৬০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া রোগীদের চিকিৎসা মিলবে

চমেক হাসপাতাল

নিজস্ব প্রতিবেদক »

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের গোঁয়াছি বাগান এলাকায় দেড়শো শয্যার বার্ন ইউনিট হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শনে এসেছেন ৫ সদস্যর একটি চীনা টিম। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ৬০ শতাংশ পুুড়ে যাওয়া রোগীদেরও চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। এতে করে ঢাকা গিয়ে চিকিৎসেবা নিতে ভোগান্তি পোহাতে হবে না রোগীদের।

এ প্রসঙ্গে কথা হয় সারাদেশে বার্ন চিকিৎসা সম্প্রসারণে সমন্বয়কের দায়িত্ব পাওয়া ডা. সামন্ত লাল সেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রামে যে বার্ন ইউনিটটা বাড়াচ্ছি সেখানে ৬০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া যাবে। কেননা চট্টগ্রাম মেডিক্যালে এতদিন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ), হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ), ভালো অপারেশন থিয়েটার ছিলোনা। যার কারণে ৪৫-৫০ শতাংশ রোগী যাদের শ্বাসনালী পুড়ে যায় তাদের সবাইকে ঢাকায় এসে চিকিৎসা সেবা নিতে হয়। কোনো কোনো রোগী ঢাকা আসতে আসতে মারা যেত। এখন ঘরের কাছে গড়ে উঠছে প্রকল্পটি। চট্টগ্রামের রোগীরা সেখানে সেবা নিতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, ‘বুধবার প্রকল্পটি নিয়ে সচিবের সাথে বৈঠক হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়- পুরো প্রকল্পটি চীন সম্পূর্ণ করে দিবে। এখানে লোনের কোনো বিষয় নেই। চট্টগ্রাম পরিদর্শন শেষে ৯ মার্চ ঢাকাতে সমঝোতা স্মারক সই হবে। তারপর তারা কাজ শুরু করবেন। আনুমানিক মাস খানেকের মধ্যে কাজ শুরু হবে।’

জানা গেছে, প্রকল্পটিতে ১৫০ টি শয্যা থাকবে। তার মধ্যে ২০টি আইসিইউ, শিশুদের জন্য ৫টি আইসিইউ, ২৫টি এইচডিইউ, ২টি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার, প্রাথমিক পরিকল্পনায় ভবনের প্রতি ফ্লোরে ১৬ হাজার বর্গমিটার স্পেস, ৬ তলা ভবন থাকবে।

চমেক হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সীমিত জনবল দিয়ে সাধ্যমতো সেবাদানের চেষ্টা করছি। ২৬ শয্যার বিপরীতে ৭০-৮০ জন রোগী থাকে। শীতকালে এই সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে শয্যা সংখ্যা বাড়বে। আইসিইউ , এইচডিইউ এবং অপারেশন না থাকায় বেশিরভাগ রোগীকে ঢাকায় পাঠানো হতো। এখন এখানে সহজেই চিকিৎসা সেবা নিতে পারবে।

তিনি আরো বলেন, ‘শয্যা, যন্ত্রপাতি বই তো পাচ্ছি। কিন্ত সেই সাথে দরকার লোকবল। ৭০-৮০ জন রোগীকে সামলাতে হিমশিম খেতে হয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সব বাড়বে। লোকবল না হলে সেবা প্রসারিত সম্ভব নয়। তবে আমরা চাই দ্রত বাস্তবায়ন হোক। যাতে করে রোগীদের ঢাকা যাওয়া থামাতে পারি। চট্টগ্রামের রোগী চট্টগ্রামেই চিকিৎসা নিতে পারবে।’

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, ‘প্রকল্পটি নিয়ে গতকাল সচিবের সাথে বৈঠক হয়েছে। চট্টগ্রামে এ নিয়ে আগামীকাল (৩মার্চ) বৈঠক হবে। আমরা চাই দ্রুত কাজ শুরু হোক। তার জন্য যা যা করণীয় তা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ’

উল্লেখ্য, প্রকল্পটির জন্য ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় আসে চীনা প্রতিনিধি দল। এরপর মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামে গোঁয়াছি এলাকা পরিদর্শন করে দলটি। তারা টানা ৯ দিন চট্টগ্রামে অবস্থান করবেন। এ সময় তারা সিটি কর্পোরেশন, পিডিবি, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর ৯ মার্চ ঢাকায় গিয়ে সমঝোতা সই করবেন।