কম উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ
নিজস্ব প্রতিনিধি, সন্দ্বীপ :
সন্দ্বীপের হারামিয়া ইউপিতে চেয়ারম্যানপদে ও মগধরা ইউপিতে সদস্যপদে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে ২০ অক্টোবর। ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও ভোটচলাকালে বিভিন্ন স্থানে ২/১টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া কোথাও বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
তবে হারামিয়া ইউনিয়নের বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী আসিফ আকতার তার বাসভবনে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, হারামিয়া ইউনিয়নের জন্য তিনি ১৮ জন এজেন্ট নিয়োগ দেন। তন্মধ্যে ৫টি কেন্দ্রে এজেন্টরা যেতে চেষ্টা করলেও বাকি কেন্দ্রগুলোতে এজেন্টরা যেতে সাহসই করেনি। এছাড়া সকাল থেকে ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কে নৌকার কর্মীদের তৎপরতার কারণে তার ভোটাররা কেন্দ্রে যেতে সাহস করেনি। তিনি বলেন, হারামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে তার কর্মী তারেককে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকেরা মারধর করে। তিনি উল্লেখ করেন, গণতন্ত্ররক্ষার আন্দোলনের অংশ হিসেবে দলীয় নির্দেশে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। জনগণ তা বুঝতে পেরেছে। তাই ভোটারহীন নির্বাচনের সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এ রকম ভোটে প্রমাণিত হয়, জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস নয়, ক্ষমতাই সকল ক্ষমতার উৎস। তবে এ সম্পর্কিত কোনো অভিযোগ তিনি কোথাও জানাননি বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন।
এ প্রসঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী মো. জসীম উদ্দীন ও তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট রহিম মোহাম্মদ এ প্রতিবেদককে বলেন, হারামিয়ার নির্বাচন সম্পূর্ণ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
হারামিয়ার প্রতিটি কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসাররা এ প্রতিবেদককে বলেন, ভোট সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফলাফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে রিটার্নিং অফিসার রবিউস সারওয়ার বলেন, নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বা ওই রকম ঘটনার অভিযোগ আসেনি। নির্বাচনে ৫৮.৫৫% ভোটারের ভোট প্রদান স্বতঃস্ফূর্ত নির্বাচন হয়েছে বলে প্রমাণ করে।
তবে মগধরা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্যপদ প্রার্থী মো. ওমর ফারুক (মোরগ মার্কা) সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রতিপক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মীদের পক্ষ থেকে প্রবল চাপের মুখে ঘর থেকে বের হয়ে নির্বাচনী কেন্দ্রে যেতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন। ফলে তিনি নিজের ভোটটিও প্রয়োগ করতে পারেননি। বিষয়টি তিনি প্রশাসনকে জানালেও ভোট শুরুর পর থেকে তারা কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় তিনি দুপুর ১২টায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এ ব্যাপারে ওই কেন্দ্রের সার্বক্ষণিক দায়িত্বে থাকা সন্দ্বীপ থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, এ কেন্দ্রে সকাল থেকেই অনেক গণমাধ্যমকর্মী, পুলিশ ফোর্স, মোবাইল টিম সতর্ক অবস্থানে ছিল। কেন্দ্রের নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি ছিল না। প্রার্থী যদি না আসেন, তার লোকজন যদি কেন্দ্রে না থাকেন , সে দায় কি আমাদের, তিনি প্রশ্ন রাখেন। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী মো. রাকিব (ফুটবল মার্কা) বলেন, ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট কেন্দ্রে এসে নিজ নিজ ভোট প্রয়োগ করেছেন। এখানে কারো প্রভাব বিস্তারের কোনো সুযোগ ছিল না।
এদিকে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলাকালে হারামিয়া ইউনিয়নের ৯টি কেন্দ্র সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ কেন্দ্রেই নারীদের উপস্থিতি পুরুষের তুলনায় বেশি ছিল।
নির্বাচনী ফলাফলে হারামিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানপদে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় নৌকার প্রার্থী ৭৫৫৭ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচন হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি দলীয় ধানের শীষে প্রার্থী আসিফ আকতার পেয়েছেন ২৩৯ ভোট। অন্যদিকে মগধরা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্যপদে মো. রাকিব (ফুটবল মার্কা) ৯৭৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ওমর ফারুক (মোরগ মার্কা) পেয়েছেন ৩২ ভোট।