নিজস্ব প্রতিবেদক »
সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। কিন্তু বৃষ্টি হলে তো আর কাজ থেমে থাকেনা, তাই নগরবাসী যে যার কাজের উদ্দেশ্যে ছুটছিলেন রাস্তায়। দুপুর দেড়টা নাগাদ শুরু হলো মুষলধারে বৃষ্টি। বেশিক্ষণ বৃষ্টি না হলে ২টা না পেরোতেই মুরাদপুরের কাছে হামজারবাগ এলাকায় নালার পানি উপচে পড়েছে রাস্তায়। এ সময় ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এমন বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে আরও ৩দিন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হামজারবাগ এলাকায় নালার ও রাস্তায় জমে থাকা পানি একাকার হয়ে গেছে। প্রধান সড়কের দেড় কিলোমিটার ছাড়াও নালা সংলগ্নগুলো সড়কও পানিতে ডুবে গেছে। কোমর সমান পানিতে রাস্তায় থাকা গাড়িগুলো আটকে যায়। ৩ নম্বর রোডের পাবলিক বাসগুলোর ইঞ্জিন মাঝ রাস্তায় বন্ধ হয়ে গেছে। গাড়ির চারপাশেই কোমর সমান পানি হওয়ায় গাড়িতে আটকা পড়েন যাত্রীরা। একপর্যায়ে পানি আশপাশের দোকানে ঢুকে যায়।
স্কুল শিক্ষার্থী মুমতাহিনা ফিরছিল স্কুল শেষে। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও পানি না কমায় বাধ্য হয়ে নেমে পড়লো নালার পানিতে। শুধু মুমতাহিনা নয়, রাস্তায় অসংখ্য মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ, এ নোংরা পানি ডিঙিয়ে কিভাবে পাড়ি দেবেন গন্তব্যে। এদিকে কিছু রিকশা চালক বাড়তি লাভের আশায় নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে রাজি হলেও পানির তোড়ে তাদের সে চেষ্টাও ভেস্তে যায়। মো. রুবেল তার তিন বন্ধুসহ পানির মধ্য দিয়ে রাস্তা পার হয়ে এসেই জানালেন তাদের পা চুলকাতে শুরু করেছে। রাস্তায় জমে থাকা নালার পানির দুর্গন্ধে হামজারবাগ এলাকার কাছে কাঁচাবাজারের পসরা সাজিয়ে বসা সবজি ব্যবসায়ীরা পড়েন বিপাকে। হঠাৎ পানি এসে পড়ায় অনেকেই সবজি সরিয়ে নিতে পারেনি। মানুষের এমন ভোগান্তিতে মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক কর্মজীবী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দেখুন, সব ভোগান্তি সাধারণ মানুষেরই। কতক্ষণ যাবত এখানে আটকে আছি। গাড়িগুলো ওপারে যেতেই চাইছেনা। হাতে গোনা কয়েকটা রিকশা আছে। তাও কয়েকগুণ বেশি ভাড়া চাইছে। এখন এসব ফর্মাল পোশাক পড়ে নোংরা পানি পাড়ি দেওয়া কি সম্ভব? ’
মোসলেম আলী নামের এক দোকানি বলেন, ‘আমার দোকানে পানি ঢুকে গেছে। ইফতারি নষ্ট হয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুম এখনও শুরুই হয়নি, এ রকম পানি জমলে তো ব্যবসা চালানো সম্ভব হবেনা।’
৩ নম্বর রোডের বাসচালক মারুফ উদ্দিন বলেন,‘ পানি বেশি হওয়ায় রাস্তার মাঝখানে আমার গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেছে। গাড়ি আর কোনোভাবেই স্টার্ট নিচ্ছেনা। যাত্রীরা পানির মধ্যেই রাস্তায় নেমে যেতে বাধ্য হলেন। এখন গাড়ির বড় কোনো সমস্যা হলো কিনা সেটাই দেখার বিষয়।’
আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবসাদুর রহমান বলেন, ‘শুক্র, শনিবার নাগাদ এ ধরনের বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। যেহেতু ১৫ মার্চ থেকে পুরো এপ্রিল মাসটাই কাল বৈশাখীর সময়। হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হবে। মাঝে মাঝে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাবে।’