সুপ্রভাত ডেস্ক »
সার্ভার ডাউন হয়ে যাওয়ার পর প্রায় ছয় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ফের সচল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম।
সোমবার রাত নয়টার দিকে বিশ্বজুড়ে বন্ধ হয়ে হোয়াটসঅ্যাপ। পাশাপাশি ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামেও বার্তা আদান-প্রদান বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশেও এই তিন অ্যাপ ব্যবহার করা যাচ্ছিল না।
অবশেষে ভোর সাড়ে চারটার দিকে সার্ভার সচল হওয়ার খবর নিশ্চিত করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। পরে হোয়াটসঅ্যাপের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে টুইট করা হয়।
প্রায় ছয় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর আবার ফিরে এসেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম।
তিনটি প্ল্যাটফর্মই ফেসুবকের মালিকানাধীন। ওয়েবসাইট বা স্মার্টফোন কোন ডিভাইস দিয়েই এই মাধ্যমগুলোতে ঢোকা যাচ্ছিল না।
সোমবার রাত থেকে এসব যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সমস্যা দেখা দেয়।
ডাউনডিটেক্টার নামে যে প্রযুক্তি দিয়ে এই মাধ্যমগুলোর ব্যবহার ট্র্যাক করা যায়, তারা জানিয়েছে, তাদের দেখা এটাই সবচেয়ে বড় বিভ্রাট। বিশ্বব্যাপী এক কোটি ৬০ লাখ ব্যবহারকারী সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার রিপোর্ট করেছেন।
সর্বশেষ ফেসবুক এ ধরনের বড় সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি ২০১৯ সালে।
বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার দিকে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রামে সমস্যার শুরু হয়। ভোর রাত চারটার দিকে আবার এসব সেবা পেতে শুরু করেন গ্রাহকরা।
যারা এই বিভ্রাটের কারণে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন, একটি টুইট বার্তায় তাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে ফেসবুক।
সোশ্যাল মিডিয়া জগতের শীর্ষ এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা মাইক শোরফার বলেছেন, ফেসবুক শতভাগ কার্যকরী হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।
পাশাপাশি ইন্সটাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপ টুইটারে একটি পোস্টে নিশ্চিত করেছে যে, তাদের সেবা আবার চালু হয়েছে।
ফেসবুকের ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট প্ল্যাটফর্ম ওকুলাস ব্যবহারকারীরা এবং যেসব অ্যাপে ফেসবুকের লগইন প্রয়োজন হয়, তারাও সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার কথা জানিয়েছেন।
দীর্ঘ সময় ধরে এ ধরণের ব্যাপক মাত্রার বিভ্রাট খুবই বিরল।
সর্বশেষ ২০১৯ সালে ফেসবুক এবং তাদের অন্যান্য অ্যাপে সমস্যা হওয়ার কারণে বিশ্বব্যাপী গ্রাহকরা ১৪ ঘণ্টার বেশি সময় ব্যবহার করতে পারেননি।
কেন এই সমস্যা হয়েছে, এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তা জানানো হয়নি।
তবে অনলাইন নেটওয়ার্ক বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, এটা হয়তো ফেসবুক সাইটগুলোর ডোমেইন নেম সিস্টেম বা ডিএনএস সমস্যার কারণে হতে পারে।
ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে ডিএনএসকে অনেক সময় ফোন বুক বা অ্যাড্রেস বুকের সঙ্গে তুলনা করা হয়। এর ফলে একজন ওয়েবসাইট ব্যবহারকারী যে সাইটটি খুঁজছেন, তাকে সেই সাইটের কম্পিউটার সিস্টেমে নিয়ে যায়।
এ বছরের শুরুর দিকে ডিএনএস সমস্যার কারণে বেশ কয়েকটি বড় ওয়েবসাইট সমস্যায় পড়েছিল।
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের এই বিভ্রাট নিয়ে মজা করতে ছাড়েনি রেডিট এবং টুইটারের মতো অন্য সামাজিক যোগাযোগের প্ল্যাটফর্মগুলো।
ফেসবুকের এই সমস্যা এমন সময় ঘটলো, যার একদিন আগে প্রতিষ্ঠানের সাবেক একজন কর্মী ফ্রান্সিস হোগেন সিবিএসকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ফেসবুক ‘নিরাপত্তার চেয়ে ব্যবসার’ প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়। তিনি ফেসবুকের অনেক গোপন নথিপত্রও ফাঁস করেছে।
বিবিসির উত্তর আমেরিকায় প্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদদাতা জেমস ক্লেটন বলছেন, বড় বড় ওয়েবসাইটে বিভ্রাটের ঘটনা নতুন কিছু নয়। কিন্তু যে মাত্রায়, ব্যাপকভাবে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ বা ইনস্টাগ্রামের ক্ষেত্রে ঘটেছে, তা আমলে নেয়ার মতো।
যতটা সময় ধরে এই সমস্যা চলেছে, তাও বেশ বিরল।
সাধারণত হ্যাকিংয়ের কারণে এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয় না, তবে সেই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়েও দেয়া যায় না।
সূত্র : বিবিসি