বন্যায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে

এক সপ্তাহের প্রবল বর্ষণে চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা, লোহাগাড়া, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, পটিয়া, ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী এলাকায় বেশি ক্ষতি হয়েছে। এসব এলাকায় উৎপাদিত আউশ ধান ও সম্প্রতি লাগানো আমনের চারা পানিতে ডুবে গেছে। পাশাপাশি সবজির আবাদ পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ, ডবলমুরিং ও পতেঙ্গা এলাকাসহ জেলার ১৪ উপজেলায় ৫ হাজার ৬৭ হেক্টর জমিতে আবাদ হওয়া শরৎকালীন সবজিসহ পানির নিচে তলিয়ে গেছে প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর জমির ফসল। এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবজি ক্ষেতের। শুধু চট্টগ্রামে প্রাথমিকভাবে ১৩৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গত এক সপ্তাহে চট্টগ্রামে ৬৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা বিগত ৩০ বছরের মধ্যে রেকর্ড। অতি বৃষ্টির সাথে যোগ হয়েছে পাহাড়ি ঢল। পাহাড়ি নদী সাঙ্গু, মাতামুহুরী ডলু এবং কর্ণফুলী ও হালদার পানি বেড়েছে প্রতিদিন।

জেলার ১৪টি উপজেলা এবং সিটি করপোরেশনের মধ্যে এক লাখ ৪০ হাজার ১২টি পারিবারের ছয় লাখ ৩৫ হাজার ১৩০ জন লোক বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েন। এ পর্যন্ত বৃহত্তর চট্টগ্রামে প্রায় অর্ধশত প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।

যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলে ধরা হয়েছে তা সম্পূর্ণ নয়। শেষ পর্যন্ত এর পরিমাণ আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। মৃতের সংখ্যাও বাড়তে পারে। আবহাওয়া দপ্তরের তথ্যানুযায়ী শনিবার থেকে আবারও বৃষ্টি হতে পারে। এরইমধ্যে বন্যার প্রভাবে শাকসবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। তাতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সবকিছু মিলে মানুষের জীবনযাপন কঠিন থেকে কঠিনতম হয়ে পড়েছে। এসময় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ বাড়াতে হবে। যে যেভাবে পারে সব সামর্থ নিয়ে দুর্গত মানুষের পাশে থাকাটাই বড় কাজ।