সুপ্রভাত ডেস্ক »
বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেইল ওয়াংচুক। এজন্য কুড়িগ্রামে ২১১ একর জমিতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নিচ্ছে দেশটি। নারায়ণগঞ্জে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করে এমন আগ্রহের কথা জানিয়েছেন ভুটান রাজা। খুব শিগগিরই এ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সফরের তৃতীয় দিন বুধবার (২৭ মার্চ) শিল্প-বাণিজ্যে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ দেখতে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শনে যান জিগমে খেসার নামগেইল ওয়াংচুক।
বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) কার্যালয়ে পৌঁছান তিনি। সেখানে বাংলাদেশ ও জাপানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আড়াইহাজার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্মাণাধীন একটি কারখানায় ঢোকেন রাজা। তুরস্কভিত্তিক এ কোম্পানির কর্মকর্তারা কারখানাটির বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন তার সামনে। এরপর প্রতিনিধিদের নিয়ে রেফ্রিজারেটর কারখানার বিভিন্ন ইউনিট ঘুরে দেখেন তিনি।
পরে এ সফর নিয়ে কথা বলেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) চেয়ারম্যান এবং জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়োমা কিমিনোরি।
তারা জানান, এ অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে ভুটানের রাজার। খুব শিগগিরই ভুটান থেকে ২০০ কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে কুড়িগ্রামে ২১১ একর জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্মাণ কাজ শুরু করবে দেশটি।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ‘আমরা একইরকম ইকোনমিক জোন কুড়িগ্রামে করতে চাই। ভুটানের যেসমস্ত বিনিয়োগকারী আছে, তারা সেখানে বিনিয়োগ করবে। আমরা চাই যে ভুটানের সাথে একটা ভালো পার্টনারশিপ হোক।’
এর আগে এদিন পদ্মা সেতু পরিদর্শন করেন রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। সকাল ৯টার দিকে মাওয়া প্রান্ত থেকে পদ্মা সেতুতে ওঠে ভুটান রাজার গাড়িবহর। সেতুর মাঝামাঝি ১৮ নম্বর পিয়ারের কাছে গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়েন রাজা।
সেখানে তিনি টানা ১০ মিনিট অবস্থান করেন। এ সময় সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে বেশ কিছু ছবিও তোলেন তিনি।
ভুটান রাজার সঙ্গে ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুককে পদ্মা সেতু ঘুরিয়ে দেখান।
জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক পদ্মা সেতুর সার্ভিস এরিয়া- ২ এ গেলে সেতু কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন অভ্যর্থনা জানান। সেখানে সেতু সম্পর্কে বিস্তারিত ব্রিফ করেন পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিরচালক মো: শফিকুল ইসলাম।
রাজার এই পরিদর্শন ঘিরে সকাল থেকেই ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু পর্যন্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। সফরের কর্মসূচিতে আজ বিকালে ঢাকায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে ভুটান রাজার।
৫৪তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আমন্ত্রণে ভুটানের রাজা চার দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন।
সফরের চতুর্থ দিন আগামীকাল (২৮ মার্চ) বিমানে সৈয়দপুর যাবেন রাজা। সেখান থেকে সড়কপথে কুড়িগ্রামের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন তিনি।
এদিনই সফর শেষ করে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের আসাম হয়ে ভুটান ফিরে যাবেন জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। তবে ভুটানের রাজার সফরসঙ্গীদের একাংশ আজ (২৭ মার্চ) বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা থেকে বিদায় নেবেন বলে জানা গেছে।