ফজলে এলাহী, রাঙামাটি »
গত ১ মে থেকে মাছ ধরা বন্ধ হওয়ার ১৯ দিন পর ২০ মে শুক্রবার বেলা ১২ টায় বিএফডিসির ঘাটে রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের পোনা অবমুক্তকরণ ও বেকার হয়ে পড়া জেলেদের ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যশষ্য সহায়তা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।
কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্র, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী।
রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এম এম ফেরদৌস ইসলামের সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ মৎস উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. হেমায়েৎ হুসেন, মৎস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খা. মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ মৎস গবেষণা ইসস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ, নৌ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মো. শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার)। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন রাঙামাটি মৎস উন্নয়ন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক লে. কমান্ডার তৌহিদুল ইসলাম।
মাছের পোনা অবমুক্ত করণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণ ও মাছের বৃদ্ধির জন্য প্রতিবছর নিদিষ্ট সময় মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এই সময়টাতে সরকারের পক্ষ থেকে আপনাদের খাদ্যশস্য উপহার প্রদান করা হয়। এই সময়টা যাতে কোন প্রকার মাছ শিকার করা না হয় সেজন্য আপনাদের সচেতন থাকতে হবে। যাতে করে পরবর্তী সময়ে আপনারা অধিক মাছ পেতে পারেন।
বাংলাদেশ মৎস উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. হেমায়েৎ হুসেন বলেন, কাপ্তাই হ্রদ খননের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আমরা আলোচনা করবো। পাশাপাশি মাছের সঠিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করণে জাক, মসারি দিয়ে এবং মাছ ধরা নিষিদ্ধ কালীন সময়ে মাছ ধরা বন্ধ করা সম্ভব হলে আগামী ৫বছরের মধ্যে কাপ্তাই হ্রদ হতে দ্বিগুণ মৎস উৎপাদন সম্ভব হবে। সেজন্য সকল জেলেদের জাক, মসারি দিয়ে মাছ না ধরা এবং নিষিদ্ধ কালীন সময়ে কোন প্রকার মাছ না ধরার আহবান জানান তিনি।
বাংলাদেশ মৎস গবেষণা ইন্সটিটিউট এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, কাপ্তাই হ্রদে কাদা জমে কার্প জাতীয় মাছের প্রকৃতিক প্রজননের স্থানগুলো চর উঠে যাচ্ছে, যার কারণে কাপ্তাই হ্রদে কাপ জাতীয় মাছের পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে। আগে এক সময় কাপ্তাই হ্রদে ৮১ভাগ মাছ কার্প জাতীয় ছিল এখন এই হার ১ভাগে নেমে এসেছে। কার্পজাতীয় মাছের প্রকৃতিক প্রজনন বৃদ্ধি সম্ভব কিনা সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি। পাশাপাশি মাছ ধরা নিষিদ্ধ কালীন সময়ে অধিক পরিমাণে কার্পজাতীয় ও হারিয়ে যাওয়া প্রজাতীর মাছের পোনা ছাড়া হচ্ছে হ্রদে।
কাপ্তাই হ্রদের প্রাকৃতিক প্রজনের পাশাপাশি কার্প জাতীয় মাছের উৎপদান বৃদ্ধির লক্ষ্যে মে মাসেই বিএফডিসি নিজস্ব হ্যাচারীতে উৎপাদিত ৫০ মেট্রিক টনের অধিক মাছের পোনা কাপ্তাই হ্রদে অবমুক্ত করা হবে। পাশাপাশি যেসব কার্প জাতীয় মাছ হ্রদ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে সেসব মাছের বেশি পোনা অবমুক্ত করার কথা জানান সংশ্লিষ্টরা।
পরে ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে মাছধরা নিষিদ্ধ কালীন সময়ে বেকার হয়ে পড়া ২৫ হাজার জেলে পরিবারকে প্রতিমাসে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।