জুয়েল আশরাফ »
নীরু ঘুরে-ফিরে একটাই স্বপ্ন দেখে- পুরোনো আমলের ভাঙা বাড়ি। বাড়ির সামনে লোহার গেট। গেটের বাইরে সে দাঁড়িয়ে আছে ভয় ও আতঙ্কের সঙ্গে। গেটের ভেতর বিশাল অজগর সাপ। সাপটির সামনে কুড়িবছরের একটি মেয়ে। মেয়েটি চিৎকার করে কাঁদছে। নীরু চেঁচিয়ে বলছে- তুমি দৌড়ে গেটের বাইরে চলে আসো, সাপটি তোমার ক্ষতি করতে পারবে না। বলার পরও মেয়েটি তার দিকে এমন ভঙ্গিতে তাকাল- ঘরের ভেতর অচেনা মানুষ দেখে লোকেরা যেভাবে তাকায়। মানুষ যেই হোক, যদি কেউ বাঁচবার সঠিক রাস্তা দেখিয়ে দেয় তাহলে তার কথাকে অনুসরণ করা চাই। কে পরিচিত, কে অপরিচিত এখানে এসব ভাবনা গৌণ। সে যতবার মেয়েটিকে গেটের বাইরে আসতে বলছে ততবারই মেয়েটি তার দিকে অচেনা ভঙ্গিতে তাকাচ্ছে। সাপটা মেয়েটির দিকে ছুটে আসছে …।
স্বপ্নের এই জায়গায় নীরু জেগে ওঠে। বুক ধড়ফড় করতে থাকে। গলার কাছটায় ঘামে ভিজে যায়। গায়ের জামাও ভিজে ওঠে ঘামে। টর্চ জ্বালায়। ঝিম মেরে বসে থাকে কিছুক্ষণ। নিজেকে ধাতস্থ করতে অনেক সময় লাগে। স্বপ্নের বিষয়বস্তু ভেবে বিচলিত হয়। স্বপ্নে যদি কেউ অজগর সাপ দেখে তাহলে নিশ্চিত বিপদ। বিকেল থেকে খারাপ সব খবর শুনেছে নীরু। গোয়ালনগরের গামছা ব্যবসায়ীকে ধরে খুব মারপিট করেছে মিলিটারি। কালভার্টের ওপর নিয়ে চিৎ করে ফেলে গাছের ভাঙা ডাল মুখের ভেতর ঢুকিয়ে দিয়েছে। নাকমুখ থেকে রক্ত বেরিয়ে যেতে থাকে। মৃত্যু নিশ্চিত মনে করে ফেলে চলে যায় পাকবাহিনী।
সময় দেখল নীরু, রাত সাড়ে তিনটা। হঠাৎ তার খুব খিদে পেয়েছে। ঘরে সব সময় বিস্কুট রাখা থাকে। কিন্তু আজ চারদিন হয় বিস্কুটের টিন খালি। খাবার ঘরটা বাবার ঘরের সঙ্গে লাগানো। এত রাতে খাবার ঘরে যেতে ইচ্ছে হয় না। খুটখাট শব্দে বাবা-মায়ের দুজনেরই ঘুম ভেঙে যাবে। বিস্কুটের খালি টিন নিয়েই বসল সে। টিনে বিস্কুটের কণা পড়েছিল, তর্জনীর মাথায় সেই কণাগুলি মাখিয়ে সে জিবে ছোঁয়াল। স্বপ্ন সব সময় সত্যি হয় না। কিন্তু তিনদিন ধরে দেখা একই স্বপ্ন তাকে বিচলিত করছে।
হাসানের সঙ্গে কথা বলা দরকার। অবশ্য এত রাতে তার বাড়িতে যাওয়া ঠিক হবে না। প্রতি রাতেই মুক্তিবাহিনী তার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এখন হাসানের কাছে সবচেয়ে বিরক্তিকর ব্যাপার হলো বাড়িতে বাইরের লোকের আনাগোনা। কিন্তু হাসানের সঙ্গে কথা বলা জরুরি ।
হাসানের নিষেধ থাকা সত্ত্বেও পাশের বাড়ি গিয়ে নীরু দুবার দরজায় টোকা দিল। ভেতরে অন্ধকার। দরজা খুলল না। নীরু এখন কী করবে? রাতের শেষ অংশটুকু বসেই থাকবে। শুয়ে পড়লে এখন আর ঘুম হবে না। ফজরের ওয়াক্ত হতে অনেক দেরি। এখন একটা কিছু ব্যস্ততার সঙ্গ নিলে ভালো হতো।
কোনো মানুষ ঘুমিয়ে পড়লে শয়তান তার ঘাড়ের পেছন দিকে তিনটা গিরা লাগিয়ে দেয়, প্রতিটি গিরা লাগানোর সময় সে বলে থাকে ‘রাত্রি অনেক লম্বা; এখনো প্রচুর সময় বাকি আছে, তুমি ঘুমিয়ে থাকো।’ জাগ্রত হওয়ার পর যদি সে আল্লাহকে স্মরণ করে, তবে তার একটা গিরা খুলে যায়। তারপর যদি ওজু করে তবে আরেকটি গিরা খুলে যায়। তারপর যদি নামাজ পড়ে তবে তৃতীয় গিরাটিও খুলে যায়। এভাবে সে স্বচ্ছ-পবিত্র মন নিয়ে সকাল করে। না হলে তার সকাল হয় ক্লেদ ও আলস্যের ভেতর দিয়ে।
