অপ্রাতিষ্ঠানিক বিজ্ঞান শিক্ষার মাধ্যমে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর বিজ্ঞান চর্চার যে অফুরন্ত সুযোগ সৃষ্টি করেছে, তা দিয়ে দেশে বিজ্ঞান বিপ্লব ঘটানো সম্ভব। দেশকে উন্নত করতে হলে বিজ্ঞান মনস্ক হতে হবে। গাণিতিক মডেলকে প্রাধান্য দিয়ে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। মফস্বল এলাকায় শিক্ষকদের অবহেলায় বিজ্ঞান শিক্ষা পিছিয়ে যাচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিজ্ঞান জাদুঘরের কর্মকান্ডকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে বিস্তৃত করতে হবে। অন্ততঃপক্ষে বিভাগীয় পর্যায়ে বিজ্ঞান জাদুঘরের শাখা স্থাপন সময়ের দাবি।
বিজ্ঞান জাদুঘরের মাধ্যমে গবেষণা খাতে তহবিল বরাদ্দ দেয়া উচিৎ, যা বিজ্ঞান চর্চাকে শাণিত করবে। বিজ্ঞান জাদুঘরের চলমান সকল প্রসংসনীয় কার্যক্রম টেকসই করতে হবে। অংশীজনদের মতামত নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। বিজ্ঞান জাদুঘর কর্তৃক প্রান্তিক পর্যায়ে ইনোভেশন ক্লাব এবং রোবটিকস ক্লাবগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করতে হবে। অনলাইন কার্যক্রমের ব্যাপ্তি বাড়াতে হবে এবং বিজ্ঞান জাদুঘরের সাথে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সম্পৃক্ততা থাকতে হবে।
গতকাল রবিবার জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর কর্তৃক আয়োজিত এক ভার্চুয়াল অংশীজন সভায় দেশের খ্যাতনামা বিজ্ঞানী, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, গবেষক, সরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক এবং তরুণ বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান সেবী সংগঠনের কর্মকর্তারা এ অভিমত প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান জাদুঘরের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী বলেন, মহান আল্লাহ তা’আলার সৃষ্টি বৈচিত্র্য এবং প্রকৃতির রহস্য উন্মোচন করাই বিজ্ঞান। প্রকৃতি এবং বিজ্ঞানের সমন্বয়ে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর বিজ্ঞান চর্চাকে শিক্ষার্থী, গবেষক ও ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে তাদের সুপ্ত উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে বিকশিত করতে চায়। অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিনোদনের মাধ্যমে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ শিশুদের মগজে ঢুকিয়ে দিচ্ছে বিজ্ঞান। করোনার এ মহাসংকটে বিজ্ঞান জাদুঘর প্রায় অচল হয়ে পড়া শিক্ষা ব্যবস্থায় ৪ হাজারের বেশী বিজ্ঞান মেলা, সেমিনার, অলিম্পিয়াড, কুইজ প্রতিযোগিতা এবং বিজ্ঞান বক্তৃতা অনলাইনে আয়োজন করে শিশু-কিশোরদের জাগ্রত রেখেছে। আগামীতে অংশীজনদের মতামত নিয়ে বিজ্ঞান জাদুঘরের কার্যক্রমকে আধুনিকায়ন করে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণীবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নিয়ামুল নাসের, বিজ্ঞান একাডেমির পরিচালক ড. এম এ মাজেদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক আমির মোহাম্মাদ নাসরুল্লাহ, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাশেম, অধ্যাপক নাসিম আক্তার, পিকেএসএফ এর পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সাদিক আহমেদ, চট্টগ্রাম গ্রামার স্কুলের অধ্যক্ষ তৌসিন খান, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কমল চন্দ্র হাওলাদার, নারায়নগঞ্জ ডকইয়ার্ডের কনসালটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার আলমগির হোসেন, শেরে বাংলা নগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নন্দিতা সরকার, মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক শাহজাহান সাজু, মিশন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক উত্থান সাহা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাবের সভাপতি ইশতেহার আহমেদ, জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাবের সভাপতি তারেক আজিজ, চট্টগ্রাম রিসার্স ল্যাবের সভাপতি জাহেদ হোসেন নোবেল, বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির মাহমুদ মীম এবং বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী তাসনিয়া ইসলাম তিথি, হুমায়রা জেরিন ও উম্মে রুম্মান।