ডিম সংগ্রহের সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত ছিলেন।
হালদার ডিম সংগ্রহকারী কামাল উদ্দিন সওদাগর বলেন, ডিম ছাড়লেও পরিমাণ অনেক কম। আমরা নদীতে আছি, রাতে পুরোদমে ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা থাকায় নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ডিম আহরণকারীরা অপেক্ষায় আছেন।
রাউজান উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সোমবার বিকাল থেকে নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে নমুনা ডিম পাওয়া যাচ্ছে। তবে ডিমের পরিমাণ নৌকা প্রতি ১০০-২০০ গ্রাম ছিল। রাতে ভাটার সময় পুরোদমে ডিম ছাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি। হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন আগে পূূর্ণিমার জো শেষ হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস ও টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢল সৃষ্টি হয়ে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় মা মাছ নমুনা ডিম ছেড়েছে। তবে ডিমের পরিমাণ খুবই কম। আগামী জুন মাসের ৩ থেকে ৮ তারিখ অমাবস্যা এবং ২০ থেকে ২৪ তারিখ পূর্ণিমার জো আছে। জুন মাসের জো গুলোতে পুরোদমে ডিম ছাড়তে পারে মা মাছ।
প্রসঙ্গত, গত ৭ মে অমাবস্যার জোতে নমুনা ডিম ছাড়ে মা মাছ। সেসময় ডিমের পরিমাণ ছিল বেশি। রাউজান ও হাটহাজারী অংশে তিন শতাধিক নৌকা নিয়ে ১৬০ বালতি অর্থাৎ ১৬০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করেছিলেন ৬ শতাধিক ডিম সংগ্রহকারী। ডিমগুলো হ্যাচারিতে প্রস্ফুটিত করে প্রায় ৪১ কেজি রেণু উৎপাদন করা হয়। চাহিদার তুলনায় রেণুর পরিমাণ কম হওয়ায় গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ দামে অর্থাৎ প্রতি কেজি রেণু বিক্রি হয় দেড় লাখ টাকায়।