‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি আর কত নিচে নামবে। বাংলাদেশের মানুষ কি এতই বোকা। আর কত নিচে নামাবে রাজনীতি। দেশে কোন ঘটনা ঘটলেই তারা নাশকতা দেখে। যদি নাশকতা হয়েই থাকে, তাহলে দায়িত্বটা কার? সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে নাশকতা কে করেছে তাদের খুঁজে বের করা। রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে কোন লাভ নেই। সরকার প্রত্যেক জায়গায় যখন ফেল করছে তখন নাশকতা দেখা ছাড়া আর তারা আর কিছুই দেখছে না।’
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে সীতাকু-ের কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকা-ে আহতদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে দেখতে যানবিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে আহতদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন এবং আহত ও তাদের স্বজনদের সাথে কথা বলেন।
এরপর তিনি সীতাকু-ে কনটেইনার ডিপোর দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় নিখোঁজ বিএম কনটেইনার ডিপোর ড্রাইভার মনিরুল ইসলামের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের সমবেদনা জানান।
আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশে আজকে চরম অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি বিরাজ করছে। একটি অনির্বাচিত ও অবৈধ সরকারের প্রতিফলনের কারণে বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে আজ এই ঘটনা ঘটছে। ফায়ার সার্ভিসের উন্নত মানের যন্ত্রপাতি দরকার। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের প্রয়োজনীয় সে যন্ত্রপাতি ও লোকবল নেই। সরকার মেগা প্রজেক্টের নামে টাকা দুর্নীতি করে বিদেশেপাচার করছে।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী, ড্যাব, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন কাজ করে যাচ্ছে। ব্ল্যাড ব্যাংক করা হয়েছে, নগদ অর্থ ও মেডিসিনসহ যাবতীয় সহযোগিতা করছি। অনুরোধ করবো, যদি রক্ত লাগে আমাদের ব্ল্যাড ব্যাংকে পর্যাপ্ত আছে, আপনারা এখান থেকে রক্ত নিবেন। বিরোধীদল হিসেবে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সরকার দুই লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, এই দুই লাখ টাকা দিয়ে কি প্রাণ ফিরে পাওয়া যাবে? নাকি ৫০ হাজার টাকায় আহত কারো চিকিৎসা করা যাবে। যেহেতু তারা জনগণের সরকার নয়, তাই তারা দুই লাখ টাকা ও ৫০ হাজার টাকা দিয়ে পার পেতে চাচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশে আইনকানুন যেগুলো আছে, তা প্রয়োগ হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে আইনও নেই। আইন প্রয়োগ না হওয়া কারণ হচ্ছে, এখানে অব্যস্থাপনা, অযোগ্য, অনির্বাচিত, দুর্নীতিবাজরা দেশ পরিচালনা করছে। ফলে তার প্রতিফলন প্রতিটি জায়গায় ঘটবে এটাই স্বাভাবিক। তাদের এসব ব্যর্থতা ঢাকতে তারা নাশকতা দেখবে, এতে করেই সব দায়ভার বিএনপির উপর চাপাতে পারবে। তাদের আর কোনকিছু দেখার কারণ নেই, কারণ তাদের নাশকতায় দেখতে হবে।
অগ্নিকা-ের ঘটনায় মামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, মামলার করার আগে সরকার দেখবে এই মামলার সঙ্গে দলীয় লোকজন কোন জড়িত আছে কিনা?এই যে সরকার বার বার নাশকতার কথা বলছে, এটার পিছনে কারণ আছে?মামলার আগে তারা দেখবে এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের কোন লোকজন জড়িত আছে কি না, আগে তাদের ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখবে? তারপর আওয়ামী লীগ মামলা মোকদ্দমা সেইভাবে করবে। এটা শুধু এখানকার দৃশ্য নয়, সারাদেশেই এভাবেই সব হচ্ছে। আওয়ামী লীগ করলেই পার পাওয়া যায়। দেশে কারা আওয়ামী লীগ করে, কারা আওয়ামী লীগ করে না এর ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করছে আওয়ামী লীগ। আমাদের কাছে তা বিবেচ্য হতে পারে না। কথা হচ্ছে কনটেইনার ডিপোটি নিয়মের মধ্যে পরিচালনা হয়েছে কিনা?কার ব্যর্থতা রয়েছে? এটা কি মালিকের ব্যর্থতায় হয়েছে, না অন্য কারো ব্যর্থতায় হয়েছে। সরকার এই কথাগুলো না বলে নাশকতার কথা বলে পার পাওয়ার চেষ্টা করছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, নগর বিএনপির সি. যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মিয়া ভোলা, শফিকুর রহমান স্বপন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, বিএমএ চট্টগ্রামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. খুরশিদ জামিল, ড্যাব চমেক শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. জসিম উদ্দীন, জেলার সভাপতি অধ্যাপক ডা. তমিজ উদ্দীন আহমেদ মানিক, মহানগর শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. আব্বাস উদ্দীন, ড্যাব কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এস এম সারোয়ার আলম, চমেক শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়েজুর রহমান, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য কাজী মো. সালাউদ্দীন, নগর বিএনপির সদস্য আবুল হাশেম, আনোয়ার হোসেন লিপু, মনজুর আলম চৌধুরী মনজু, মো. কামরুল ইসলাম, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, নগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশা, নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলম, ড্যাব নেতা ডা. ঈসা চৌধুরী, ডা. নুরুল করিম চৌধুরী, ডা. শাকিল উল রশিদ, ডা. মঈন উদ্দীন, ডা. মেহেদী হাসান প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি