সুপ্রভাত ডেস্ক :
মিশরের নাম শুনলেই চোখে ভেসে ওঠে পিরামিড আর মমি। মিশরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মানব সভ্যতার প্রাচীন ইতিহাস। এদের পিরামিড, মমি, ফারাও ও রহস্যময় দেব-দেবীর মন্দিরের অসংখ্য কাহিনী জড়িয়ে রয়েছে ইতিহাসের সঙ্গে। নীল নদের তীরের এই মানুষগুলো হাজার হাজার বছর আগে এই রহস্য সৃষ্টি করেছে।
সেসময় কীভাবে তারা এই মমি করার ব্যাপারটি বের করেছিল তা আজো অজানা। তবে মিশর যে শুধু পিরামিডের জন্যই সমৃদ্ধ তা কিন্তু নয়। নীল নদের তীরে মিশরীয় সভ্যতার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক হিন্দু মন্দিরের ইতিহাস। শুধু তাই নয়, হিন্দু মন্দিরের আদলে তৈরি এক প্রাসাদও বেশ রোমাঞ্চ সৃষ্টি করেছে যুগ যুগ ধরে। এখেন নাকি প্রতি রাতে চলে রহস্যময় সব ভুতুড়ে কা-কারখানা।
লেখা থাকছে এই প্রাসাদকে নিয়েই। এটি তৈরি হয়েছিল একটি মন্দিরের আদলে। যিনি এটি তৈরি করেছিলেন তিনি কিন্তু হিন্দু ছিলেন না। তার আসলে মন্দিরের ডিজাইনটি খুব পছন্দ হয়। আর তখনই সিদ্ধান্ত নেন, এমন করে একটি প্রাসাদ তৈরি করবেন তিনি। চলুন জেনে নেয়া যাক এই প্রাসাদের ব্যাপারে-
মিশরের কায়রোয় হিন্দু মন্দিরের আদলে এই রাজপ্রাসাদ তৈরি হয় ১৯১১ সালে। স্থানীয় ভাষায় প্রাসাদটির নাম কুয়াসর-ই-ব্যারন। অর্থাত্ ব্যারনস প্যালেস। রাজকীয় এই প্রাসাদ তৈরি করান বেলজিয়াম থেকে মিশরে আসা মিলিওনেয়ার শিল্পপতি ব্যারন এডওয়ার্ড এমপেইন।
মিশরে খ্রিস্টান বা ইহুদিদের পাশাপাশি হিন্দুদেরও ছিল বেশ আধিপত্য। তাদের ধর্ম এবং সংস্কার তারা ভালোভাবেই পালন করত। তবে মিশরের কায়রোতে হিন্দুদের এক মন্দির ছিল। যা কিনা বেশ রোমাঞ্চকর এবং ভুতুরে ছিল। আবার বলতে পারেন পিরামিডের মতোই বেশ রহস্যময় ছিল এই মন্দির। এর আদলে তৈরি করা প্রাসাদও কিছু কম যায় না।
একসময় কায়রোর মূল আকর্ষণ ছিল এই প্রাসাদ। রাজকীয় এই প্রাসাদ তৈরি করান বেলজিয়াম থেকে মিশরে আসা মিলিওনেয়ার শিল্পপতি ব্যারন এডওয়ার্ড এমপেইন। একসময় কায়রোর মূল আকর্ষণ ছিল এই প্রাসাদ। ভারতীয় স্থাপত্য ও হিন্দু ধর্মের প্রতি আকর্ষণ ছিল ব্যারনের। সেই টানেই বিখ্যাত ফরাসি স্থাপত্যবিদ আলেকজান্দ্রে মার্কেলকে দিয়ে হিন্দু মন্দিরের আদলে এই প্রাসাদ নির্মাণ করান তিনি।
অঙ্কোরভাট ও ওড়িশার অদ্ভুত সব মন্দিরের আদলে তৈরি করেন এই প্রাসাদ। কংক্রিটের এই প্রাসাদ গত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্থাপত্য। দোতলা এই প্রাসাদের সিঁড়ি, লিভিং রুম, লাইব্রেরি, বেডরুম সর্বত্রই আসাধারণ স্থাপত্যকীর্তির ছাপ। হিন্দু পুরাণের অসংখ্য ছবি প্রাসাদের গায়ে খোদাই করা। প্রাসাদের মূল টাওয়ারটি হিন্দু মন্দিরের শিখরের আদলে নির্মিত।
সব ঘরে যাতে সূর্যালোক প্রবেশ করতে পারে তারও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে প্রাসাদে। এই প্রাসাদে নাকি প্রতি রাতে চলে রহস্যময় সব ভুতুড়ে কা-কারখানা। কথিত আছে, প্রাসাদের ঘূর্ণমান বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল ব্যারনের বোন হেলেনার।
এর কয়েক বছর পরেই ব্যারনের মানসিক ভাবে অসুস্থ মেয়ে মিরিয়মকে প্রাসাদের লিফটের ভেতর মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ব্যারন নিজেও মারা যান ১৯২৯ সালে। ১৯৫২ এর দিকে মিশরে বিপ্লব চলাকালীন সময়ে কায়রো ছেড়ে লন্ডন চলে যায় ব্যারন পরিবার। সৌদির ব্যবসায়ীর কাছে ১৯৫৭ সালে বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর থেকেই তালাবন্ধ এই প্রাসাদ। খবর : ডেইলিবাংলাদেশ’র।
ফিচার দেউড়ি