নিজস্ব প্রতিবেদক :
আলোচিত কোকেন চোরাচালান মামলার অভিযোগপত্র আদালতের প্রশিকিউশন শাখায় জমা দিয়েছে র্যাব-৭। অভিযোগপত্রে কোকেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। প্রধান আসামি নূর মোহাম্মদসহ চারজন পলাতক, ১ জন জামিনে ও ৫ জন কারাবন্দি আছেন।
আজ সোমবার অভিযোগপত্রটি চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় জমা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-৭ এর পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী। বিশেষ ক্ষমতা আইনের ধারার অভিযোগ তদন্ত করে তিনি এ অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযুক্তরা হলেন, কোকেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খানজাহান আলী লিমিটেডের মালিকানাধীন প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা প্রকাশ সোহেল (৩৯), খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ (৪৯), আবাসন ব্যবসায়ী মো. মোস্তফা কামাল (৪২), সিকিউরিটিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মো. মেহেদী আলম (৩১), গার্মেন্ট পণ্য রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী মো. আতিকুর রহমান (২৯), কসকো শিপিং লাইনের ম্যানেজার এ কে এম আজাদ (৪৮), সিএন্ডএফ কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম (৩২), খানজাহান আলী গ্রুপের পরিচালক মোস্তাক আহাম্মদ খান (৪৫), লন্ডনে অবস্থানরত ফজলুর রহমান (৩৫) ও মো. বকুল মিয়া (৩১)।
২০১৫ সালের ৭ জুন ৯ হাজার কোটি টাকা মূল্যের কোকেন আটক করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৭ জুন বন্দর থানায় কোকেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খানজাহান আলী লিমিটেডের মালিকানাধীন প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা সোহেলকে আসামি করে মাদক আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। পরে আদালত মামলায় চোরাচালানের ধারা সংযোগের নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, বলিভিয়া থেকে মেসার্স খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে আমদানি করা সূর্যমুখী তেলবাহী কনটেইনারটি জাহাজে তোলা হয় উরুগুয়ের মন্টেভিডিও বন্দর থেকে।
সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে ২০১৫ সালের গত ১২ মে চালানটি চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। আদালতের নির্দেশে কনটেইনার খুলে ১০৭টি ড্রাম থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরে ঢাকার বিসিএসআইআর ও বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষায় এতে তরল কোকেনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।
এর আগে ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর মামলার এজাহারভুক্ত আসামি নূর মোহাম্মদকে বাদ দিয়ে আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে মাদক আইনের অংশের অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (দক্ষিণ) মো. কামরুজ্জামান। ৭ ডিসেম্বর শুনানি শেষে মামলার প্রধান আসামি নুর মোহাম্মদকে বাদ দেয়ায় অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেননি আদালত। একইদিন অভিযোগপত্র প্রত্যাখান করে তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কমকর্তাকে দিয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য র্যাব-৭ কে দায়িত্ব দেন আদালত।
২০১৭ সালের ২ এপ্রিল মাদক আইনের মামলায় নূর মোহাম্মদকে অভিযুক্ত করে চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন র্যাব কর্মকর্তা তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি আদালতের নির্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও তৎকালীন র্যাব মহাপরিচালক ড. বেনজীর আহমদের উপস্থিতিতে পতেঙ্গা র্যাব-৭ কার্যালয়ে জব্দ করা ৩৭০ লিটার কোকেন ধ্বংস করে র্যাব।