সুপ্রভাত ডেস্ক :
আমাজনের জঙ্গলে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাথরে অঙ্কিত প্রাচীন চিত্রকর্ম পাওয়া গিয়েছে! এটি প্রায় ১২ হাজার ৫০০ বছর আগের তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে। এই চিত্রকর্মটি গত বছর আবিষ্কার হয়েছিল। তবে একটি টিভি সিরিজের কাজ হওয়ায় ব্যাপারটা গোপন রাখা হয়। গেল ২৯ নভেম্বর গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এই নিউজ প্রকাশ করেছে গবেষক দল।
প্রায় ১২ হাজার ৫০০ বছর আগের এই চিত্রকর্মটি ৮মাইল দীর্ঘ। এটি পাওয়া যায় কলোম্বিয়ার পাশের আমাজনের জঙ্গলে। ইউরোপীয় গবেষণা কাউন্সিলের অর্থায়নে একটি ব্রিটিশ-কলম্বিয়ান দল এই আবিষ্কার করেছিল। এর নেতা হলেন জোসে আইরিয়ার্তে, এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতœতত্ত্বের অধ্যাপক এবং প্রাক-কলোম্বিয়ার ইতিহাসের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ।
তাদের মতে, এটি বরফ যুগের সময়কার হতে পারে বলে ধারণা গবেষকদের। সেই অনুসারেই এই চিত্রকর্মটির নাম দেয়া হয়েছে দ্য সিসটেইন চ্যাপেল অব দ্য আনসাইন্ট।এই পুরো চিত্রকর্মে লালচে টেরাকোটা রঙে দশ হাজারের মতো বিভিন্ন প্রাণী ও মানুষের ছবির সমন্বয় রয়েছে।
শুধু কি তাই! মজার ব্যাপার হচ্ছে চিত্রকর্মগুলোর মধ্যে বরফ যুগের বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া প্রাগৈতিহাসিক বৃহৎদাঁতয়লা ম্যাস্টোডন, প্যালেওলাম, জায়ান্ট গ্রাউন্ড স্লথ, বিলুপ্ত ক্যামেলিড এবং সেই সময়কার ঘোড়াও রয়েছে। ঘোড়ার চিত্রটি এতটাই সুক্ষ্ম আর সুন্দর আছে যে, ঘোড়ার চোখ এবং চুল স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
ছবিগুলো এতো নিখুঁত যে সে সময়ের বন্য ঘোড়াটির বুনো ও ভারী মুখ দেখা যাচ্ছে স্পষ্ট। উচু এই পাথরের দেয়ালে শিল্পীদের হাতের ছাপ, কোথায় একে অপরের হাত ধরে রয়েছে। কোথায় আবার তাদের নাচের চিত্র আঁকা। এই চিত্রগুলো বরফযুগের মানুষ এবং তাদের সভ্যতাই আমাদের সামনে তুলে ধরেছে। যেন মনে হচ্ছে বইয়ের পাতা কিংবা সিনেমা। যা দেখবেন সব ভাষাই বুঝতে পারবেন। এই চিত্রগুলো এতটাই স্পষ্ট যে, কাউকে বুঝিয়ে দেয়ার প্রয়োজন নেই সেখানে কি আঁকা আছে বা বলা হচ্ছে।
এই চিত্রটি বর্তমান এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য জ্ঞানের উৎস হতে পারে বলে গবেষকরা মনে করছেন। এই দেয়াল চিত্রে বিভিন্ন প্রাণীর পাশাপাশি সরীসৃপ প্রাণীর চিত্রও রয়েছে। এর মধ্যে আমাজনের সবচেয়ে বিষধর সাপ, কুমিরের চিত্র দেখা যাচ্ছে। এই জঙ্গলের মারা যাওয়া মানুষের ৮০ শতাংশই থাকে বিষধর সাপের কামড়ে মারা যাওয়া। এখানে রয়েছে বিভিন্ন জ্যামিতিক আকৃতি। আসলে এগুলো কিছুর সংকেত কিনা তাও বিশেষভাবে দেখা হচ্ছে।
বিভিন্ন প্রাণীকে উপাসনা করার চিত্রও রয়েছে। চিত্রগুলোর রং বেশিরভাগই লালচে কমলা ধরনের। এই রংগুলো তারা কীভাবে তৈরি করেছিলেন তা নিয়েও চলছে গবেষণা। শীঘ্রই এই সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটবে বলে আশা করছেন গবেষকরা। এই মাসে চ্যানেল ৪ সিরিজের জঙ্গল রহস্য : অ্যামাজনের লস্ট কিংডম প্রচারিত হবে। দেখতে চাইলে চোখ রাখতে পারেন সেখানে। খবর : ডেইলিবাংলাদেশ’র।
ফিচার দেউড়ি