নিজস্ব প্রতিবেদক »
রমজানের শুরুতে অস্থির হয়ে ওঠে তরমুজের বাজার। তা রোজার মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত স্থায়ী থাকলেও ক্রেতার চাহিদা কমায় ঈদের শেষে দাম কমে যায়। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে তাপপ্রবাহের কারণে আবারও বেড়েছে তরমুজের চাহিদা। আর এ বাড়তি চাহিদা ও মৌসুম শেষ দিকে চলে আসায় আবারও চড়া হয়ে উঠেছে এ ফলের বাজার।
শনিবার নগরীর ফলের আড়ত ফিরিঙ্গীবাজার ও স্টেশন রোডের ফলমন্ডি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঈদের আগে আড়তে যে পরিমাণ তরমুজ ছিল, বর্তমানে তেমন নেই। পাশাপাশি ঈদকে ঘিরে রমজানের শুরুতে চড়া হওয়া এ ফলের বাজারে ক্রেতা আগ্রহ কমাতেই রমজানের শেষ সময়ে দাম কমে যায়। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে গ্রীষ্মকালীন তাপপ্রবাহ বাড়াতেই হঠাৎ ক্রেতা চাহিদা বেড়েছে। সেই সুযোগে দেড় থেকে দুই গুণ দাম বাড়িয়ে দেয় ব্যবসায়ীরা।
ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে আড়তে ৪ থেকে ৫ কেজি ওজনের যে তরমুজের দাম ৮০ থেকে ১১০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছিল, তা শনিবার বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। এমনকি ঈদের আগের দিনও প্রতি পিস তরমুজ ৮০ টাকায় পাওয়া গিয়েছিল। আর এ তরমুজ খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকার উপরে। এদিকে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে একদিকে পিস হিসেবে বিক্রি কমলেও বেড়েছে কেজি দরে বিক্রি। ফিরিঙ্গীবাজারের একটি আড়তে মণ ১ হাজার ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করতেও দেখা যায়। অভিযোগ রয়েছে, দেশের বিভিন্নস্থান থেকে তরমুজ আড়তে আসলেও তা আড়ত থেকে সরিয়ে রেখে সংকট দেখিয়ে আবারও বাজার অস্থির করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
খুচরা বিক্রেতা মো. হামিদুর রহমান বলেন, ঈদের আগে তরমুজের দাম কম থাকলেও গরমের কারণে আড়তে তরমুজের দাম বেড়েছে। আগে যে তরমুজ ৮০ টাকায় কিনেছি তা আড়তদারেরা বিক্রি করছেন ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। যার কারণে বাড়তি দওে খুচরায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
রেয়াজউদ্দিন বাজারের ফল ব্যবসায়ী মো. আমজাদ বলেন, ঈদের আগে ১০০ তরমুজ কিনেছি ১৬ হাজার টাকায়, তা বর্তমানে বিক্রি করছে ২৩ থেকে ২৪ হাজার টাকা। কেউ কেউ মণ হিসেবে বিক্রি করছে। যার কারনে তরমুজের দামে বেড়েছে।
এদিকে তরমুজের দাম বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আড়তদারেরা জানান, ঈদের পর পরিবহন খরচ বেড়েছে, পাশাপাশি অতিরিক্ত গরমের কারণে অর্ধেক তরমুজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, সেজন্য খরচের সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
ফিরিঙ্গী বাজারের আড়তদার মো. জসিম বলেন, বাগেরহাট থেকে যে তরমুজ ৬০ খেতে ৭০ টাকায় কিনেছিলাম তা কৃষকরা বিক্রি করছে ১২০ টাকায়। তার মধ্যে পরিবহন খরচ বেড়েছে। আর পচনশীল পণ্য হওয়াতেই প্রায় অর্ধেক দেখি নষ্ট হয়ে যায়। যার কারণে ঝুঁকি নিয়ে অর্ডার করতে হচ্ছে। কৃষক পর্যায়ে দাম বাড়াতেই আমাদের বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
ময়মনসিংহ বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী মো. হাসানুর রহমান বলেন, এখন যে তরমুজ আড়তে আছে তা ঈদের পর এসেছে। মওসুমের শেষ পর্যায় হওয়ায় আর অত্যাধিক গরমের কারণে কৃষক ও মধ্যস্বত্বকারবারিরা তরমুজের দাম বাড়িয়েছে। আমাদের প্রতি পিস তরমুজে ৬০ থেকে ৭০ টাকা বাড়তি কিনতে হয়েছে। এ কারণে বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এ মুহূর্তের সংবাদ