শিক্ষামন্ত্রীর কাছে স্মারক প্রদান সাধারণ শিক্ষার্থীদের
চট্টগ্রামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে গতকাল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষামন্ত্রী বরাবর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মাধ্যম হয়ে স্মারক প্রদান করেন।
এরপর একটি বিক্ষোভ সমাবেশ নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ইমরান চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সৌরভ ধর, রাজেশ্বর দাশ গুপ্ত, ঋজু লক্ষ্মী অবরোধ, ইবনে সৈয়দ, কানুন, ধ্রুব বড়ুয়া, ইমন সৈয়দ, শিহাব, সুইডিশ পলিটেকনিক শিক্ষার্থী অয়ন সেন গুপ্ত, চট্টগ্রাম কলেজ শিক্ষার্থী খালিদ মিরাজ, মহিলা কলেজ শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা স্বর্ণা, মহসিন কলেজ শিক্ষার্থী রাফসান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাইফুর রহমান খান প্রমুখ।
সমাবেশে সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম।
সমাবেশে ইমরান চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষা-কার্যক্রমের বাইরে থাকার ফলে তারা নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন। আমরা দেখেছি করোনাকালে সারাদেশের মানুষের উল্লেখযোগ্য একটা অংশের রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। এর প্রভাব আমাদের শিক্ষার্থীদের উপরেও দারুণভাবে পড়েছে। কারণ শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশই নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। শিক্ষাজীবন শেষে পরিবারের হাল ধরার দায় থাকে। একদিকে পরিবারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারছে না। এদিকে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স-সীমাও পেরিয়ে যাচ্ছে। সারাদেশে কয়েক কোটি শিক্ষার্থীর বিপন্ন প্রায় জীবনকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে শিক্ষা-কার্যক্রম স্বাভাবিক করা ছাড়া কোনও গত্যন্তর নেই।
জহিরুল ইসলাম বলেন, করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালে সরকারের পক্ষ থেকে অনলাইনে শিক্ষা-কার্যক্রম পরিচালনা করা হলেও নানাবিধ সমস্যার কারণে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই শিক্ষা-কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হতে পারেনি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য মতে ৬০-৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হতে পারেনি।
রাজেশ্বর দাশগুপ্ত বলেন, বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে অনলাইনে শিক্ষা-কার্যক্রম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সম্ভব হলেও আমাদের দেশে তা নানা কারণেই সফলতা পায়নি। তার অন্যতম কারণ হচ্ছে দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগের গতি খুবই নিম্নমানের।
সৌরভ ধর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষা অনলাইনে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ধরনের সিদ্ধান্ত উচ্চশিক্ষার ধারণার পরিপন্থী। কারণ এর ফলে উচ্চশিক্ষাকে কেবল পরীক্ষা নির্ভর ও সার্টিফিকেট সর্বস্ব করে ফেলা হবে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের বৃহৎ একটি অংশ প্রায় দেড় বছর শিক্ষা-কার্যক্রমের বাইরে ছিল। এখন যদি অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া হয় তাহলে উচ্চশিক্ষার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেয়া হবে।
শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবির প্রেক্ষিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আহ্বান জানান। নতুবা সারাদেশের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলে দাবি আদায় করা হবে। বিজ্ঞপ্তি