সুপ্রভাত ডেস্ক »
আচরণ বিধি ভঙ্গের অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের চতুর্থ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সালাউদ্দিনের আদালত এ আদেশ দেন। খবর বিডিনিউজের।
বিচারক এ মামলায় পরবর্তী শুনানির জন্য ১২ মে সময় নির্ধারণ করেছেন।
১৬ জানুয়ারি হওয়া এ মামলায় বৃহস্পতিবার শুনানির দিন ধার্য থাকলেও আওয়ামী লীগের এ সংসদ সদস্য হাজির হয়নি। এদিন তার পক্ষে সময়ের আবেদন করা হলেও সেটি নিষ্পত্তি করা হয়নি।
এর আগে মামলার দিন আদালত মহিউদ্দিন বাচ্চুকে হাজির হতে সমন জারি করেছিল।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, আজ তিনি (মহিউদ্দিন বাচ্চু) অনুপস্থিত ছিলেন। বাদি পক্ষও আজ হাজির হয়নি।
‘যেহেতু সমন ফেরত এসেছে, তাই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত।’
মহিউদ্দিন বাচ্চুর আইনজীবী আবু সাঈদ রবি বলেন, ‘সংসদ অধিবেশন চলছে। তাই তিনি ঢাকায় আছেন। আজ ধার্য দিনে আদালতে হাজির হতে পারেননি। আমরা সময়ের আবেদন করেছিলাম।
উনার সাথে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করব। আশা করি, রোববার তিনি আদালতে হাজির হতে পারবেন।
ভোটের আগে নিজ এলাকার মসজিদে অনুদানের চেক বিতরণ করায় আচরণ বিধি ভঙ্গের অভিযোগে চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে মামলা করে নির্বাচন কমিশন।
চট্টগ্রাম-১০ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মনজুর আলমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করেছিল।
মনজুর আলম অভিযোগ করেছিলেন, ‘নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু ২২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের আগে চট্টগ্রাম-১০ আসনের সকল মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে এক হাজার টাকা করে এবং মাদানী মসজিদে এক লাখ টাকার অনুদানের চেক প্রদান করেছেন, যা খুতবার আগে ইমাম সাহেব মুসল্লিদের অবহিত করেন।
একইভাবে ২৪ ডিসেম্বর লালখান বাজারে তার নির্বাচনি কার্যালয়ে চট্টগ্রাম-১০ আসনের মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ৬০ হাজার টাকা করে অনুদানের চেক প্রদান করেন।’
এ বিষয়ে ইসির দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘এই ঘটনার প্রেক্ষিতে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির অনুসন্ধানে ২২ ডিসেম্বর মাদানি মসজিদে মহিউদ্দিন বাচ্চু উপস্থিত থেকে ২০-২৫টি মসজিদের অনুকূলে এক লাখ টাকা করে অনুদানের চেক বিতরণ করেছে বলে জানতে পারে।
‘এবং ২৩ ডিসেম্বর মধ্যম রামপুরায় নতুন বাজার জামে মসজিদে বাচ্চুর পক্ষে দেলোয়ার হোসেন খোকা ৫২ হাজার টাকা করে মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডার প্রতিনিধিদের অনুদানের চেক বিতরণ করেছে বলে জানতে পারে।’
মহিউদ্দিন বাচ্চু নিজে ও তার পক্ষে অন্য ব্যক্তির চেক বিতরণের ঘটনার আংশিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়।
নির্বাচনি আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর ৩ ধারা অনুসারে, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষ থেকে অন্য কোনো ব্যক্তি নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে বা গোপনে চাঁদা বা অনুদান দিতে বা দেওয়ার অঙ্গীকার করতে পারবেন না।
ওই ঘটনায় নির্বাচন কমিশন মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে এই অভিযোগে মামলা করার নির্দেশ দেয়।
নির্বাচনের আগে এক মতবিনিময় সভায় এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেছিলেন, ‘আমি দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়েছি সাড়ে তিন মাসের কিছু বেশি। সংসদ সদস্য হিসেবে সরকারি অনুদান বিতরণের দায়িত্ব ছিল আমার। সেসব চেক বিতরণ করা হয়েছে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে। যে প্রতিষ্ঠান অনুদান পেয়েছে তাদের কোনো একজন প্রতিনিধি স্বাক্ষর করে সেই চেক নিয়েছেন। সেখানে আমার কোনো ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততার বিষয় নেই।’