সুপ্রভাত বিনোদন ডেস্ক »
পরীমণির সঙ্গে এই দফায় মিডিয়ার তেমন কেউ আর থাকলো না। যেমনটা ছিল জুন মাসের বোট ক্লাবের ঘটনায়। বিশেষ করে এবারের (৪ আগস্ট) ফেসবুক লাইভ ও গ্রেফতারের সময়টুকুতে বারবার আহ্বান করেও পরীমণি কাছের কাউকে পাশে পাননি। অবশেষে অনেকটা একাই নিজ ঘরের বন্ধ কপাট খুলে দিতে বাধ্য হন র্যাব সদস্যদের। মাদকের অভিযোগে হন আটক। নেওয়া হয় রিমান্ডেও।
এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনার বিপরীতে সোশ্যাল মিডিয়ায় বইছে ঝড়। বিশেষ করে বেশিরভাগ মিডিয়াকর্মীর অভিযোগ, পরীমণির এমন দুর্দিনে তার সবচেয়ে নিকটজন হিসেবে স্বীকৃত নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী কোথায় হারালেন! যিনি জুন মাসের বোট ক্লাব কাণ্ডে পরীর মাথায় ছাতা হয়ে ছিলেন সারাক্ষণ। পরী যাকে সম্বোধন করতেন ‘মম’ বলে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) বাংলা ট্রিবিউন কথা বলে ‘বিশ্বসুন্দরী’-খ্যাত নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীর সঙ্গে। প্রশ্ন করা হয়, কেন তিনি ছিলেন না পরীর সঙ্গে। কিংবা সোশ্যাল হ্যান্ডেলেও কেন পরীর পক্ষে কোনও প্রতিক্রিয়া নেই? জবাবে এই নির্মাতা বলেন, ‘পরীমণির সঙ্গে আমার পবিত্র সম্পর্ক। গতবার তার ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে ছুটে গেছি। যে কারও বিপদেই আমি ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করি। আমার সিনেমার নায়িকা হিসেবে সেটা আমার কর্তব্যও ছিল।’
তাহলে এবার? এবারও তো তিনি ফেসবুক লাইভ করে কাছের মানুষদের ডেকেছেন বারবার। কেউ তো যায়নি। জবাবে চয়নিকা চৌধুরী বলেন, ‘প্রথমত আমি তখন ফেসবুক বন্ধ করে ল্যাপটপে নাটক দেখছিলাম। এরপর সুবর্ণা আপু ফোন করার পর জানতে পারি এ ঘটনা। তখন সন্ধ্যা ৬টার বেশি বাজে। সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুকে ঢুকে দেখলাম। কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। এরমধ্যে লাইভও বন্ধ হয়ে গেছে। র্যাব সদস্যরা ঢুকেছে ওর বাসায়। তখন আমি ছুটে যেতে পারতাম, কিন্তু ঢুকতে তো পারতাম না। এখানে আমার আসলে কিছু করার ছিল না।’
এদিকে বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) রাত থেকে চয়নিকা চৌধুরীর ফেসবুক প্রোফাইল ডিঅ্যাক্টিভ পাওয়া গেছে। যদিও তিনি এদিন প্রথম প্রহরে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছিলেন, ‘মানুষ যত কথাই বলুক আমি ফেসবুক ডিঅ্যাক্টিভ করবো না। কারণ, আমি একজন পরিচ্ছন্ন মানুষ। কাউকে ছোট করে কেউ বড় হয় না। আর সবার দিনও সমান যায় না। আমি এগুলো বিশ্বাস করি।’
শুধু চয়নিকা চৌধুরীই নন, পরীমণির পক্ষে এবারও নেই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিসহ অন্য সংগঠনগুলো। শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান জানান, দুই একদিনের মধ্যে পরীর বিষয়ে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অন্যদিকে চলচ্চিত্র পরিচালক নেতা মুশফিকুর রহমান গুলজার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পরীমণির সঙ্গে থাকার সুযোগ নেই এখন। কারণ, বাস্তবতা হলো সে নিজেও কখনও আমাদের সঙ্গে ছিল না। আমরা অনেক চেষ্টা করেও সঙ্গে রাখতে পারিনি।’
তবে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে একটি বড় অংশ জোর দাবি জানাচ্ছে, পরীমণিদের পেছনে থাকা ‘সুগার ড্যাডি ও মম’দের প্রকাশ্যে আনার বিষয়ে।
বুধবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় বনানীর বাসা থেকে ঢাকাই সিনেমার অন্যতম নায়িকা পরীমণিকে আটক করা হয়। রাত আটটার পরে তাকে বাসা থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় পরীর সঙ্গে আরও দুজনকে আটক করা হয়েছে।
পরীমণির বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) এক প্রেসব্রিফিংয়ে র্যাব জানায়, পরীমণির বাসায় একটা মিনি বার ছিল। তার বাসায় নিয়মিত পার্টি হতো। সেই পার্টিতে মদসহ সব ধরনের মাদক সাপ্লাই দিতের প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ। রাজের নেতৃত্বে একটা সিন্ডিকেট ছিল, যাদের কাজই হলো উঠতি বয়সী তরুণীদের দিয়ে নানারকম অপকর্ম করানো।