ছয় সদস্যের কমিটির ৪ জনের অস্বীকার!

রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রদল

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি »

২০১৫ সালে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে প্রথমবারের মতো পথচলা শুরু করা রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে প্রথম বারের মতো নিজেদের কমিটি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
গতকাল বুধবার সংগঠনটির ৬ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হলেও কমিটিকে স্থান পাওয়া ৪ জনই এই ব্যাপারে কিছুই জানেন না দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত থাকার বিষয় অস্বীকার করেছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় সামাজিক মাধ্যমে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের ৬ সদস্যের কমিটি ঘোষণার পর কমিটির ৪ জন তাদের ব্যক্তিগত ফেসবুক ওয়ালে ‘কিছুই জানেন না’ দাবি করে কমিটি থেকে তাদের নাম প্রত্যাহারেরও দাবি জানান।
যদিও বুধবার (১৬ জুন) জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইকবাল হোসেন শ্যামল ও সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান খোকন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। ঘোষিত ৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটিতে মোফরাদুল রহমান সোহান আহ্বায়ক, শিশির তারেক, শাফকাত বিন ফরিদ, রিফাত ওয়ালিদকে যুগ্ম আহ্বায়ক, জাসিম উদ্দিন রাতুল সদস্যসচিব, আকিবুল হাসানকে একমাত্র সদস্য মনোনীত করা হয়।
কমিটিকে স্থান পাওয়া যুগ্ম আহ্বায়ক শিশির তারেক বলেন, আমি কখনো কোন ছাত্র সংগঠনে ছিলাম না। ফেসবুকের মাধ্যমে কমিটিতে আমার নাম দেখে আবাক হয়েছি। আর যে নাম ব্যবহার কার হয়েছে সেটি আমার ফেসবুক আইডির নাম, এটি আমার আসল নামও না। এটি দেখে আমি যখন ফেসবুকে জানিয়েছি আমি এর সাথে যুক্ত নই, তখন কমিটির আহ্বায়ক আমাকে ফোন করে বলেছেন,আমি যুক্ত না থাকতে চাইলে নাম বাদ দিয়ে দেবে, এই টুকুই।
কমিটিকে স্থান পাওয়া যুগ্ম আহ্বায়ক শাফকাত বিন ফরিদ বলেন, আমি সন্ধ্যায় রুমে বসেছিলাম, আমার বন্ধুরা আমাকে তখনই জানালেন এই বিষয়ে। আমি বিস্মিত। কেন, কি কারণে আমার নাম দিল, কিছুই জানি। এ বিষয়ে কোন চাপ নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
কমিটিকে স্থান পাওয়া আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক রিফাত ওয়ালিদ বলেন, সন্ধ্যায় আমাকে একজন অভিনন্দন জানিয়েছে ফেসবুকে, তখন তাকে জিজ্ঞাসা করলাম কেন, তখন তিনি আমাকে কমিটির কাগজটি দিলে বিষয়টি জানতে পারি। এর আগে আমি কিছুই জানতাম না।
কমিটির একমাত্র সদস্য আকিবুল হাসান বলেন, আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। আর কিভাবে আমার নামটা বাদ দেব, কাকে বলব বিষয়টি, তা বুঝতে পারছি না।
কমিটির আহ্বায়ক মোফরাদুল রহমান সুহান বলেন, ‘আমি কোন বিষয়েই কোন কিছু এই মুহূর্তে বলতে চাচ্ছি না। সময় হলে একদিন সব কিছুই বলা হবে। আর কেউ যদি থাকতে না চায়, কাউকে তো জোর করে রাখা যায় না।’
এ বিষয়ে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলদলের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ সাব্বির বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকায় বিভিন্ন কমিটি করার পর কমিটিতে স্থান পাওয়াদের পদ থেকে পদত্যাগ করার বিষয়ে ক্ষমতাশীন ছাত্র সংগঠনের সব সময় চাপ ছিল, তা এখনো হচ্ছে বলে ধারণা করছি। আমিও বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। তাদের সাথে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
তবে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক ডা. ¯েœহাশীষ চক্রবর্তী জানান, আমাদের কলেজে ছাত্রদলের কোন অস্তিত্বই নাই, এটা আজব একটা কমিটি। ৬ জনের কমিটির ৪ জনই ইতোমধ্যেই অস্বীকার করেছে ছাত্রদলের সঙ্গে সম্পৃক্ততার। তারা নিজেরাই বলেছে, সম্মতি ছাড়াই তাদের কমিটিতে রাখা হয়েছে এবং তারা ওই রাজনৈতিক আদর্শেও বিশ^াসী নন। আর যাকে আহ্বায়ক করা হয়েছে তিনি ইতোমধ্যেই পাশ করে বেরিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলে ইন্টার্নি করছেন। এতেই প্রমাণিত হয় এটা ভূয়া কমিটি।’