মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশকে স্মার্ট সিটি হিসেবে রূপান্তর করতে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। বিশেষ করে চট্টগ্রাম নগরীকে একটি আধুনিক বন্দর নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রায় দুই হাজার পাঁচশ কোটি টাকার প্রকল্প এবং বারই পাড়া খালসহ নতুন বাস টার্মিনাল নির্মাণ ও সেবকদের উন্নত বাসস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণে যে প্রকল্পগুলো বরাদ্দ দিয়েছেন তা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দৃশমান করতে হবে। না হলে আমাদের কার্যক্রমগুলি প্রশ্নের সম্মুখীন হবে। এই কারণে চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করতে হবে।
তিনি ২ হাজার ৫শ কোটি টাকার প্রকল্পের মধ্যে অন্তত ১ হাজার কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বানসহ কাজগুলো দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করা এবং ১৫টি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক ও প্রকৌশলীদের কঠোর নির্দেশনা এবং আগামীতে প্রতিটি সাধারণ সভার আগে প্রকল্প সমূহের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য প্রকল্প সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের নিদের্শনা প্রদান করেন। তিনি বলেন নগরীকে সুন্দর করে সাজাতে সকল সেবা সংস্থাকে দায়িত্ব নিতে হবে।
চসিক শ্রমিক কর্মচারী লীগ (সিবিএ) কর্তৃক উপস্থাপিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ী করণের বিষয়টি কার্যকর করার জন্য সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে নগরীর আন্দরকিল্লার চসিক পুরাতন নগর ভবনের কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে চসিকের ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ২৩ম সাধারণ সভায় মেয়র সভাপতির বক্তব্য রাখছিলেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশননের সচিব খালেদ মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সভায় বক্তব্য রাখেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটন, আফরোজা কালাম, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও বিভাগীয় প্রধানগণ।
মেয়র আরো বলেন, নগরীতে অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিক্সার কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ও জনসাধারণের ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য খুব শীঘ্রই চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সাথে আলোচনা করে অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিক্সা, গ্রাম সিএনজি চলাচল বন্ধ করার অভিযান শুরু করা হবে।
তিনি নগরীতে অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিক্সা উচ্ছেদ করে সোলার বিদ্যুৎ চালিত রিক্সা চালুর বিষয়ে পরীক্ষামূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান। একই সাথে ফুটপাত হতে হকারদের উচ্ছেদ করা এবং উচ্ছেদকৃত স্থান যাতে পুনরায় দখল হতে না পারে সে ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।
মেয়র পিডিবি কর্তৃক বর্ধিতকৃত রাস্তা সমূহ থেকে বিদ্যুতের খুঁটিগুলো সরানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং নালার উপর কোনো পোল যাতে স্থাপন করা না হয় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পিডিবি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করেন।
তিনি চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃক নগরীর বিভিন্ন সড়ক কর্তনের বিষয়ে বলেন, কোন অনুমতি ছাড়া ওয়াসা রাস্তা কর্তন করলে সংশ্লিষ্ট বাসা/বাড়ির মালিক, দায়িত্বরত ওয়াসার প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে। এছাড়া অনুমিতপত্র থাকলেও সড়ক কর্তনের সময় ওয়ার্ডের সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরকে অবহিত করতে হবে।
মেয়র দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, নগরীর বিভিন্ন পাড়া মহাল্লায় ও রাস্তায় স্থাপিত পানির কলগুলো বিনা নোটিশে তুলে নেয়া হচ্ছে বিধায় বস্তিবাসী ও যাদের বাসগৃহে ওয়াসার পানির লাইন নেই তারা পানির ব্যবহার থেকে বঞ্চিত ও ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। এই ভোগান্তি থেকে পরিত্রাণের জন্য পূর্বে স্থাপনকৃত পানির কলগুলো পুনরায় স্থাপন, যেগুলো নষ্ট তা বন্ধ না করে সচল করার জন্য ওয়াসা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, চসিককে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য রাজস্ব আয় বৃদ্ধির বিকল্প নেই। এজন্য চসিকের খালি জায়গাগুলোতে আয় বর্ধক প্রকল্প গ্রহণ এবং নালার উপর স্থাপিত স্ল্যাব নির্মাণকারীদের কাছ থেকে কর আদায়ের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার কাজও জোরদার করতে হবে। বিজ্ঞপ্তি