২৬ নয়, ইংরেজি বর্ণ মোট ৩৫টি!

সুপ্রভাত ডেস্ক :
বাংলা ভাষার অনেক আদি ইতিহাস আর পরিবর্তন রয়েছে। তবে ইংরেজি শব্দের ব্যাপারে খুব কমই জানা যায়। আজকাল একেক ভাষার শব্দ ঢুকে পড়ছে অন্য ভাষার অভিধানে। আর সেই ভাষা যদি হয় ইংরেজি তাহলে তো কথাই নেই। ইংরেজি ভাষা যেমন অন্য অনেক ভাষার পরিবর্তন করেছে তেমনি অন্য ভাষার শব্দও ঢুকে পড়ছে ইংরেজি অভিধানে।
আচ্ছা ভাষার কথা থেকে এখন আসি বর্ণমালায়। জানেন কি? আমরা এখন যে ২৬ টি ইংরেজি বর্ণমালার সঙ্গে পরিচিত এর সংখ্যা কিন্তু আরো ছিল। অবাক হচ্ছেন? বেশির ভাগের কাছে অজানা হলেও অনেকেই হয়তো জানেন এটি। ইংরেজি ভাষায় কতগুলো বর্ণ, এই প্রশ্নের জবাবে একবাক্যে সবাই বলবে ২৬টি। কিন্তু যদি বলা হয়, একসময় এই ভাষায় বর্ণ ছিল ৩৫টি। ভাবছেন বাকি ৯ টি বর্ণ কোথায় গেল তাহলে? সেই কথাই জানবো আজ। তবে এই বর্ণগুলো আমাদের কাজে খুব একটা ব্যবহৃত না হলেও আন্তর্জাতিক ধ্বনি বর্ণমালায় সেসবের চিহ্ন এখনো আছে।
প্রতিটি বর্ণমালাই তৈরি হয় নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে। এভাবে একসময় অপ্রয়োজনীয় বলে বাদ পড়ে যাওয়া অক্ষরও হঠাৎ জরুরি হয়ে উঠতে পারে। আবার কোনো নির্দিষ্ট ধ্বনির জন্য হয়তো সেই ভাষাতে কোনো বর্ণ ছিলই না। বাংলা ভাষা তো বটেই, পৃথিবীর প্রায় সমস্ত ভাষার থেকে অক্ষরের সংখ্যা অনেক কম। চলুন আজ ইংরেজির হারিয়ে যাওয়া সেই বর্ণগুলোর সঙ্গেই পরিচিত হব-
থর্ন (Þ, þ) এবং এথ (Ð, ð)
ইংরেজি ভাষায় যে থ ধ্বনির উপর অনেকসময়ই জোর পড়ে, সেটা তো কারোরই অজানা নয়। এক্ষেত্রে উদাহরণ দেয়ার কোনো প্রয়োজনই পড়ে না। এখন এই ধ্বনির জন্য /th লিখতেই অভ্যস্ত আমরা। কিন্তু একসময় এই ধ্বনির জন্য ছিল পৃথক বর্ণ। থর্ন বর্ণটি এসেছে এল্ডার ফাদার্ক রিউন সিস্টেম থেকে। আর অন্যদিকে এ ‘থ’ ধ্বনিটি দীর্ঘদিন ধরেই ইংরেজি ভাষায় ছিল। তবে ক্রমশ এই দুই বর্ণের জায়গা নেয় /th যুগ্মবর্ণ। তাছাড়া স্মলার কেস এথ বর্ণটি ক্রমশ লেখার গঠনে /y-এর মতো হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আর এই জটিলতা মেটাতে ত্রয়োদশ শতকের শেষ থেকেই এই দুই বর্ণের ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়।
অ্যাস (Æ, æ)
এই বর্ণটি আন্তর্জাতিক ধ্বনি বর্ণমালার সৌজন্যে আমাদের সকলেরই পরিচিত। কারণ নানান ইংরাজি শব্দেই /a এবং /e-এর উচ্চারণ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। কারণ আসল উচ্চারণটি হয় এর মাঝামাঝি। অভিধানে সঠিক উচ্চারণ বোঝাতে এখনো অ্যাস বর্ণটি ব্যবহার করা হয়। তবে এক সময় লিখিত ভাষাতেও এই বর্ণ ব্যবহৃত হত। তবে দীর্ঘ অনভ্যাসে ক্রমশ সেটি হারিয়ে যায়।
