অবশেষে উৎপাদনে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর

প্রথম উৎপাদনে যাচ্ছে নিপ্পন অ্যান্ড ম্যাকডোনাল্ড স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ
কর্মসংস্থান হবে প্রায় ৩ হাজার মানুষের
উৎপাদন করা হবে ইস্পাতের প্লেট ও কাঠামো

রাজু কুমার দে, মিরসরাই »
ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর। মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও ফেনী জেলার সোনাগাজীর প্রায় ৩০ হাজার একর জমি উপর প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর অবশেষে উৎপাদনে যাচ্ছে।
জুলাই-আগস্টে নিপ্পন অ্যান্ড ম্যাকডোনাল্ড স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজের মাধ্যমে দেশের সর্ববৃহৎ এই শিল্পনগরী উৎপাদনে যাচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের ইস্পাত বাজারে যুক্ত হচ্ছে জাপানের নিপ্পন। সাথে রয়েছে বাংলাদেশের ম্যাকডোনাল্ড স্টিল লিমিডেট। জাপান ও বাংলাদেশ যৌথভাবে ইস্পাত উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা হবে দেশের বাইরেও।
জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে ১০০ একর জমিতে জাপানের নিপ্পন করপোরেশনের সাথে যৌথভাবে ইস্পাত কারখানা গড়েছে বাংলাদেশের ম্যাকডোনাল্ড স্টিল ইন্ডাস্ট্রি। নাম দেয়া হয়েছে ‘নিপ্পন অ্যান্ড ম্যাকডোনাল্ড স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ’। ইতিমধ্যে দুইটি কারখানা নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। জুলাই-আগস্টে কারখানা দুইটির উৎপাদন কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে বেজা কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তি করে নিপ্পন অ্যান্ড ম্যাকডোনাল্ড স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ। চুক্তির পর দিন রাত ভূমি উন্নয়নের কাজ করে ইতিমধ্যে কারখানা নির্মাণকাজ শেষ করেছে তারা। শুধু ‘নিপ্পন অ্যান্ড ম্যাকডোনাল্ড স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ’ নয় আরো বেশ কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠানের কারখানা নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এগুলো মধ্যে ‘এশিয়ান পেইন্টস’ অন্যতম।
নিপ্পন অ্যান্ড ম্যাকডোনাল্ড স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ সূত্রে জানা গেছে, শিল্প প্রতিষ্ঠানটি জাপান, চায়না, ভারত ও নেদারল্যান্ড থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে ইস্পাত উৎপাদন করবে। একটি কারখানায় প্লেট প্রক্রিয়াকরণ ও অন্যটিতে ইস্পাতের কাঠামা তৈরি করা হবে। ইতোমধ্যে ২৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে ‘নিপ্পন অ্যান্ড ম্যাকডোনাল্ড স্টিল’। বিনিয়োগ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা। দুইটি কারখানায় কর্মসংস্থান হবে প্রায় ৩ হাজার মানুষের।
১৮ জুন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রশাসনিক ভবনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে সমুদ্র পাড়ে সুপার ডাইক নির্মাণের কাজ। বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান দিন রাত কাজ করছে কারখানা নির্মাণে। ৩৫ কিলোমিটারের বেশি দৈর্ঘ্যরে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার।
এ বিষয়ে নিপ্পন অ্যান্ড ম্যাকডোনাল্ড স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজের উপ-মহাব্যবস্থাপক সাহাব উদ্দিন খান বলেন, ইতোমধ্যে কারখানা দুইটির কাজ শেষ হয়েছে। তবে কোভিডের কারণে একটি ৩৭ কোটি টাকা মূল্যের মেশিন স্থাপনে বিলম্ব হচ্ছে। কারখানা দুইটিতে ইস্পাতের প্লেট ও কাঠামো তৈরি করা হবে। যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা হতে পারে। আশা করা যাচ্ছে জুলাই- আগস্টে উৎপাদনে যেতে পারবো। তবে চাহিদার উপর নির্ভর করবে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শীঘ্রই কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে যাবে। করোনাকালীন নতুন নতুন বিনিয়োগ এসেছে। আশা করছি এখানে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে।