সুপ্রভাত ডেস্ক »
উপমহাদেশের ক্রিকেটের দুই পরাশক্তি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে উন্মাদনা নতুন কিছু নয়। ক্রিকেটের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের একটি হিসেবে ধরা হয় এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর দ্বৈরথকে। দেশ দুটির মধ্যকার রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব তাদের লড়াইয়ের ঝাঁঝ দিনে দিনে কেবল বাড়িয়েছে। তবে মাঠের বাইরে তুমুল উত্তাপ থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে বাইশগজে তেমন একটা লড়াই দেখা যায় না তাদের। সে তুলনায় ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ আরও বেশি রোমাঞ্চকর হয় বলে মনে করছেন অনেকেই। আগামীকাল তেমনই এক লড়াইয়ে মাঠে নামছে দুই প্রতিবেশী দেশ। খবর ঢাকা পোস্টের।
বিশ্বকাপের জয়ের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করা স্বাগতিক ভারতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে বাংলাদেশ। আজ (১৯ অক্টোবর) পুনেতে মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (এমসিএ) স্টেডিয়ামে হাই-ভোল্টেজ ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে।
বিশ্বকাপের তৃতীয় রাউন্ড শেষে বিপরীত অবস্থানে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ এবং ভারত। টানা তিন ম্যাচ জিতে উড়ছে রোহিত শর্মারা। অন্যদিকে প্রথম ম্যাচ জেতার পর দুই ম্যাচে হার দেখেছে টাইগাররা। আছে টেবিলের সাত নম্বরে। রানরেটের হিসেবটাও অনুকূলে নেই টাইগারদের জন্য। আর তাই কালকের ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ। হারলেই সেমিফাইনালে ওঠার রাস্তা আরও কঠিন হয়ে পড়বে টাইগারদের জন্য।
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে টাইগার শিবিরে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ সাকিব আল হাসানকে নিয়ে। নিউজিল্যান্ড ম্যাচে মাংসপেশীর চোটে পড়া সাকিবের খেলা নিয়ে আছে অনিশ্চয়তা। টাইগার কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে জানিয়েছেন, সাকিবের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে ম্যাচের দিন সকালে। আজ (বুধবার) সংবাদ সম্মেলনে এসে হাথুরু বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) ব্যাটিং সেশন হয়েছে। ভালো রানিং বিটুইন দ্য উইকেট। তাকে (সাকিবকে) স্ক্যান করাতে নেওয়া হয়েছে, এখনও রেজাল্ট পাইনি। এখন সে ঠিক আছে। বোলিং আজকে দেখবো। কাল (ম্যাচের দিন) সকালে সিদ্ধান্ত নেব।’ উল্লেখ্য, এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে জয়ের ম্যাচে ব্যাট-বল হাতে দারুণ পারফরমেন্স ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন সাকিব।
পরিসংখ্যানে বাংলাদেশ-ভারত
কাগজে-কলমে এবং সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিবেচনায় বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে ফেভারিট ভারতই। কিন্তু রোহিত-কোহলিদের বিপক্ষে ম্যাচ বলেই কি না কিছুটা আশাবাদী বাংলাদেশ। দুই দলের মধ্যকার সর্বশেষ চার ম্যাচের মধ্যে তিনটিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে আছে বিশ্বকাপের আগমুহূর্তে শ্রীলঙ্কার মাটিতে এশিয়া কাপের একটি ম্যাচও। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর মাত্র চারবার মুখোমুখি হয়েছে দু’দল।
ওয়ানডে বিশ্বকাপ মঞ্চে ভারতের বিপক্ষে দারুণ এক অর্জন আছে বাংলাদেশের। ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতকে ৫ উইকেটে বিধ্বস্ত করে দুর্দান্ত এক জয়ের নজির গড়ে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে সেবার গ্রুপপর্ব থেকে ভারতকে ছিটকে দিয়েছিল টিম টাইগার্স। কিন্তু এরপর বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারতকে আর হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০১১, ২০১৫ ও ২০১৯ তিন আসরের দেখায় সবগুলোতেই হেরেছে টাইগাররা। এখন পর্যন্ত ৪০ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত। এরমধ্যে বাংলাদেশের জয় ৮টিতে এবং হার ৩১টিতে। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
যত বিতর্ক
২০০৭’র পর বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে জয়খরা থাকলেও প্রতিটি ম্যাচেই ভারতকে চাপে রাখতে সক্ষম হয় টাইগাররা। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যাওয়া কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে কম বিতর্কও হয়নি। বাংলাদেশি সমর্থকদের অনেকের বিশ্বাস, পেসার রুবেল হোসেনের ডেলিভারিতে রোহিত শর্মার ক্যাচ আউটকে আম্পায়ার ‘নো বল’ না দিলে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি জিততো টাইগাররাই।‘নো বল’ ইস্যুটি বাংলাদেশি ভক্তদের হৃদয়ে এখনও দাগ কেটে আছে এবং দুই দেশের ক্রিকেটানুরাগীদের মধ্যে বেশ কয়েকবারই এটি নিয়ে বাকবিত-া হয়েছে। ২০১৯ বিশ্বকাপেও ভারতকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। অবশ্য ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ২৮ রানে হেরে যায় টাইগাররা।