ইথেল (Œ, œ)
এই বর্ণটির উচ্চারণ মোটামুটি /o এবং /e মিশ্রিত একধরণের উচ্চারণ বোঝায়। এটিও ধ্বনি বর্ণমালার সৌজন্যে আমাদের পরিচিত। এর ব্যবহার একসময় এতটাই বেশি ছিল যে ডায়রিয়া শব্দটির বানান নিয়ে এখনো ইংল্যান্ড এবং আমেরিকার ইংরেজি ভাষাভাষী মানুষদের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি করে। কারণ একসময় শব্দটি লেখা হত এভাবে- diarrhœa। আর এখন আমেরিকার মানুষরা লেখেন ‘diarrhea’ এবং ব্রিটিশরা লেখেন diarrhoe।
ওয়েইন (Ƿ, ƿ)
১৩০০ সালের আগে /w বর্ণটির জায়গায় এই ওয়েইন বর্ণটিই ব্যবহার করা হত। কিন্তু ক্রমশ বর্ণটির ব্যবহার কমে আসে। এবং এই সময় পাশাপাশি দুটি /u লেখা হতে শুরু করে। আর এই দুটি /u থেকেই /w বর্ণটির জন্ম।
লং ’এস (ſ)
বাংলায় যেমন আমাদের তিনটি ‘স’ ধ্বনির জন্য পৃথক পৃথক বর্ণ ব্যবহার করা হয়, ইংরেজিতে তেমনটা নেই। তবে দুটি /s-এর ব্যবহার ছিল একসময়। একটি লং ’এস আর অন্যটি আমাদের পরিচিত /s বা রাউন্ড ’এস। কিন্তু এই লং ’এসের চেহারার সঙ্গে /f-এর চেহারার সাদৃশ্যের কারণেই ক্রমশ তার ব্যবহার কমিয়ে আনা হয়। এবং শেষ পর্যন্ত রাউন্ড ’এসের ব্যবহারই থেকে যায়। যদিও উচ্চারণের পার্থক্য অনেক সময়েই বোঝা যায়।
ইন্সুলার (ᵹ) এবং ইয়োহ্ (Ȝ, ȝ)
ইন্সুলার বর্ণের উচ্চারণের সঙ্গে /e, /I এবং /y -এই তিনটি বর্ণের উচ্চারণের যথেষ্ট সাদৃশ্য ছিল। কিন্তু ক্রমশ চারটি বর্ণের ব্যবহার নিয়ে জটিলতা শুরু হতে থাকে। ১৭ শতকে /ᵹ-এর ব্যবহার ছিল বেশি। আবার ১৮ শতকে /y-এর ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। ক্রমশ তাদের উচ্চারণের মতোই চেহারাও মিলেমিশে যায়। আর তারপরেই ইন্সুলারের ব্যবহার মুছে যায়। অন্যদিকে ইয়োহ্-এর উচ্চারণ এখনো টিকে থাকলেও তাকে লেখা হয় মূলত /wএর সাহায্যে। সঙ্গে /o এবং /u-এর ব্যবহারও করা হয়ে থাকে। যেমন ধরা যাক ‘enough’ বা ‘followed’। এই দুটি শব্দ তখন লেখা হত যথাক্রমে ‘innoʒe’ এবং ‘folʒed’।
অ্যাম্প্রেস্যান্ড
এই বর্ণটির কথা শুনলে অবাক হতেই হয়। আর আপনাদের আরো অবাক করার জন্যই প্রথমে বর্ণটির চিহ্ন প্রথমে দেয়া হয়নি। আসলে চিহ্নটি হল `&’। হ্যাঁ এটিকে আমরা এখন চিহ্ন হিসেবেই চিনি। এর ব্যবহার এখনো এবং হিসেবেই আছে। শুধু বর্ণমালা থেকে তার স্থান হয়েছে চিহ্নের তালিকায়।
এই শব্দগুলোই ইংরেজি ভাষার হারিয়ে যাওয়া বর্ণগুলো। এই নয়টি বর্ণের প্রয়োজনীয়তা এখন আর নেই। তবে এগুলোর হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাও কম রোমাঞ্চকর নয়। তবে আন্তর্জাতিক অভিধানে পাওয়া যায় এই বর্ণগুলো। খবর : ডেইলিবাংলাদেশ’র।