টাস্কফোর্স কমিটির সভায় মেয়র
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে খালগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ, দখল হওয়া খালের পুনরুদ্ধার, খাল খননকাজ দ্রুত শুরু করতে হবে এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চলমান মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজে দেয়া বাঁধ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কেটে দিতে হবে। না হলে কিছু দিনের মধ্যে শুরু হতে যাওয়া বর্ষাতে নগরী জলাবদ্ধতায় ডুবে যাবে। যার নমুনা ঈদের দিনে একঘণ্টা বৃষ্টিতে টের পাওয়া গেছে।
তিনি গতকাল রোবাবার টাইগার পাসস্থ চসিকের অস্থায়ী কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষে মহানগরীর প্রাকৃতিক খালসমূহ অবৈধ দখলদারগণকে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা ও মনিটরিং-এর জন্য গঠিত টাস্কফোর্স কমিটির ২য় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
মেয়র আরও বলেন, নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে পুরোপুরি মুক্তি দিতে এত বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। যদি প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত না হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রীর একটি সদিচ্ছার অপমৃত্যু হবে এবং টাকারও অপচয় হবে। তাই এই টাস্কফোর্স কমিটি এখন থেকে অন্তত ২মাস পর সভায় মিলিত হতে হবে এবং নিয়মিত মনিটরিং করার দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করতে হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জিল্লুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর প্রাণ কর্ণফুলী নদীতে প্রতিদিন ২২ হাজার টন মানববর্জ্য পড়ছে। ফলে এই নদীর দূষণ ঠেকানো যাবে কিনা বা আদৌ কর্ণফুলীকে বাঁচানো যাবে কিনা ভাবা উচিত। তিনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কর্তৃক নির্মিত আগ্রাবাদ বক্স কালভার্টের কারণে বন্দরের ১ নম্বর জেটি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানান। তিনি কর্ণফুলী নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজার দিয়ে খনন সম্ভব হচ্ছে না জানিয়ে বলেন, বর্তমানে দুই থেকে আড়াই মিটার স্তরে পলিথিনের কারণে ড্রেজিং করা যাচ্ছে না।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন ঢাকার চেয়েও কঠিন, চউক ৫৭টি খালের মধ্যে ৩৬টিতে কাজ করছে। বাকি খালগুলোতেও কাজ করা উচিত। এ জন্য চসিক আলাদা প্রকল্প গ্রহণ করতে পারে। ৪১টি স্লুইস গেইটের মধ্যে চউক ১৭টি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড ২৩টিতে কাজ করছে। এ প্রকল্পগুলো শেষ হলে চসিকের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ স্লুইস গেইট পরিচালনার জন্য জনবল দরকার এবং এ জনবলকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি জানান, মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে যে বাঁধ দেয়া হয়েছে সে বাঁধ মে মাসের মধ্যে অপসারণের জন্য অনুরোধ করেছিলাম কিন্তু তারা আরো কিছুদিন সময় চেয়েছেন। তিনি খালের দু’পাশে প্রশস্থ রাস্তা করার জন্য চসিককে অনুরোধ জানান।
সিএমপি’র উপপুলিশ কমিশনার এস. এম মোস্তাইন হোসেন বলেন, মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে সকল সংস্থার সমন্বয় সাধন জরুরি। সেক্ষেত্রে চসিক মেয়রকে অভিভাবকের দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা দেবেন বলে জানান।
কমিটির সদস্যসচিব ও চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হকের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দীন, কাউন্সিলর এম আশরাফুল আলম, মো. মোরশেদ আলম, মোহাম্মদ শহীদুল আলম, হাজী নুরুল হক, মো. আব্দুল মান্নান, চসিক সচিব খালেদ মাহামুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, চউকের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. নুরুল্লাহ নুরী, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি মামুনুল আহমেদ অনিক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অয়ন কুমার ত্রিপুরা, ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক নিউটন দাশ প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি