নিজস্ব প্রতিবেদক »
নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম মাঠে শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা। আজ বিকেল তিনটায় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলার উদ্বোধন করবেন। কিন্তু মেলার প্রস্তুতি এখনও শেষ হয়নি। ১৪০ স্টলে সাজানো মেলার প্রথম দিনে থাকছে কেবল ৩৬ শতাংশ স্টল। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) মাঠের শিডিউল পেতে দেরি হওয়ায় স্টল তৈরিতেও হয়েছে বিলম্ব, জানান আয়োজকেরা।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল চারটার দিকে মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, চলছে বাঁশ ও কাপড় দিয়ে প্যান্ডেল তৈরির কাজ। চলছে ত্রিপল লাগানো, কাঠ দিয়ে বই রাখার তাক তৈরি করছেন কাঠমিস্ত্রীরা। কোনো কোনো স্টলে চলছে রং লাগানোর কাজও। মেলা প্রাঙ্গণে হাঁটতে লোকজনের পায়ে জড়াচ্ছে ধুলো। নিরাপত্তার দায়িত্বে ‘ব্ল্যাকহকস’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থার সদস্যদের গতকাল (৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে নিরাপত্তার দায়িত্বে দেখা যায়।
এ সম্পর্কে বলাকা প্রকাশনীর জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি যখন সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সাথে যুক্ত হয়ে ২০১৯ সাল থেকে মেলার আয়োজন করি, তখন মেলা আয়োজনের নির্দিষ্ট নীতিমালা ছিল। যেটা বাংলা একাডেমির আদলে তৈরি করা হয়। মেলার সার্বিক তদারকির জন্য স্ট্যান্ডিং কমিটি ছিল। নিরাপত্তার তদারকির জন্য পুলিশ নিয়োজিত থাকতো। থাকতেন ম্যাজিস্ট্রেটও। সিজেকেএস-এর মাঠের শিডিউল মেলা উদ্বোধনের ৫ থেকে ৭ দিন আগে সম্পন্ন করে ইটবিছানো, স্টল তৈরি সবকিছুই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হতো। কিন্তু এবার সবকিছুতে অগোছালোভাব দেখা যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে বইমেলার যে সুন্দর ধারাটি গড়ে উঠেছে তা ব্যাহত হবে এবং চট্টগ্রামে বইমেলার ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় দেখা দেবে।’
খড়িমাটি প্রকাশনীর মনিরুল মনির বলেন, ‘প্রতিবছর ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এবার সেটা হয়নি। পানি ছিটানো হলেও সেটা কতক্ষণ থাকবে, কতক্ষণইবা সুবিধা দেবে! যা হোক, আয়োজকবৃন্দের সুবাদে এবার আমাদের একটি নতুন অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। ধুলোবালি ওড়াউড়ির মধ্যে বইপ্রেমীরা কতক্ষণ মেলায় থাকতে চাইবেন, তা একটা প্রশ্ন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটির লোক মোতায়েন করা হয়েছে। তবে সেটা কেবল অবকাঠামো পাহারা দিতে আর রাতে স্টলগুলোতে বইপত্র থাকে সেগুলো দেখাশোনা করার জন্য। কিন্তু মেলা চলাকালে সার্র্বিকভাবে যে নিরাপত্তা বিধানের ব্যাপার আছে, সেটার জন্য আইন শৃংঙ্খলাবাহিনী মোতায়েনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে কিনা, এখনও জানতে পারিনি।’ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মর্কতা আজিজ আহমেদ বলেন, ‘পুলিশ মোতায়েন হয়নি। তবে একটি বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা নিরাপত্তার বিষয়গুলো দেখভাল করবে।’
মেলার দপ্তর সচিব আইউব সৈয়দ জানান, ‘আশা করি, কালকের মধ্যে (আজ) সব সম্পন্ন হয়ে যাবে। মেলায় ৫০টির মতো স্টল থাকবে পাঠক ও দর্শনার্থীদের জন্য। স্টল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে ৩ তারিখ থেকে। আমরা স্টলের কাঠামো তৈরি করে দিয়েছি। এখন প্রকাশনা সংস্থাগুলো তাদের স্টলগুলো সাজাচ্ছে। সাজানো তো আমাদের কাজ না। প্রতিবার এমনই হয়। এমন সময়েই কাজ শুরু হয়।’
অমর একুশে বইমেলা চট্টগ্রাম-এর আহবায়ক ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু বলেন, ‘আমাদের স্টলগুলো তৈরি হয়ে গেছে। কেবল বঙ্গবন্ধু কর্নার, শিশুকর্নার, এলইডি বসানোসহ আর কিছু কাজ বাকি। আমরা কাজগুলো আগেও শুরু করতে পারতাম। কিন্তু আপনারা জানেন যে, সিজেকেএস-এর মাঠটি ব্যস্ততম মাঠ। সেটির শিডিউল পেয়েছি আমরা ২ ফেব্রুয়ারি। এর মধ্যে যতটুকু সম্ভব আমরা তৈরি করে নিয়েছি ।’