নিজস্ব প্রতিবেদক ও চকরিয়া প্রতিনিধি »
জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ওমরগণি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সমাজকল্যাণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নোবেলকে (৪২) গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় আরও নয়জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চকরিয়া উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের মুবিনপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নাসির উদ্দিন নোবেল পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সিকদার পাড়ার আবদুল খালেক সিকদারের ছেলে। এছাড়া তিনি আসন্ন ইউপি নির্বাচনে পূর্ব বড় ভেওলার চেয়ারম্যান প্রার্থিতা করতে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন, নোবেলের নিজ এলাকার মো. ফেরদৌসের ছেলে আজিজুল হক (৫০), আজহার আহমদের ছেলে জাফর আলম (৫০), গোলাম উল ইসলামের ছেলে নুরুল কাদের (৪৬), ওমর মিয়ার ছেলে সরওয়ার হোসেন (৪২), আবুল হোসেনের ছেলে মো. শফি (৩৮), সিরাজ মিয়ার ছেলে নুরুল আমিন (৩৫), আবু তাহেরের ছেলে মিজানুর রহমান (৩১), আকবর আহমদের ছেলে আবুল কালাম ইয়াসিন (২১), মন্নু আলমের ছেলে জাহেদুল ইসলাম (২৪)। আহতরা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে বিভিন্ন সূত্র বলছে হেলাল উদ্দিন ও নাছির উদ্দিন নামে দুজনকে জিজ্ঞাসাদের জন্য পুলিশ গ্রেফতার করেছে। কিন্তু পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
নিহত নাছির উদ্দিন নোবেল পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের সিকদারপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য, ছাত্রজীবনে তিনি ওমর গণি এম ই এস কলেজের ছাত্র সংসদের সমাজ কল্যাণ সম্পাদক ছিলেন। গতবার তিনি পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আকতার আহমদ জমি চাষ করতে নামলে নোবেলের নির্বাচনী প্রতিপক্ষ খলিলের লোক তাকে মারধর করে জমি থেকে উঠিয়ে দেন। তার আগে এ জমি নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ ছিল। এ বিষয়ে নালিশ পেয়ে দলবল নিয়ে নোবেল ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু ঘটনা বুঝে উঠার আগেই এনামুল হক, রুবেল ও আলাউদ্দিনসহ একদল বন্দুকধারী তাদের উপর অতর্কিত গুলি ছুঁড়ে। ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নোবেল প্রাণ হারায়। এ ঘটনায় আরো ৯ জন গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে গুরুতর অবস্থার কারণে সবাইকে চমেক হাসপাতালে রেফার করা হয়।
নাসিরউদ্দিন নোবেলকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে ওমরগনি এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান তারেকের সভাপতিত্বে নগরে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
ছাত্রলীগ ধারাবাহিক কর্মসূচি দিবে জানিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপ-কমিটি সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা আরশেদুল আলম বাচ্চু বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতা নাসির উদ্দীন নোবেলকে পরিকল্পিতভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যার ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলে এভাবে ছাত্রলীগের একজন ত্যাগী কর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা নিন্দাজনক। তারপরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি পূর্ণ আস্থা আছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে খুনীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এবং বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। নয়তো ছাত্রলীগ ধারাবাহিক কর্মসূচি দিবে বলে জানান তিনি।’
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ইয়াছিন আরাফাত কচি, নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর, উপ প্রচার সম্পাদক এম এ হালিম মিতু, কলেজ ছাত্রলীগ নেতা সরফুর আনাম জুয়েল, এম হাসান আলী, সাইফুদ্দিন সান্টু, জাহেদুল ইসলামসহ ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে নিশ্চিত করে চকরিয়া থানার ওসি তদন্ত মো. জুয়েল ইসলাম সুপ্রভাতকে বলেন, ‘জমি সংক্রান্ত ঘটনায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। এতে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধও হয়েছে। থানায় মিটিং চলছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’