গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে আমির খসরু
নিজস্ব প্রতিবেদক
নগরীর সিআরবিতে বিএনপির বিভাগীয় গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘বন্দরনগরী থেকে যে বার্তা আমরা দিয়ে থাকি সে বার্তা সারা বাংলাদেশে চলে যায় এবং মানুষ উজ্জীবিত হয়। পলোগ্রাউন্ডের পরে বাকি যে ৯ টি সমাবেশ হয়েছে বিপুল জনসমাগমের মাধ্যমে আমরা তা করতে পেরেছি। সমস্ত বাংলাদেশে সেসব জনসভা উজ্জীবিত করেছে। আমাদের সমাবেশ দেখে সরকার আজ এত বেশি ভয় পেয়েছে যে তারা আমাদেরকেই ভয় দেখাতে চাচ্ছে। মানুষ যখন ভীত হয়ে আরেকজনকে ভয় দেখাতে চাই তখন অবস্থাটা আপনার নিশ্চয় বুঝতে পারছেন। কিন্তু বিএনপি নেতাকর্মীরা সে ভয়কে জয় করে ফেলেছে। নেতা কর্মীরা প্রমাণ করেছে শোভাযাত্রা, মিছিলে যত বাধায় আসুক আমাদের নেতা কর্মীরা পিছপা হয়না। ইতিমধ্যে আমাদের ১৩ জন সহযোদ্ধা শহীদ হয়েছে। তারা কখনো পিছপা হয়নি।
গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় নগরীর সিআরবিতে সরকারের পদত্যাগ এবং ১০ দফা দাবিতে বিএনপির গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমির খসরু বলেন, ‘যেখানেই হামলা হচ্ছে বিএনপির নেতা কর্মীরা প্রতিরোধ করছে। আগামী দিনের আন্দোলনে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। ১৬ জানুয়ারি আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি হবে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে। দেশের সকল জেলা, উপজেলায় প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হবে।’
গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে ১০ দফা আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ১০ দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই অবস্থান কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে আরেকটি ধাপ আমরা এগিয়ে গিয়েছি। পলোগ্রাউন্ডের জনসভার পর আজকে (গতকাল) এবং ২৪ ডিসেম্বর গণমিছিলে চট্টগ্রামবাসী আবারো প্রমাণ করেছেন এই সরকারকে জনগণ আর চায় না।’
প্রধান বক্তার বক্তব্যে মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘পলোগ্রাউন্ড ও ঢাকার সমাবেশ শত বাধা বিপত্তির পরও জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল। চট্টগ্রাম রাজনীতির তীর্থ স্থান। আওয়ামী লীগ যে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিলো বেগম খালেদা জিয়া লড়াই করে তা পুনরুদ্ধার করেছেন।’
কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এটা জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশ। শহীদ জিয়া বলেছিলেন, আমাদের এক ইঞ্চি জায়গাও কেউ নিতে পারবে না। বাংলাদেশ আমাদের পবিত্র জন্মভূমি। এই জন্মভূমি রক্ষায় বিএনপির কর্মীরা যথেষ্ট।’
বিএনপির উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের দাবি হলো তত্ত্ববধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।’
গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, ‘এই সরকারকে জনগণ বিশ্বাস করে না। বিএনপি জনগণকে নিয়ে মাঠে নেমেছে তাই আওয়ামী লীগের মাথাব্যাথা শুরু হয়েছে।’
এস এম ফজলুল হক বলেন, ‘ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই সরকার গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। তারা দেশের ভোটার অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে। এই সরকার থাকলে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে না।’
মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, এই নগরীতে আমরা লক্ষ লক্ষ জনতার সমাবেশ করেছি। এই গণঅবস্থান কর্মসূচিকে গণ অভ্যুত্থ্যানে পরিণত করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘তারা প্রশাসনের মাধ্যমে গার্মেন্টস কর্মীদের সমাবেশে নিয়ে আসে। এটা কোন জনগণের সমাবেশ ছিলনা। আর আমরা জনগণের ভোটাধিকারের সংগ্রামে আছি।’
নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দেশে যে সংকট তৈরি করেছে তা থেকে উত্তরণে বাংলাদেশের এখন মেরামতের প্রয়োজন।’
নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, উপজাতি সম্পাদক ম্যা মা চিং, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার প্রমুখ।
বিভাগীয় এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সকালেই নগরীর সিআরবিতে উপস্থিত হন। ভোরে নোয়াখালী থেকে তাঁরা রওনা হয়ে সিআরবিতে আসেন। পথে কোনো বাধার সম্মুখীন হননি বলে জানান তিনি।