সুপ্রভাত ডেস্ক »
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের (এসইএআরও) পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে, অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ। গতকাল বুধবার নয়া দিল্লিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক কমিটির ৭৬তম অধিবেশনে এই ভোটাভুটি হয়। খবর বিডিনিউজের।
ওই পদের জন্য সায়মা ওয়াজেদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নেপালের ড. শম্ভু প্রসাদ আচার্য। সদস্য দেশগুলো ৮-২ ভোটে সায়মা ওয়াজেদকেই পাঁচ বছরের জন্য আঞ্চলিক পরিচালক মনোনীত করে বলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানান।
এসইএআরও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ছয়টি আঞ্চলিক অফিসের একটি; সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে এ অফিস গঠিত। বাংলাদেশ, ভুটান, উত্তর কোরিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, তিমুর-লেস্তে এবং মিয়ানমার এ অফিসের সদস্য।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় ২০২৪ সালের ২২ থেকে ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় ডব্লিউএইচওর ১৫৪তম অধিবেশনে এই মনোনয়ন জমা দেওয়া হবে। নবনিযুক্ত আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ আগামী ১ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার বিষয়ক বাংলাদেশ জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা প্যানেলেরও সদস্য। বাংলাদেশে অটিজম-আক্রান্ত ব্যক্তিদের মুখপাত্র হিসেবে উদ্ভাবনী কাজের জন্য ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে ‘অটিজম-বিষয়ক শুভেচ্ছা দূত’ হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।
এসইএআরও এর আঞ্চলিক পরিচালক পদে বাংলাদেশ সরকারের মনোনয়ন পাওয়ার পর তিনি বলেছিলেন, নির্বাচিত হলে এ অঞ্চলের জনস্বাস্থ্য নীতি ও অনুশীলনে তার দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় কাজ করার পরিকল্পনা করবেন তিনি।
‘আমি অংশীদারত্বে কাজ করতে বিশ্বাসী এবং কমিউনিটির কথা শুনে স্থায়ী সমাধান তৈরি করতে আগ্রহী যা মাঠ পর্যায়ে কাজ করি। এটি আজ পর্যন্ত আমার কাজকে বৈশিষ্ট্যম-িত করেছে এবং এটি আমি এই ভূমিকায় নিয়ে আসবো বলে আশা করি।’
সায়মা ওয়াজেদ ১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক এবং ২০০২ সালে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে স্নাতকোত্তর করেন। ২০০৪ সালে স্কুল সাইকোলজির ওপর বিশেষজ্ঞ ডিগ্রি পান।
ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সায়মা ওয়াজেদ বাংলাদেশের নারীদের উন্নয়নের ওপর গবেষণা করেন। তার সেই গবেষণাকর্ম ফ্লোরিডার অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সস থেকে ‘শ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক উপস্থাপনা’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
২০০৮ সাল থেকে শিশুদের অটিজম এবং স্নায়বিক জটিলতা নিয়ে কাজ করছেন সায়মা ওয়াজেদ। ২০১১ সালে ঢাকায় অটিজমবিষয়ক প্রথম দক্ষিণ এশীয় সম্মেলন আয়োজনের মূল ভূমিকায় ছিলেন তিনি।
সায়মা ওয়াজেদ ২০১৩ সাল থেকে ডব্লিউএইচওতে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন। ২০১৪ সালে সংস্থাটি তাকে ডব্লিউএইচও এক্সিলেন্স পুরস্কারে ভূষিত করে।
অগাস্টে চ্যাথাম হাউসের গ্লোবাল হেলথ প্রোগ্রামের একজন সহযোগী ফেলো হিসেবে যোগ দেন সায়মা ওয়াজেদ। ২০২২ সাল থেকে তিনি সেখানে ইউনিভার্সাল হেলথ কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।