ভূমি ব্যবস্থাপনায় ‘ডিজিটাল কর ব্যবস্থা’ প্রবর্তনের জন্য বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) পুরস্কার-২০২২ এ সেরা প্রকল্প হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন। আন্তর্জাতিক মর্যাদাপূর্ণ এই অর্জনে নেতৃত্বে অগ্রণী ভূমিকা রাখায় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এমপিকে দ্য চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র পক্ষ হতে গতকাল সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
সংবর্ধিত অতিথি ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এমপি চিটাগাং চেম্বারে দায়িত্বরত অবস্থায় ব্যবসায়ীদের সমস্যা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করার নেতৃত্বগুণ অর্জন করেছেন উল্লেখ করে চেম্বারের জ্যেষ্ঠ ও সাবেক পরিচালকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রযুক্তিগত বিপ্লবের পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের কাজের পদ্ধতি এবং পলিসি রিফর্ম নিয়ে কাজ করেছেন বলে জানান যা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ও ধাপে ধাপে শেষ করা হচ্ছে।
ভূমিমন্ত্রী জানান, ‘দলিল যার জায়গা তার’ এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ভূমি দখলদারদের দৌরাত্ম্য ও শোষণের হাত থেকে প্রকৃত খতিয়ানভুক্ত মালিকদের রক্ষার্থে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২১’ প্রণয়ন করা হচ্ছে যা শিগগিরই জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে।
মন্ত্রীত্বের দায়িত্ব পালনকালে সকল ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে কাজ করে গেছেন উল্লেখ করে তিনি জানান, ব্যবসায়ীরা ক্যাবিনেটে আছে বলে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, চলমান ডিজিটাল সার্ভের ফলাফল খুবই ভালো। আশা করছি ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল সার্ভের উদ্বোধন করবেন। এই সার্ভের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের ভূমি বিষয়ক সকল তথ্য এবং সংকট দূর হবে। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি বাণিজ্য মেলার জন্য স্থায়ী ভেন্যুর আবশ্যকতা উপলব্ধি করে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন ভূমিমন্ত্রী।
গতকাল সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম’র সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এম এ লতিফ এমপি বলেন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী সততা ও নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করে গেছেন এবং তার অঙ্গীকার থেকে বিচ্যুত হননি। যার ফলশ্রুতিতে তার নেতৃত্বে ভূমি মন্ত্রণালয় বৈশ্বিক স্বীকৃতি পেয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তাই নেতৃত্বের এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে ১০ বছরের মধ্যে দেশ আরো এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়া ভূমি মন্ত্রণালয় ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে যত অব্যবহৃত ভূমি রয়েছে তার সদ্ব্যবহারের উপর গুরুত্বারোপ করেন যাতে দেশ অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভরতার দিকে এগিয়ে যেতে পারে।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, সরকার জনগণের দোর গোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় ভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে বর্তমানে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, ভূমি সংস্কার বোর্ড, ভূমি আপিল বোর্ড, ভূমি প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং হিসাব নিয়ন্ত্রক (রাজস্ব) দপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয় এর অধীনে কাজ করে যাচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল সার্ভে বাস্তবায়িত হলে দেশের ভূমি সংক্রান্ত সকল জটিলতা নিরসন হবে। চট্টগ্রামে বাণিজ্য মেলা কোন স্থায়ী ভেন্যু নেই। তাই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিরিখে চট্টগ্রামে মেলা আয়োজনের একটি স্থায়ী ভেন্যুর জন্য মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।
চেম্বার সিনিয়র সহ-সভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন বলেন, বর্তমান ভূমি মন্ত্রী চিটাগাং চেম্বারের দায়িত্ব থাকাকালীন বন্দর ব্যবস্থাপনায় প্রাইভেটাইজেশনে নিয়ে যাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। আশা করি, ভূমিমন্ত্রীর নেতৃত্বে ভূমির যে ডিজিটালাইজেশন করা হচ্ছে তাতে সমস্ত ভূমি একটি প্ল্যাটফর্মে চলে আসবে।
চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যশস্যে দিন দিন আমদানি নির্ভরতা বাড়ছে, যা নিরসনে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন কৃষি জাতীয় গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়কে সাথে নিয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা দরকার। এর মাধ্যমে সরকারি খাস জমি ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় কৃষি শস্য উৎপাদন করে কিছুটা হলেও আমদানি নির্ভরতা কমানো ও দেশের মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতিদ্বয় ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ ও এস এম আবুল কালাম, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এম এ ছালাম, দৈনিক আজাদী সম্পাদক ও চেম্বারের সাবেক পরিচালক এম এ মালেক, চেম্বার পরিচালকবৃন্দ এ কে এম আক্তার হোসেন, মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন) ও হাসনাত মো. আবু ওবাইদা, সাবেক পরিচালকদ্বয় এস এম আবু তৈয়ব ও এম এ মোতালেব, দৈনিক পূর্বকোণ’র ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, রিহ্যাব’র সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, মিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান মিয়া আবদুর রহিম, বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী, ইউরো পেট্রো প্রোডাক্ট লিমিটেড এর চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, জিপিএইচ ইস্পাতের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমাস শিমুল, উইম্যান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি আবিদা মোস্তফা, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের মহাসচিব চৌধুরী ফরিদ, মহানগর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি সালামত আলী, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি সালেহ আহমেদ সুলেমান ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম কমান্ডার মোজাফফর আহমদ।
অন্যদের মধ্যে বিডার পরিচালক সুমন চৌধুরী, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার, চিটাগাং চেম্বার পরিচালকবৃন্দ জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), অঞ্জন শেখর দাশ, মো. রকিবুর রহমান (টুটুল), বেনাজির চৌধুরী নিশান, নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, শাহজাদা মো. ফৌজুল আলেফ খান, ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখার হোসেন, মো. ইফতেখার ফয়সাল, এস এম তাহসিন জোনায়েদ, মোহাম্মদ আদনানুল ইসলাম, তানভীর মোস্তফা চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিরুল আলম (ফাহিম), সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতিদ্বয় মো. নুরুন নেওয়াজ ও ওমর হাজ্জাজ, প্রাক্তন পরিচালকবৃন্দ, ফিলিপাইনের অনারারি কনসাল এমএ আউয়ালসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, ট্রেডবডি নেতৃবৃন্দ এবং নেতৃস্থানীয় ব্যবসায়ীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি