সুপ্রভাত ডস্ক »
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদল পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ইমরান খান পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচন ঘোষণার জন্য দেশটির সরকারকে ছয় দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন। পাকিস্তানের গণমাধ্যমে ডন জানিয়েছে, দাবি না মানলে ‘পুরো জাতিকে’ নিয়ে ফের রাজধানী ইসলামাবাদে ফিরে আসবেন বলে বৃহস্পতিবার হুঁশিয়ার করেছেন তিনি।
পাকিস্তানজুড়ে রাজনৈতিক নাটক ও সহিংসতার একটি দিনের পর এ দিন সকালে ইসলামাবাদের জিন্না অ্যাভিনিউতে কথিত ‘আজাদি মার্চে’ অংশ নেওয়া সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন ইমরান। খবর বিডিনিউজের।
এ সময় ইমরান জানান, খাইবার পাখতুনখোয়া থেকে শুরু করে ৩০ ঘণ্টা ভ্রমণ শেষে রাজধানীতে পৌঁছেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের আজাদি মার্চ ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য সরকার সব ধরনের চেষ্টাই করেছে। তারা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে কাঁদুনে গ্যাস ছুড়েছে, আমাদের বাড়িগুলোতে তল্লাশি চালানো হয়েছে, আমাদের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। তারপরও আমি দেখছি, জাতি দাসত্বের ভয় থেকে নিজেদের মুক্ত করেছে।’
ইমরান অভিযোগ করে বলেন, করাচিতে পিটিআইয়ের তিন কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন, পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ছুঁড়তে থাকায় আটক সেতু থেকে একজন পড়ে গেছে আর আরেক জনকে রাভি নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
দেশে নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে ক্ষমতাসীন পিএমএল-এন সরকারকে জন্য চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ইমরান বলেন, জুনে সাধারণ নির্বাচন ঘোষণার জন্য সরকারকে এই সময় দিচ্ছেন তিনি। ‘আমদানি করা সরকারের প্রতি আমার বার্তা হচ্ছে, আইনসভা ভেঙ্গে দিন এবং নির্বাচন ঘোষণা করুন। অন্যথায় ছয় দিন পর আমি আবার ইসলামাবাদে ফিরে আসবো’, বলেন তিনি।
‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, সরকার আইনসভা ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত আমি এখানে বসে থাকবো। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় আমি যা দেখলাম, তা হল তারা (সরকার) দেশকে নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’
সরকার পুলিশ ও সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ইমরান বলেন, তিনি ইসলামাবাদে অবস্থান ধর্মঘটে বসলে সরকার খুশি হবে, কারণ তাতে জনতার সঙ্গে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ বাঁধতে পারে।
পিটিআইয়ের মিছিল বন্ধ করার জন্য ‘আমদানি করা সরকারের’ এই কৌশলের এবং গ্রেপ্তার ও বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি চালানোর নিন্দা করেন তিনি; আর এই বিষয়গুলো আমলে নেওয়ায় সুপ্রিম কোর্টকে (এসসি) ধন্যবাদ জানান। এ সমাবেশে তিনি তার দলের বহুল আলোচিত ‘আজাদি মার্চ’ শেষ করার ইঙ্গিত দেন বলে জিও নিউজ জানিয়েছে।
সমাবেশে ভাষণ দেওয়া শেষে ইমরান ইসলামাবাদের বানি গালায় তার বাসভবনে চলে যান। আর তার সমর্থকরা রাজধানীর সংরক্ষিত এলাকা রেড জোনে প্রবেশ করে। এই জোনে সুপ্রিম কোর্ট, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন, মার্কিন দূতাবাসসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ভবন আছে। কড়া নিরাপত্তা থাকলেও তারা সেখানে প্রবেশ করতে সক্ষম হন।
এর আগে পিটিআইয়ের কর্মীরা বুধবার রাতের অধিকাংশ সময় রাজধানীর ডি-চৌক এলাকায় অবস্থান নিয়ে ছিলেন। এখানে অবস্থান নিয়ে দলীয় চেয়ারম্যানের আগমণের অপেক্ষায় ছিলেন তারা। এখানে বিক্ষোভকারীদের ছোড়া পাথরের আঘাতে ইসলামাবাদ পুলিশের আট ও রেঞ্জার্সের সাত সদস্য আহত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।