বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘বর্তমানে এক শতাংশ লোক দেশকে নিয়ন্ত্রণ করছে। রাজনীতিতে রাজনীতিবিদদের কোনো ভূমিকা নেই। ভূমিকা আছে লুটেরাদের। কিছু বুদ্ধিজীবী তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাত করতে হবে। এ ছাড়া আর কোনো পথ নাই। আগামীতে বিএনপির নেতৃত্বে জাতীয় সরকার কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে। নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, বিএনপি সরকার হবে শ্রমিকনির্ভর সব পেশার মানুষের। ২০৩০ সালের মধ্যে কল্যাণকর রাষ্ট্র করার জন্য যা যা করা দরকার সব পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে’।
তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে হালিশহরের নয়াবাজারে একটি কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার দেশের জনগণকে জিম্মি করে ফেলেছে। কিন্তু জনগণের ¯্রােত রোধ করতে পারেনি। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবো। ঢাকার সমাবেশ ১০ তারিখ নয়াপল্টনেই হবে। এখানে বাধা দেয়ার সুযোগ নেই। প্রশাসনকে বলবো- জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না।
তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের মানুষরা চিকিৎসা সেবায় সবচেয়ে বেশি টাকা ব্যয় করে। আমরা যদি, একটা মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে ২৫ শতাংশ টাকা সাশ্রয় হবে। আগামীতে বিএনপির নেতৃত্বে জাতীয় সরকার হলে সকলের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি ছাড়াও যারা বেকার থাকবে তাদের জন্য বেকার ভাতাও দেওয়া হবে। আরও অনেক কিছু জাতীয় সরকারে আছে।
আমীর খসরু বলেন, শ্রমিকদের দুবেলা খাওয়ার সুযোগ নেই। আজকের শ্রমিকদের কর্মসংস্থান নেই। বাসস্থান নেই। অথচ শ্রমিকদের কারণে বাংলাদেশ টিকে আছে’।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী ও শ্রমিক নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেন, ‘সভ্যতা বিনির্মাণের কারিগর হচ্ছে শ্রমিক শ্রেণির মানুষ। বর্তমান সরকারের দুঃশাসনে অবহেলিত শ্রমিক সমাজ। এই শ্রমজীবী মানুষদের অবমূল্যায়ন করে কোনো দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। ৯০ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শ্রমিক সমাজের ভূমিকা আন্দোলনকে সফল করেছিল। বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের কঠিন আন্দোলনে শরিক হতে হবে।
শিমুল বিশ্বাস বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে জনগণের কোনো মূল্য নেই। তাই তারা জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা করছে না। যদি জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে হয়, তাহলে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করতে হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের পায়ের নীচে মাটি নেই। তারা এখন আবোল-তাবোল বকছে। সারাদেশের মানুষ আজকে এই সরকারের পতনের আওয়াজ শোনার জন্য প্রস্তুত হয়েছে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ‘যদি আবারো ২০১৪-১৮ সালের মতো পাতানো নির্বাচনের নীলনকশা করা হয় তাহলে তার দাতভাঙা জবাব দেয়ার জন্য জনগণ প্রস্তুত’।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, ‘শ্রমিকদলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে বিএনপিকে শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নাই’।
বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও রেলওয়ে শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক এম আর মন্জুরের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ শ্রম সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান।
বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক শফিকুর রহমান স্বপন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ ম জামাল উদ্দিন, বিভাগীয় শ্রমিক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইদ্রিস মিয়া, সহ সভাপতি শামসুল আলম (ডক), আবদুল বাতেন, ডা. মহসিন খান তরুণ, মমতাজ উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম, হুমায়ুন কবির চৌধুরী, আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া, নিজাম উদ্দিন, শাহেনেওয়াজ চৌধুরী মিনু, মো. হারুণ, গাজী আইয়ুব আলী, মোতালেব চৌধুরী, মো. আলী, ইব্রাহিম ফরাজী, সফিকুর রহমান মজুমদার, আবু বক্কর সিদ্দিক, হাসান মাহমুদ প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি