হুমাইরা তাজরিন
সমুদ্র পরিচিতি এবং নৌবাহিনীর ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধারণ করতে নগরীর কাজির দেউড়িতে ২০২২ সালের ৫ মার্চ সম্প্রসারণ করা হয়েছে মেরিটাইম মিউজিয়াম। যদিও মিউজিয়ামটি প্রথম চালু হয় ১ জুন ১৯৯৫ সালে। মেরিটাইম মিউজিয়ামটি সম্প্রসারণের পর থেকে দর্শনার্থীদের ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
গতকাল রোববার মেরিটাইম মিউজিয়াম ঘুরে দেখা যায়, গেইটে প্রবেশদ্বারে রয়েছে টিকিটের ব্যবস্থা। সেখানে কেবল মাঠ প্রদর্শনের জন্য জনপ্রতি ১০ টাকা এবং ইনডোর মিউজিয়ামে প্রবেশ ফি ৫০ টাকা। সাইনবোর্ডে আরো জানানো হয় আউটডোর খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। ইনডোর মিউজিয়াম খোলা থাকবে বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
কাউন্টার পেরিয়ে দেখা মিলে মেরিটাইম মিউজিয়াম ক্যাফে এবং ঝিনুক শপের। মিউজিয়ামে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা কেউ কেউ এখানে খেতে বসেছেন এবং ঘুরে দেখছেন। মাঝখানে বিস্তৃত মাঠ। পরিবারÑপরিজন ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে মাঠে বসে আড্ডা দিচ্ছেন কেউ কেউ। মাঠের অপর প্রান্তে সাজানো নৌ-বাহিনীর বিশাল আকৃতির নৌযান।
মিউজিয়ামের মেঝেতে বাংলাদেশের শৈল্পিক মানচিত্র, পিলারে সামুদ্রিক প্রাণিদের প্রতিকৃতি, নীলচে দেয়ালে সাঁটানো সামুদ্রিক মাছ, স্তন্যপায়ী প্রাণি, শামুক-ঝিনুক, খাদ্যশৃঙ্খল, জলজ উদ্ভিদ, প্রবালখনিজ সম্পদ, স¦য়ংক্রিয় যান, সমুদ্রতল দেশে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন, সাবমেরিন কমিউনিকেশন, নদী সাগরসীমা মহাসাগরসহ বিখ্যাত খাল পরিচিতি রয়েছে।
২য় তলায় প্রবেশ করতেই দেখা মেলে নৌবাহিনীর ব্যাজসহ পদ পরিচিতি, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অবদানের ইতিহাস, তাদের ব্যবহার্য বিভিন্ন সরঞ্জাম, নৌযান ও অস্ত্র-শস্ত্র। এর মধ্যে রয়েছে বানৌজা পদ্মা, বানৌজা দুর্জয়, বানৌজা সালাম, বানৌজা বিজয় ইত্যাদি নৌযানের বর্ণনাসহ মিনিয়েচার প্রর্দশনী।
৩য় তলা দেখা মেলে বাংলাদেশে নৌবাহিনীর উন্মেষ ও বিকাশ সম্পর্কিত প্রর্দশনী। বিভিন্ন দেশীয় নৌযানের প্রতিকৃতি প্রদর্শনে দর্শনার্থীদের যেন চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীসহ সব বয়সের মানুষ যান্ত্রিক জীবনের ব্যস্ততা কাটিয়ে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত এই মিউজিয়ামে এসে সমৃদ্ধ হতে পারেন।
আর এমনই প্রত্যাশা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আশফাক নূর এসেছেন মিউজিয়ামে। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে না আসলে জানতাম না, আমাদের নৌবাহিনী এতো সমৃদ্ধ। আমাদের নৌবাহিনীর ইতিহাস এতো গৌরবোজ্জ্বল। যতই দেখছি ততই জানছি। এখানে ঘুরে দেখতে একঘেয়ে লাগার অবকাশ নেই। সচরাচর এমন মিউজিয়াম না হলে জনসাধারণের এতো কাছ থেকে জানা বোঝা দেখার সুযোগ হয়না। তাই আমার প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে।’