নিজস্ব প্রতিবেদক »
নগরীর পাহাড়তলীতে ছুরিকাঘাত করে যুবক হত্যা মামলার মূল আসামি রাজীবসহ তার তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৭)।
ঘটনার ১৫ ঘণ্টার মধ্যে গতকাল সোমবার রাঙামাটির কোতোয়ালী থানার একটি আবাসিক হোটেল থেকে ৩ জন ও নগরীর কদমতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে আরেকজনসহ মোট চারজনকে গ্রেফতার করেন র্যাব।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, হত্যার মূল হোতা হালিশহর এলাকার মো. আবুল হাসেমের পুত্র আবু তাহের রাজিব (২৩), লক্ষীপুর সদরের সংসেরাবাদ এলাকার আনোয়ার হোসেনের পুত্র দেলোয়ার হোসেন (জয়), হালিশহরের এরশাদ চেয়ারম্যান বাড়ির মো. ইব্রাহিমের পুত্র মো. রায়হান সজীব (২২)। এরপর গ্রেফতারকৃত আসামিদের তথ্য মতে কদমতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে আরেক আসামি হালিশহর নয়াবাজারের আবুল হাসেম এর ছেলে আবুল হাসনাত রানা (৩০) কে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত বলে র্যাবের কাছে স্বীকার করেন। গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক নূরুল আবছার।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, রোববার দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে বারোটায় নগরীর পাহাড়তলীর নয়াবাজার এলাকায় একটি কারখানার গেইটের সামনে প্রস্রাব করাকে কেন্দ্র করে কারখানার নৈশ প্রহরী ভিকটিম এর বড় ভাই মফিজ (৪০) তাকে বাধা প্রদান করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঐ ব্যক্তি নৈশ প্রহরী মফিজকে বলে, ‘এটা সরকারি জায়গা তুই বাধা দেওয়ার কে’ এই বলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আসামি আবু তাহের রাজীব, ওসমান, আবুল হাসান, এবং কতিপয় অজ্ঞাতনামা আসামিরা উক্ত জায়গায় এসে কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হয়। বড় ভাইয়ের সাথে কথা কাটাকাটির শব্দ শুনে ভিকটিম আজাদুর রহমান ঘটনাস্থলে গেলে তার সাথেও কথা কাটাকাটি এবং একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি হয়। পরবর্তীতে আসামিরা ভিকটিমকে দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়ে স্থান ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে একইদিন ভোর ৪ টা ৫০ মিনিটে ভিকটিম আজাদ দোকান থেকে নাস্তা আনার জন্য বাসা হতে বের হয়ে নয়াবাজার পৌঁছালে আগে থেকে ওৎপেতে থাকা আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভিকটিমকে একা পেয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথাড়ি পেটে, পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়। ছুরিকাঘাতের ফলে ভিকটিমের পেটের ভুড়ি বের হয়ে যায়। ভিকটিমের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে মৃত ঘোষণা করেন।
র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক নূরুল আবছার বলেন, হত্যার ঘটনায় ভিকটিম আজাদের স্ত্রী বাদি হয়ে পাহাড়তলী থানায় ৪ জনের নামসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে গ্রেফতার এড়াতে আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, ভিকটিম আজাদুর রহমানকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় মুমূর্ষ অবস্থায় তার ভাতিজা তারেকুর রহমানের কাছে তার উপর হামলাকারীদের নাম প্রকাশ করেন। সোমবার তাদের সংশ্লিষ্ট থানায় প্রেরণ করা হয়েছে।