নীরুর খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে সকালে। গ্রামে মিলিটারি আসার খবরটা দিতে হবে। শয়তানের চাটনি ব্যবহার করে এখন ঘুমিয়ে পড়লে কাউকে বাঁচাতে পারবে না। শয়তানের নিকট নস্য, চাটনি এবং এক প্রকার ছিটিয়ে দেওয়ার মতো পদার্থ আছে। যদি কেউ শয়তানের নস্য ব্যবহার করে সে দুশ্চরিত্র হয়ে যায়, যে তার চাটনি আস্বাদন করে তার জবানে অকথ্য ভাষার প্রয়োগ তীব্ররূপ ধারণ করে। মিলিটারিদের চরিত্রের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ হলো মুখের অকথ্য ভাষা। নীরুর ধারণা, পাকসেনারা শয়তানের নস্য ব্যবহার করেছে। আর তাই চরিত্রে নোংরামি স্বভাব এসেছে। শুধু নোংরামি বললে কম বলা হবে, মিলিটারির চরিত্রের নোংরামির ব্যাখ্যা করতে হলে অভিধানের সাহায্য নিতে হবে। এখন এই মধ্যরাতে এসব চিন্তা করে সময়টা সে বরবাদ করতে চাচ্ছে না।
তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে নেওয়ার উত্তম সময় এখন। দুরাকাত নামাজ পড়ে নিলে ভালো হয়। তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত মনে করার চেষ্টা করে নীরু। মনে পড়ছে না। শুধু স্বামী-স্ত্রীর ব্যাপারটা মনে আসছে- আল্লাহতাআলা রহম করেন সেই মানুষের ওপর, যে রাতে ঘুম থেকে জেগে ওঠে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে এবং তার স্ত্রীকেও জাগায় আর যদি স্ত্রী উঠতে অস্বীকার করে তবে তার মুখে পানির ছিটা দেয়। আল্লাহতাআলা সেই স্ত্রীর ওপর রহম করেন, যে রাতে ঘুম থেকে ওঠে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে এবং নিজের স্বামীকেও জাগায় আর স্বামী উঠতে অস্বীকার করলে তার মুখে পানির ছিটা দেয়।
নীরু ভাবে, হাসান আর সে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কের হলে ভালো হতো। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই বিয়েটা হয়ে যেত যদি! হাসান পাশে শিশুর মতো শুয়ে থাকতো। মাঝরাতে নিজের আলস্য ভেঙে তাহাজ্জুদে উঠত না। নীরু হাসানকেও ওঠানোর চেষ্টা করতো। কয়েকবার ডাকাডাকিতে উঠতে চাইত না। তার ঘুম গভীর যা! গভীরে ঘুমন্ত মানুষটির ঘুম ভাঙাতে নীরুর একটু মায়াই লাগতো। তবু ডাকতো, উঠতে না চাইলে মুখে পানির ছিটা দিত। আর বলতো, হে আমার প্রিয়তম স্বামী উঠুন, তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া জরুরি করে নিন। এই নামাজে গোনাহ মাফ হয়, যাবতীয় দৈহিক রোগ নিরাময় হয়, পাপাচার থেকে আত্মরক্ষার উপায়ও হয়।
দুরাকাত নামাজ পড়ে আবার বিছানায় এসে শুয়ে পড়ল নীরু। শুতে শুতেই গভীর ঘুম এসে গেল। ঘুম ভাঙতেই সে টের পেল- বাড়ি থেকে কেউ তাকে তুলে এনেছে। বন্দি করে রেখেছে অচেনা কোনো ঘরে। ঘরের ভেতরটা অন্ধকার। দরজা-জানালা কিছু না থাকায় রাতদিন বোঝার উপায় নেই। এমন অন্ধকার নিজেই নিজেকে দেখতে পাচ্ছে না। মাথার কাছটা ভারী ঠেকছে। ব্যথা অনুভূতি হচ্ছে। মনে হচ্ছে মাথায় কেউ আঘাত করেছে। সে হাত দিয়ে আঘাতের জায়গাটা স্পর্শ করবে সেই উপায় নেই। কারণ তার দুটি হাতই পেছন থেকে বাঁধা। একটা শক্ত দড়ির সঙ্গে দুটি হাত পেছন থেকে বেঁধে মেঝেতে তাকে কেউ ফেলে