বিকাশ চৌধুরী,পটিয়া »
জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী ও সাবেক ছাত্রনেতা হাবিবুল হক চৌধুরী আজ সোমবার নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তার মনোনয়নপত্র সংগ্রহের এ খবরে পটিয়াসহ চট্টগ্রামজুড়ে তোলপাড় চলছে।
হাবিবুল হক চৌধুরী গত ১৫ বছর একটানা বিশ্বস্থতার সঙ্গে এপিএস হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০০৯ সাল থেকে এ দায়িত্বের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু সম্প্রতি হুইপের নানা বিষয় ফাঁস হলে ব্যক্তিগত সহকারীর ওপর সব সন্দেহ ভর করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ বাড়লে হুইপকে চ্যালেঞ্জ করে হাবিব আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হন। দীর্ঘদিন হুইপের সঙ্গে থাকায় প্রশাসনের লোকজন তাকেই সমর্থন যোগাচ্ছে বলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে।
হাবিবুল হক চৌধুরীর পদত্যাগপত্র হুইপ গ্রহণ না করায় তিনি (হাবিব) গত ১৪ নভেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
এ আসনে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পটিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, বর্তমান সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য চেমন আরা তৈয়ব, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ নাছির, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আবদুর রশিদ, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ডক্টর জুলকারনাইন চৌধুরী, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, মেজর জেনারেল এমএ ওয়াদুদ বীরপ্রতীক, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মোহাম্মদ ফারুক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য সত্যজিত দাশ রুপু, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা উপ-কমিটির সদস্য তসলিম উদ্দিন রানা দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ৭ জানুয়ারি। এ নির্বাচনকে ঘিরে এলাকায় চলছে আলোচনা ও সমালোচনা। তিনবারের সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী এবারই প্রথম দলের তৃণমূল কর্মীদের প্রতিরোধের মুখে পড়েছেন। গত ১৫ বছর তৃণমূল ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে এবং পুরনোদের অবহেলা করার অভিযোগ তুলে হুইপের বিরুদ্ধ ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করার ঘোষণা এসেছে দলের নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে। বিষয়টি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বে থাকা সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে অভিযোগ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে হুইপের ব্যক্তিগত সহকারী ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক হাবিবুল হক চৌধুরী বলেন, ‘হুইপ অহেতুকভাবে আমার ওপর সন্দেহ ও প্রতিশোধ পরায়ন হওয়ায় আমি পদত্যাগপত্র হুইপের বরাবরে জমা দিয়েছি। তিনি গ্রহণ না করায় আমি জনপ্রশাসন মন্ত্রালয়ে এটি জমা করেছি। পরিস্থিতি বুঝে প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থাও নেব।’
পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় না করে পটিয়ায় উন্নয়ন এবং তৃণমূল নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করায় দলের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। দলকে সুসংগঠিত করতে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি উঠেছে। তাদের সে দাবিকে সম্মান দিতে আমিও দলীয় ফরম সংগ্রহ করেছি। দলের সভানেত্রী ও মনোনয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন তার পক্ষেই আমরা কাজ করবো।’