চবি প্রতিনিধি »
জুনিয়র কর্মীকে র্যাগ দেয়া কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের দুই উপগ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিবদমান সিক্সটি নাইন ও এপিটাফ উভয় গ্রুপই সাবেক মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দীনের অনুসারী বলে ক্যাম্পাসে পরিচিত। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৭ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টার থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন বলে জানা যায়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হল ও বন ও পরিবেশবিদ্যা ইন্সটিটিউটের প্রশাসনিক ভবন ও ক্যান্টিন ভাঙচুর করা হয়।
এদিকে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও আবাসিক হল ও প্রশাসনিক ভবনে ভাঙচুরের ঘটনায় মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রফেসর আবুল মনছুরকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের পরিচালক ড. জারিন আক্তার, মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রভোস্ট ড. তড়িৎ কুমার বল, চবি কলেজ পরিদর্শক শ্যামল রঞ্জন চক্রবর্তী ও সহকারী প্রক্টর এসএ এম জিয়াউল ইসলাম।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১টায় উপাচার্য দফতরের সিনেট কক্ষে এক জরুরি সভায় এ কমিটি করা হয়। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
এ সময় চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার, উপউপাচার্য প্রফেসর বেনু কুমার দে, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান ও প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, একইদিন দুপুর ১২টার দিকে হল, প্রশাসনিক ভবন ও ক্যান্টিনে ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এরপর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রশাসন।
গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলে জুনিয়র কর্মীকে র্যাগ দেয়াকে কেন্দ্র করে রাত দশটায় এ সংঘর্ষের সূত্রপাত বলে জানা গেছে।
এ সংঘর্ষে আহত ১৭ জনের মধ্যে মধ্যে ১৩ জন সিক্সটি নাইন গ্রুপের ও ৪ জন এপিটাফ গ্রুপের কর্মী।
জানা গেছে, সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষেও ছাত্র বাইজিদ ইন্সটিটিউটে ক্লাস করতে গেলে সেখান থেকে এপিটাফ গ্রুপের কর্মীরা তাকে সূর্যসেন হলে আটকে রেখে চার ঘণ্টা ধরে র্যাগ দেয়। পরে ওই শিক্ষার্থী সিক্সটি নাইন গ্রুপের সিনিয়রদের জানালে সিনিয়ররা সূর্যসেন হল থেকে তাকে উদ্ধার করতে যায়। এসময় এপিটাফ ও সিক্সটি নাইনের কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পালটা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এছাড়া সূর্যসেন হল ও বন ও পরিবেশবিদ্যা ইন্সটিটিউটে দরজা, জানালা, ওয়াশরুম ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও জানা যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভূইয়া বলেন, সূর্যসেন হলে সিক্সটি নাইন ও এপিটাফ গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি আরো বলেন, উক্ত ঘটনায় আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দোষীদের ছাড় দেয়া হবে না।