রেখেছে। সে প্রাণপণ চেষ্টা করেও দড়ির বাঁধন আলগা করতে পারল না। শরীর দুর্বল ঠেকছে, ওঠে বসার শক্তি নেই। মনে হচ্ছে অনেকদিন না খেয়ে আছে। চিৎকার করে মাকে ডাকবে কিন্তু ডাকতে পারল না। মুখ দিয়ে কোনো আওয়াজই বের হচ্ছে না। একটু নড়েচড়ে মেঝেতে গড়াগড়ি দিয়ে পাশ ফিরল। ঠিক তখনই ধক করে গন্ধটা মগজের ভেতর এসে লাগল। কোনো কিছুর মরাপঁচা গন্ধ! জীবনেও এরকম উৎকট পচা দুর্গন্ধ নাকে পায়নি। মানুষ মরে পচলে মনে হয় এরকমই গন্ধ ছড়ায়! সঙ্গে সঙ্গেই নীরুর বমি হলো। কিন্তু বমি সে করতে পারল না। খালি পেটে বমি কষ্ট।
হঠাৎ একটা সরু আলো এসে পড়ল ঘরে। আলোটা বড় হতে হতে ঘরে ছড়াচ্ছে। সেই আলোতে একজন মানুষের ছায়া এসে পড়ল। মানুষটা দরজা খুলে দাঁড়িয়ে আছে। আবছা অন্ধকারে মানুষটার মুখ দেখতে পেল না নীরু। কিন্তু ঘরের ভেতর সরু আলোতে সে দেখতে পেল একটা অর্ধগলিত মেয়ের লাশের পাশে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সে পড়ে আছে। এতক্ষণ এরই শরীরের পচা গন্ধে পেটের নাড়িভুঁড়ি বমি হয়ে মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে।
নীরু চিৎকার করে কেঁদে বলল, কে আছ আমাকে মেরে ফেলো। আমি এই দুর্গন্ধ সহ্য করতে পারছি না।
দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটি নীরুর কাছে এগিয়ে এলো। সরু আলোতে মানুষটার মুখ দেখার সঙ্গে সঙ্গে নীরু বিস্মিত হয়ে বলল, হাসান!
হাসান একটা থাপ্পড় দিয়ে নীরুকে চুপ করিয়ে দিল। বলল, এখনো বেঁচে আছিস কেন? তোর তো এতদিন বেঁচে থাকার কথা না। তাড়াতাড়ি মর। আর ঝামেলা বাড়াস না। তুই বেঁচে থাকলে আমরা মুক্তিবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে যাব। আমি মাটি খুঁড়ে রেখেছি, তোদের দুজনের লাশ আজ রাতেই পুঁতে ফেলব।
নীরু কান্না জড়ানো গলায় বলল, আমাকে এভাবে মারতে হচ্ছে কেন তোমার? এই মেয়েটি কে?
তোর প্রিয় বান্ধবী মিতু। তোর বান্ধবীকে দেখার পর থেকে পাকবাহিনীর মাথার ঠিক ছিল না। তিন পাকসেনা মিলে ধর্ষণ করেছে। তেইশ দিন আটকে রাখার পর মেয়েটি মারা যায়। বেঁচে থেকেই কী করবে? ও বেঁচে থাকলে আমরা ফেঁসে যেতাম।
এখানে আমি কী করে এলাম হাসান?
হাসান সে কথার জবাব দিল না। হাতের কাছে শক্ত ধাতব একটা কিছু ছিল, সেটা দিয়ে মাথায় সজোরে আঘাত করার সঙ্গে সঙ্গেই নীরুর ঘুম ভেঙে গেল।
ফজরের আজান হচ্ছে। নীরু ওঠে ওজু করল। নামাজ পড়ল। সুরা ইয়াসিন পড়ল। সূর্য উঠল। সকাল হয়েছে। আর রহমান পড়া শেষ করে এশরাকের নামাজ পড়ল। মা এসে একবার ডেকে গেলেন। রান্নাঘরের চাল ফুটো হয়ে বৃষ্টির পানিতে ভেসে যাচ্ছে। মা কিছুক্ষণ একা একাই ঘ্যানর ঘ্যানর করে যাচ্ছেন। নীরু ভীষণ অবাক, দেশে ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে। যুবতী মেয়েদের সম্ভ্রম লুটে নিচ্ছে পাকবাহিনী আর এখানকার কিছু দালাল। এসবে কোনো ভাবনা নেই। সকাল সকাল মা আছেন টিনের চালের ফুটো নিয়ে।
নীরুর এখন কাউকে দরকার। কারোর সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে। ভোর রাতে কী কী সব স্বপ্নে দেখল। মনটা তখন থেকেই উদাস। কে একজন ঘরে ঢুকল। অচেনা মুখের একটি মেয়ে দেখে নীরু অবাক। জিজ্ঞেস করল, আপনি কে?
