শুক্রবারের ভূমিকম্পের পর নিরাপত্তা নিয়ে নানা ধরনের কথা উঠে আসছে আলোচনায় ; বলা বাহুল্য এর কোনোটিই স্বস্তিদায়ক নয়। একটি গবেষণা বলছে, এমন বড় দুর্যোগ সামাল দেওয়ার সক্ষমতা নেই কোনো প্রতিষ্ঠানের। চট্টগ্রাম নগরে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ৭০ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে-বিশেষজ্ঞদের এমন আশঙ্কা। এ পরিস্থিতিতে উদ্ধারকাজ চালাতে গেলে যে সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণ সরকার, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের তার ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করেন তাঁরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নগরের অধিকাংশ ভবনেই ভূমিকম্প-প্রতিরোধী কোনো কাঠামো রাখা হয়নি। বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে অনেক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কোনো কোনোটি ধসে পড়বে। এতে বহু মানুষ হতাহত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলার সামর্থ্য ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর নেই।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো, ফায়ার সার্ভিসের একাধিক সূত্রমতে, ধসে পড়া ভবনে লোহার রড কেটে পথ তৈরি করতে লাগে হাইড্রোলিক কাটার; ভাঙা কংক্রিট স্ল্যাব তুলতে এয়ার লিফটিং ব্যাগ, দেয়ালের অংশ চাপ দিয়ে সরানোর জন্য লাগে, হাইড্রোলিক ডোর। এমন গুরুত্বপূর্ণ অনেক যন্ত্রের ঘাটতি রয়েছে। বড় দুখটিনায় প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ও যানবাহনেরও অভাব আছে।
প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে প্রয়োজনীয় ৫০ ধরনের সরঞ্জামের তালিকা আছে। এর মধ্যে অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে ১৭টি, দ্রুত উদ্ধারকাজের জন্য রেসকিউ কমান্ড ভেহিকেল মাত্র ২টি, টার্ন টেবিল লেডার ৩টি, ব্রেক ডাউন আন ১টি এবং হাইড্রোলিক কাটার ৩১টি। চট্টগ্রাম জেলায় ফায়ার স্টেশন ২১টি। এর মধ্যে নগরে ৯টি।
তবে এসব সরঞ্জাম বড় ধরনের দুর্যোগ সামান দেওয়ার জন্য যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রামের উপসহকারী পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ছোটখাটো দুর্যোগ সামাল দিতে আমাদের সক্ষমতা আছে। কিন্তু বড় কিছু হলে হিমশিম খেতে হবে। পর্যাপ্ত সরঞ্জাম নেই। খননযন্ত্র আছে মাত্র একটি।’
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের হিসাবে, বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরে ৩ লাখ ৮২ হাজার ১১১টি ভবন রয়েছে। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে ৭০ শতাংশ ভবন।
এমতাবস্থায় করণীয় কী? কী ভাবছেন নীতিনির্ধারকেরা? না কি শুধু তারা রাজনীতি নিয়েই ব্যাপক মশগুল থাকবেন। কিন্তু নগরই যদি ধ্বংস হয়ে যায়, মানুষই যদি না বাঁচে তাহলে তারা রাজনীতি করবেন কাদের নিয়ে, কাদের জন্য?




















































