নিজস্ব প্রতিবেদক »
জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আজ আমরা আস্থার সঙ্গে বলতে পারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ’৭৫ পরবর্তী যে কোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে। এই ভিত্তি দিন দিন জনসেবা ও সঠিক রাজনীতির মাধ্যমে মজবুত হচ্ছে। কোনোভাবে এখন জনবিচ্ছিন্ন হওয়া যাবে না।’
তিনি গতকাল সোমবার দুপুরে নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান খান কায়সারের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভায় এই মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগের ডালপালাতে বিভিন্ন সময়ে শকুনেরা বাসা বেঁধেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক পরিবার, একটি মহিরুহ। আওয়ামী লীগের ডালপালাতে বিভিন্ন সময়ে শকুনেরা বাসা বেঁধেছে। এই কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। যার জন্য আওয়ামী লীগকে অনেক মাশুল দিতে হয়েছে।
অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ দুর্দমনীয়ভাবে এগিয়ে চলেছে। এখান থেকে পেছনে যাওয়ার কোনো পদক্ষেপ এখনও আমরা দেখিনি। অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে, কীভাবে এই গতি রুদ্ধ করা যায়। কিন্তু শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে শেখ হাসিনা ও আমাদের গতি কেউ রোধ করতে পারেনি। এমনি একটি সময়ে কালনাগিনীরা বসে নেই। নানাভাবে তারা ষড়যন্ত্র করছে। কীভাবে আমাদের এই অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করা যায়। যেমনটা ’৭৫-এ তারা নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করেছিল। আজ তেমন একটি কালচক্র চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই চক্রান্তকে নস্যাৎ করতে হবে।’
পৃথিবীর উন্নত দেশেও বাংলাদেশের মতো বই উৎসব হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর কয়টি দেশে আমাদের মতো বছরের প্রথম দিনে বই উৎসব করে। এই বই উৎসব শেখ হাসিনার একান্ত মৌলিক উপহার। এই বই উৎসব পৃথিবীর অন্য কোনো উন্নত দেশে কেউ করেনি। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ২২ রকমের ওষুধ বিনা পয়সায় পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্য কোনো জায়গায় এরকম ঘন ও বিস্তৃত স্বাস্থ্যসেবার নেটওয়ার্ক দেশ আছে কিনা আমার জানা নেই। আজ লাল-সবুজের ঘরে আপন নিবাসে একজন মা ও তার সন্তানেরা থাকতে পারে।’
তিনি বলেন. ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুনাম আজ সারা পৃৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। পৃথিবীতে অনেক রাষ্ট্রপ্রধান আছেন, অনেক সরকার প্রধান আছেন। কিন্তু বিভিন্ন কনফারেন্সে গেলে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে সম্মানিত হন এটা কিন্তু বিরল। কারো বেলায় এটা আমরা দেখতে পাই না। নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশকে একটি অগ্রসরমান রাষ্ট্রে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। উনার চিন্তা সবসময় অগ্রসরমুখী।’
সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘শৈশব থেকেই আমি আতাউর রহমান খান কায়সার চাচাকে দেখে আসছি। অত্যন্ত ব্যক্তিসম্পন্ন মানুষ ছিলেন তিনি। তিনি তার প্রজ্ঞা ও নেতৃত্বের গুণাবলি দিয়ে সবাইকে আগলে রাখতেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সন্তানদের খোঁজখবর নিতেন। যার উপকারভোগী আমি নিজেই। উনিই আমাকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছিলেন।’
মরহুমের কন্যা ও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি বলেন, ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ষড়যন্ত্র চলছে সেটা রুখে দাঁড়াবার জন্য বড় শক্তি তৃণমূলের কর্মী। আমাদের সবাইকে এক হয়ে সেই ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনতে হবে। তা না হলে অগ্রযাত্রা থেমে যাবে। যারা এই দেশকে পেছনে ও অন্ধকারে নিয়ে যেতে চায়, জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায় আমরা তাদের পরিহার করব। আমার বাবা আতাউর রহমান খান কায়সারও তাদের শক্ত হাতে প্রতিহত করেছিলেন।
নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ জেলা সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান, নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, উত্তর জেলা সভাপতি এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলা সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম মহানগর আওয়ামী লীগ সহসভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি এস এম আবুল কালাম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি অধ্যাপক মাঈনুদ্দিন, মহানগর আওয়ামী লীগ সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, দক্ষিণ জেলা সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক, মহানগর আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, দক্ষিণ জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোসলেহ উদ্দিন মনসুর, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দিলোয়ারা ইউসুফ, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুন লুবনা প্রমুখ।