মেয়েটি বিস্ময় পাওয়া গলায় বলল, ওমা! তুমি দেখছি কিছুই জানো না! তুমি সতেরো দিন হলো হাসপাতালে। তুমি অন্তঃস্বত্ত্বা।
নীরু আরও অবাক। তার পেটে বাচ্চা আছে ভাবেনি সে। অবশ্য হাসানের সঙ্গে কোনোদিন শোয়নি সে। কারোর সঙ্গে তার বিয়েও হয়নি! বাচ্চাটি তাহলে কার? ভেতরটা কেমন অশান্তি লাগছে। মানসিক আরামের জন্য সে বিভিন্ন আমল করে। রোজ সুরা ইয়াসিন পড়ে, আজ অতিরিক্ত আর রহমান পড়েছে। মনের অশান্তভাব দূর হলো না। এখন সে মনে মনে বলছে- হাসবিআল্লাহু লা-ইলাহা ইল্লাহু অআলাইহি তাওআক্কালতু অহুআ রব্বুল আরশিল আজীম। এই দোয়া সাতবার বললে আল্লাহতাআলা দুনিয়া ও আখিরাতের সমস্ত চিন্তা থেকে হেফাজত করবেন।
আসলে নীরু এখন অপ্রকৃতিস্থ। হাসপাতালের সবাই জানে, গ্রামের অনেকেই জানে। শুধু নীরুই জানে না। যুদ্ধের দেড় মাসেই পাকসেনারা তার বাবা-মাকে গুলি করে হত্যা করে তাকে তুলে নিয়ে যায়। তাকে বাঁচাতে তার চাচাত ভাই হাসানকেও জীবন দিতে হয়। যাওয়ার পথে গাড়ির ভেতরে তাকে ধর্ষণ করা হয়। নির্মম, নৃশংস নির্যাতনের পর এক পর্যায়ে তার বোধশক্তি লোপ পায়।
জ্ঞান ফেরার পর থেকেই দেখতে পায় পাকসেনাদের ধর্ষণ থেমে থাকেনি। বিভিন্ন মেয়েদের বুকের স্তন ও গালের মাংস কামড়াতে কামড়াতে রক্তাক্ত করে দিয়েছে। মেয়েদের গাল, পেট, ঘাড়, বুক, পিঠ ও কোমর তাদের কামড়ে রক্তাক্ত হয়ে গেছে। কোনো কোনো মেয়ের সামনের দাঁত নেই, ঠোঁটের দুদিকের মাংস কামড়ে ছিড়ে নেওয়া হয়েছে, প্রতিটি মেয়ের হাতের আঙুল ভেঙে থেঁতলে গেছে লাঠি আর রডের পিটুনিতে। কোনো অবস্থাতেই তাদের হাত ও পায়ের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়নি, অনেকেই মারা গেছে ঝুলন্ত অবস্থায়।
মেয়েদের ধরে নিয়ে এসে গাড়ি থেকে নামিয়ে সাথে সাথেই শুরু হয় ধর্ষণ, দেহের পোশাক খুলে ফেলে সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে ধর্ষণ করা হয়। সারাদিন ধর্ষণের পরে মেয়েদের উলঙ্গ অবস্থায় রডের সাথে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখ হত, এবং রাতের বেলা আবারও নির্যাতন। প্রতিবাদ করা মাত্রই হত্যা করা হয়। চিত করে শুইয়ে রড, লাঠি, রাইফেলের নল, বেয়নেট ঢুকিয়ে দেয়া হয় যোনিপথে, কেটে নেয়া হত স্তন। অবিরাম ধর্ষণের ফলে কেউ অজ্ঞান হয়ে গেলেও থামে না ধর্ষণ। এসব দেখে দেখে নীরু নির্বাক।
এরপরও কিছূ মেয়ে সিলিংয়ের সঙ্গে মাথার চুল পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। এরপর কেউ যাতে আত্মহত্যা করতে না পারে সেজন্য মাথার চুল কামিয়ে দেয়া হয়। কেউ পানি চাইলে ডাবের খোলে পেশাব করে খেতে দিয়েছে।