সুপ্রভাত ডেস্ক »
বাংলাদেশকে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঢাকা ও কক্সবাজার বিমানবন্দরকে সেভাবেই প্রস্তুত করা হচ্ছে।
গতকাল শনিবার ‘স্বপ্নের সাথে বাস্তবতার সংযোগ’ স্লোগানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশই হবে একসময় আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহনের হাব, এটাই আমরা বিশ্বাস করি এবং সেভাবেই তৈরি করার চেষ্টা করছি। এক সময় বাংলাদেশের কক্সবাজার অথবা ঢাকা হবে হাব, সেভাবেই আমরা বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চাই।’ খবর বিডিনিউজের।
বর্তমান সময়ে দেশ-বিদেশে যোগাযোগের জন্য আকাশপথের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এখন আকাশ যাত্রা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ছিয়ানব্বই সালে যখন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে তখন আমাদের বিমানবন্দরে কিছুই ছিল না। তখন থেকেই উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। চট্টগ্রাম ও সিলেট দুটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ করি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ ভৌগলিক অবস্থানের কারণে প্রাচীন যুগ থেকে এই জায়গাটা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশকে যদি উন্নত করতে পারি পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হাব হতে পারে। এজন্য কক্সবাজারকে আমরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে সাজাচ্ছি। এছাড়া সকল স্থানীয় বিমান বন্দরগুলোর উন্নয়ন করছি।’
আন্তঃজেলা যোগাযোগে বিমানে যাতে যাতায়ত করা যায়, সেই উদ্যোগ নেয়ার কথাও জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জেটফুয়েল পাইপলাইনে যাতে আসে সেই কাজও আমরা শুরু করে দিয়েছি। খুব শিগিগিরই সেটা বাস্তবায়ন হবে।’
জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের সহায়তায় আমরা এই টার্মিনাল নির্মাণ করছি।’ তিনি এই টার্মিনাল নির্মাণে জড়িত সবাইকে অভিনন্দন জানান।
যাত্রী বাড়তে থাকলে নতুন রানওয়ে করার পরিকল্পনাও আছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
কক্সবাজারে সমুদ্রের পানি ঘেঁষে বিমান ওঠানামা করবে, এমন ইচ্ছা ছিল জানিয়ে সেভাবে তিনি সেখানে রানওয়ে গড়ে তুলছেন বলেও উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমান চলাচল খাতে দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে লালমনিরহাটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে।
ভারতের চন্দ্রযান পাঠানোর প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা বলেস, “আমাদের আশপাশের দেশ চাঁদে চলে যায়, আমরাও ভবিষ্যতে চাঁদে যাব। সেভাবেই আমরা দেশকে গড়ে তুলব।”
আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর আগে এভিয়েশন খাত উন্নয়নে কোনো সরকার এতো উদ্যোগ নেয়নি। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে, তাদের জন্য কিছু করেছে। মানুষকে মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে শিখিয়েছে। বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশকে চেনে সবাই।’
বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি-মূল্যস্ফীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভরশীল হতে দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর ওপর আবারো জোর দেন।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, জাপানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী মাসাহিরো কোমুরা, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মোকাম্মেল হোসেন এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিএএবি) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
জাপানের ভূমি, অবকাঠামো, পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী সাইতো তেতসুও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।