খাতুনগঞ্জে ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা /
নিজস্ব প্রতিবেদক »
খাতুনগঞ্জে মসলাসহ অন্যান্য আড়তগুলোতে বারবার অভিযান পরিচালনা করেও কারসাজি ঠেকানো যাচ্ছে না।
রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করলে এলাচের বাজারে ব্যবসায়ীদের কারসাজির সত্যতা মেলে। এতে মসলা ও চিনির বাজারে কারসাজির দায়ে তিন প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অভিযানে খাতুনগঞ্জের এলাচের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক এবি ট্রেডার্স ১ হাজার ৪৫০ টাকার এলাচ আমদানি করে আড়ত পর্যায়ে ৩ হাজার ১০০ টাকা বিক্রি করে বলে জানা যায়। যার দায়ে প্রতিষ্ঠানটিকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
তাছাড়া এবি ট্রেডার্সের আমদানির এলসি রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির এলাচি আমদানিতে বুকিং দর, ট্যাক্স ও মজুরিসহ আড়ত পর্যায়ে আসতে খরচ হয়েছে প্রতিকেজিতে ১ হাজার ৪৫০ টাকা। কৃষি বিপণন আইনানুযায়ী পাইকারি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ লাভ করলে যার দাম হওয়ার কথা ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকার মধ্যে। তবে ওই প্রতিষ্ঠানে এলাচ বিক্রি হচ্ছিল ২ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত।
ইতোপূর্বে ৪ মার্চ কম দামে এলাচি আমদানি করে বেশি দামে বিক্রি করাসহ নানা অনিয়মের দায়ে আরও ৬ প্রতিষ্ঠানকে ৫১ হাজার টাকা জরিমানা করেছিল সংস্থাটি। এ অভিযানেও সাড়ে ৭ ডলারে এলাচি বুকিংসহ আড়ত পর্যায়ে আসতে কেজিপ্রতি এলাচির ১ হাজার ৬০০ টাকা খরচ হলেও মেসার্স আবু মোহাম্মদ অ্যান্ড কোম্পানি নামের প্রতিষ্ঠানটি পাইকারি বাজারে এলাচি বিক্রি করে ২ হাজার ৬০০ টাকা, যার দায়ে সেদিন এ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। সেদিনই খাতুনগঞ্জের মসলা আমদানিকারকদের তালিকা সংগ্রহ করে আড়তদারদের সতর্ক করা হয়েছিলো। কিন্তু প্রশাসনের এমন সতর্কতাকে গুরুত্বই দিচ্ছে না আমদানিকারকরা।
এছাড়া গতকাল রোববার জেলা প্রশাসনের একই অভিযানে চিনি বিক্রির ক্রয় রশিদ ও বিল ভাউচার না রাখার দায়ে চিনি বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান আরএম এন্টারপ্রাইজ ও নাবিল গ্রুপকে ৩০ হাজার ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত বলেন, ‘গত সপ্তাহে খাতুনগঞ্জের মসলার বাজারের আমদানিককারকদের সতর্ক করা হয়। এ সময় একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছিল। কিন্তু বরাবরের মতো এবারও এসব আমদানিকারকরা তাদের মনগড়া দরে মসলাজাত পণ্য এলাচ বিক্রি করছে, যার দায়ে এক প্রতিষ্ঠানকে ৪০ হাজার জরিমানা করা হয়েছে।’
চিনির আড়তে অভিযানের বিষয়ে প্রশাসনের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘খাতুনগঞ্জের আড়তদারেরা অহেতুক চিনির দাম কেজি প্রতি ৫ থেকে ৭ টাকা বাড়িয়ে দেয়। চিনি বিক্রিকারী দুই প্রতিষ্ঠানের কারো কাছেই কোনো ক্রয়-বিক্রয় রসিদ সংরক্ষিত ছিল না। ফলে তারা কত টাকায় কিনছেন বা বিক্রি করছেন তা আমরা জানতে পারছি না। যার দায়ে এ দুই প্রতিষ্ঠানকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’
জনস্বার্থে জেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।