নিজস্ব প্রতিনিধি, সীতাকুণ্ড »
সীতাকুণ্ডে আসামি ধরতে গিয়ে তার স্ত্রীর ওপর শারীরিক নির্যাতন ও আলমারি থেকে টাকা, স্বর্ণালংকার এবং মোবাইল লুট করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সীতাকুণ্ড মডেল থানার এসআই মাহবুব মোরশেদকে ক্লোজড করে চট্টগ্রাম পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আশরাফুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রোববার পুলিশের নির্যাতনের শিকার হওয়া আসামির স্ত্রী খালেদা আক্তার চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার বরাবরে উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুব মোরশেদের বিরুদ্ধে মারধর ও টাকা, স্বর্ণালংকার লুটের অভিযোগ আনেন। পাশাপাশি অভিযোগের অনুলিপি সীতাকুণ্ড সার্কেলের এএসপি ও সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবে জমা দেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার দুপুরে সীতাকুণ্ড থানার এসআই মাহবুব মোর্শেদ তার বাড়ি সীতাকুণ্ডের মুরাদপুর ইউনিয়নে ভাটেরখীল এলাকায় যান একটি মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি নুরুল ইসলামকে (৫০) গ্রেফতার করতে। এ সময় তার সঙ্গে যান পুলিশ সোর্স মো. নুরুজ্জামানসহ (৪৫) দুজন পুলিশ সদস্য।
সাদা পোশাকে থাকা চারজনের মধ্যে এসআই মাহবুব ও সোর্স নুরুজ্জামান নুরুল ইসলামের ঘরে প্রবেশ করে। নুরুল ইসলামকে না পেয়ে তার স্ত্রী খালেদা আক্তারের কাছে আলমারির চাবি কোথায় জানতে চান। তিনি চাবি দিতে না চাইলে মাহবুব ক্ষিপ্ত হয়ে খালেদাকে উপর্যুপরি লাথি মারেন। খালেদা শারীরিক নির্যাতন সইতে না পেরে চাবি দিলে মাহবুব ও নুরুজ্জামান আলমারিতে থাকা এক লাখ ৪২ হাজার টাকা ও আট আনা ওজনের স্বর্ণালংকার, দুটি মোবাইল, তার ছেলে-মেয়েদের সার্টিফিকেট, জন্ম নিবন্ধনের কাগজপত্র ও ইসলামী ব্যাংকে লেনদেনের কাগজপত্র নিয়ে যান। এ সময় তার ছেলে রিয়াজ উদ্দিন সার্টিফিকেট নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তাকেও বেশ কয়েকটি চড় থাপ্পড় মারেন এবং তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে হুমকি দেন।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ খালেদা আক্তার জানান, তিনি এ ঘটনার পর থেকে পরিবার নিয়ে আতঙ্কে দিনযাপন করছেন। বিষয়টির প্রতিকার পেতে রোববার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিকেলে তিনি থানায় অভিযোগের অনুলিপি জমা দিতে গেলে প্রথমে তা না নিয়ে তাকে থানা থেকে সমঝোতার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে তিনি তাতে অসম্মতি জানানোর পাশাপাশি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
অভিযুক্ত এসআই মাহবুব মোরশেদ এ বিষয়ে বলেন, আমরা ওই বাড়িতে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেফতার করতে যাই। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামি পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে দেখে তাকে ধাওয়া করি। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা।
সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আশরাফুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অভিযুক্ত এসআই মাহবুব মোরশেদকে সীতাকুণ্ড থানা থেকে প্রত্যাহার কাে চট্টগ্রাম পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।