নিজস্ব প্রতিবেদক »
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী ও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মকর্তা গোলাম ইয়াজদানীর ওপর হামলার ঘটনায় ১১ জনের বিরুদ্ধে খুলশি থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার পরপরই চার ঠিকাদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চসিকের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন বাদি হয়ে এ মামলা করেন। অন্যদিকে ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চসিক। চসিকের রাজস্ব কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজকে প্রধান ও আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগ ও আইন কর্মকর্তা মনীষা মহাজনকে সহকারী করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি চসিকের প্রধান নির্বাহী শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। গতকাল সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন চসিকের রাজস্ব কর্মকর্তা ও তদন্ত কমিটির প্রধান (আহ্বায়ক) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ।
তদন্ত কমিটির বিষয়ে সৈয়দ শামসুল তাবরীজ সুপ্রভাতকে বলেন, ‘আজ (সোমবার) দুপুরের লাঞ্চের পর তদন্ত কমিটি গঠনের চিঠিটা হাতে পেয়েছি।এতে আমাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামীকাল থেকে আমরা তদন্তের কাজ শুরু করবো। সাত কর্মদিবসের মধ্যে মেয়র বরাবর আমাদেরকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’
মামলার আসামিরা হলেন সাহাবউদ্দিন (৪৫), সঞ্জয় ভৌমিক কংকন (৪৬), মো. ফেরদৌস (৪৮), সুভাষ মজুমদার (৪৬), হাবিব উল্লাহ খান (৪৮), নাজিম (৪৬), নাজমুল হাসান ফিরোজ (৫০), ফরহাদ (৫০), ইউসুফ (৫০), আশিষ বাবু (৫০) ও আলমগীর (৪৭)।
অন্যদিকে চসিকের এ ঘটনায় গত রোববার (২৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে মামলার পরপরই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন সঞ্জয় ভৌমিক কংকন (৪৬) সুভাষ মজুমদার (৪৬), নাজমুল হাসান ফিরোজ (৫০) ও মাহমুদ উল্লাহ (৪৮)।
ঘটনা সম্পর্কে মামলার বাদি কামাল উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভাঙচুরের ঘটনা সম্পর্কে চসিকের সচিব, উপসচিবরা ভালো বলতে পারবেন। আপনারা উনাদের সাথে কথা বলুন। কারণ অফিসের ভিতরের ঘটনাগুলো তারা ভালোভাবে দেখেছে।’
খুলশি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা জানান, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রকল্প পরিচালকের ওপর হামলার ঘটনায় রোববারে রাতে মামলা হয়েছে। মামলার পরপরই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে তিনজন এজহারনামীয় আসামি এবং অন্যজন অজ্ঞাত। তাদেরকে আজ (সোমবার) আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
হামলার কারণ ও হামলাকারীদের সাথে শত্রুতা ছিলো কিনা এমন প্রশ্নে প্রকল্প পরিচালক গোলাম ইয়াজদানী সুপ্রভাতকে বলেন, ‘তারা আমার থেকে প্রকল্পের আগাম কাজ চেয়েছিলেন। আমি বলেছিলাম আইনি নিয়ম যেভাবে সেভাবের মধ্যে যেতে হবে। আমার সাথে তাদের (হামলাকারীদের) সাথে কোন পরিচয় ছিলো না। তাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে চিনিও না। তারা হঠাৎ করে আমার রুমে ঢুকে হামলা শুরু করলেন। আমার মুখে, বুকে ও পিঠে আঘাত করেছেন। এখন আমি চিকিৎসাধীন আছি।’
এ প্রসঙ্গে মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আড়াই হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ইতোমধ্যে ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। কাজ কারা পাচ্ছেন তা চূড়ান্ত হয়ে এখনও আমার দপ্তরে আসেনি। ঠিকাদারদের কোনও অভিযোগ থাকলে কর্মকর্তাদের জানাতে পারতেন। তারা ওই কর্মকর্তার সঙ্গে যা ঘটিয়েছেন তা উচিত হয়নি।’
উল্লেখ্য, গত রোববার নগর ভবনে নিজ কক্ষে ঠিকাদারদের হাতে হামলার শিকার হন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন একটি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. গোলাম ইয়াজদানী।’