নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার ও টেকনাফ প্রতিনিধি »
কক্সবাজারের টেকনাফ ও রামু উপজেলায় পৃথক ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের আলীখালি এলাকার লবণ মাঠে প্রতিপক্ষের গুলিতে নজির আহমদ (৩৭) নামে একজন লবণচাষি নিহত হয়েছেন। টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হালিম বলেন, নিহত নজির টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আলীখালি এলাকার মৃত অলি হোসেনের ছেলে। পুলিশের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় তৈরি ১টি এক নলা লম্বা বন্দুক ও ১টি লম্বা কিরিচ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত নজির আহমদের বড় ভাই ছৈয়দ আহমদ বলেন, এলাকার কালাচনের স্ত্রী জরিনা খাতুনকে লবণ চাষের জন্য ২ লাখ টাকা দাদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মাঠ থেকে লবণ ওঠানোর পর বাজার দর অনুযায়ী ছৈয়দ আহমদকে দাদনের টাকা পরিশোধ না করে অন্যত্রে বিক্রি করেন জরিনা। এ নিয়ে কয়েক দিন আগে স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল হোসেনের কাছে সালিশি বৈঠক হয়েছিল। বৈঠকে উভয় পক্ষের কথা-কাটাকাটি হয়।
ছৈয়দ আহমদ আরও বলেন, এরপর বুধবার রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বাড়ির পাশে থাকা মুরগি খামারে দরজা বন্ধ করার পাশাপাশি ও নিজেদের লবণের মাঠের কাছ গিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন নজির আহমদ, নুর মোহাম্মদ, ছৈয়দ আহমদ ও ভাগনে নুর কবির। এ সময় একই এলাকায় কালা চানের ছেলে মোহাম্মদ রেজওয়ান, তাঁর ভাই ছৈয়দ আলমসহ কয়েকজন হঠাৎ করে অস্ত্র ও লম্বা কিরিচ নিয়ে নজিরকে ঘিরে ধরে গুলি করতে থাকেন।
ছৈয়দ আহমদ আরও বলেন, গুলি করার পর তার ভাই নজির আহমদ খামারের পাশে থাকা পুকুরে পড়ে যান। পাশে থাকা অপর ভাই ও ভাগনের চিৎকার ও গুলির শব্দে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে বাকিরা বেচে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ ও অস্ত্র উদ্ধার করে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হালিম জানান, বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়ন আলীখালি এলাকায় একজন লবণচাষিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে হামলাকারীদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালায়। ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, রামুতে দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের পৃথক এলাকা থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সকালে দৈনন্দিন কাজে বের হয়ে লোকজন জমিতে যাওয়ার পথে কাউয়ারখোপ উখিয়ারঘোনা লামারপাড়া ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আধারমানিকের সামনে হাবিব উল্লাহ (২৫) নামে এক যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পায়। তিনি ওই এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে। স্থানীয়দের ধারণা, তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
অন্যদিকে, একই দিন সকাল ১০টার দিকে ওই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের লট উখিয়ারঘোনা এলাকার হাফেজ আহমদের ছেলে আব্দুল করিম (৩২) পারিবারিক কলহের জের ধরে আত্মহত্যা করেন বলে জানা গেছে। তাকে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
রামু থানার ওসি আনোয়ারুল হোসাইন জানান, মরদেহ দুটি উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তদন্ত চলমান। ক্লু উদঘাটন করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।