বাঘ-গণ্ডার থেকে তৈরি হয় প্রাণঘাতী যেসব রোগের ওষুধ

সুপ্রভাত ডেস্ক :

বিভিন্ন প্রাণীর শরীরের অংশ দিয়ে ওষুধ তৈরির প্রচলন নতুন বিষয় নয়। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এই রীতি চালুন আছে। ঠিক তেমনি বিভিন্ন প্রাণীর দেহাংশ দিয়ে ওষুধ তৈরি চীনে বহু বছরের পুরনো প্রথা। তবে প্রথাগত এই চিকিৎসা পদ্ধতি অনেক প্রাণীকেই বিলুপ্তির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ওষুধ শিল্পে ব্যবহৃত তেমনি কয়েকটি পশু সম্পর্কে জানানো হলো আজকের প্রতিবেদনে-
বাঘ
চীনে বাঘের হাড় বিভিন্ন পণ্য এবং ওষুধ প্রস্তুতে ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে মাত্র ৩৯০০ বাঘ বন্য পরিবেশে টিকে আছে। এরপরও বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীটির হাড়ের ব্যবহার থামানো সম্ভব হচ্ছে না।
গণ্ডার
গণ্ডারের শিং জ্বর-সর্দি, ও খিঁচুনির চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। চীনে গণ্ডারের শিংয়ের চাহিদা বাড়ায় আফ্রিকা এবং এশিয়াতে গণ্ডারের সংখ্যা আশংকাজনক হারে কমে এসেছে। ডব্লিউডব্লিউএফ এর মতে, বর্তমানে মাত্র ৩৭০০ টি গণ্ডার টিকে আছে। কয়েকটি উপ-প্রজাতি এরই মধ্যে চিরবিদায় নিয়েছে। কঠোর আইন সত্ত্বেও গণ্ডারের শিংয়ের পাচার বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
কালো ভালুক
ভালুকের পিত্তরস বিভিন্ন অসুস্থতার চিকিৎসার ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে রয়েছে যকৃতের রোগ, মাথাব্যথা। বিকল্প থাকা সত্ত্বেও এখনো ভালুকের পিত্তরসের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। অত্যন্ত কষ্টকর পদ্ধতিতে এই পিত্তরস সংগ্রহ করা হয়। এতে অনেক সময় ভালুকের মৃত্যুও ঘটে।
হরিণ
হরিণ থেকে আহরিত কস্তুরী প্রায় ৩০০ রকমের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি, চামড়ার ঘা সারানো, কোমরের ব্যথা উল্লেখযোগ্য। পরিসংখ্যান মতে, চীনে কস্তুরীর চাহিদা বছরে প্রায় এক টন। যা আহরণে প্রয়োজন প্রায় এক লাখ হরিণ! ফলে, শিকারিরা এই কস্তুরী সংগ্রহ করতে বিপুল সংখ্যক হরিণ হত্যা করছে।
সি হর্স
পুরুষত্বহীনতার প্রথাগত চিকিৎসায় সি হর্স ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও কিডনি রোগ, রক্ত সঞ্চালনের সমস্যার ওষুধ প্রস্তুত করা হয় সি হর্স থেকেই। চীনের বাজারে প্রাণীটি থেকে প্রস্তুত প্রায় ৯০ ধরনের ওষুধ পাওয়া যায়। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার এরই মধ্যে প্রাণীটির কমতে শুরু করেছে।
প্যাঙ্গোলিন
স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে প্যাঙ্গোলিন সবচেয়ে বেশি পাচার হওয়া প্রাণী। গত এক যুগেই ১০ লাখেরও বেশি প্যাঙ্গোলিন পাচারের শিকার হয়েছে। চীনের সংস্কৃতিতে প্রাণীটির চাহিদা বেড়েই চলেছে। বাত, খিঁচুনি, পেট খারাপসহ বহু রোগের প্রথাগত ওষুধ তৈরি হয় প্যাঙ্গোলিন থেকে। এসব রোগের আধুনিক চিকিৎসা থাকলেও চীনাদের কুসংস্কার দূর করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। ফলে জীব জগতের জন্য চীন হয়ে উঠেছে এক মূর্তিমান আতঙ্ক। খবর : ডেইলিবাংলাদেশ’র।