নানা আয়োজনে চট্টগ্রামে বিজয় দিবস উদযাপন

সুপ্রভাত ডেস্ক »
একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নানা আনুষ্ঠানিকতায় বিজয় দিবস উদযাপন হয়েছে চট্টগ্রামে।গত শুক্রবার উষালগ্নে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে বন্দরনগরীতে বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। আর মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে স্থাপিত বিকল্প শহীদ মিনারে নগর পুলিশের একটি দলের সশস্ত্র অভিবাদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব।
ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের নেতৃত্বে দলের নেতারা। প্রথমে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা এসময় তার সঙ্গে ছিলেন। খবর বিডিনিউজের।
চট্টগ্রামে নতুন শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ প্রতিশ্রুত সময়ে শেষ না হওয়ায় এবারেও বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা পালনে বেছে নিতে হয়েছে বিকল্প শহীদ মিনার চত্বরকেই।
এরপর চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান শ্রদ্ধা নিবেদন করেন; সঙ্গে ছিলেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীরাও শহীদ মিনারে আসেন শ্রদ্ধা জানাতে।
ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের নেতৃত্বে দলের নেতারা।
এছাড়া শ্রমিক লীগ, ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ, জনতা ব্যাংক এমপ্লয়িজসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানায়।
সকাল থেকেই শিশু-কিশোর থেকে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে শহীদ মিনার ও এর আশপাশের এলাকা।
নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে সকাল ৮টায় আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেখানে পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, বিএনসিসি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ও কারারক্ষীরা বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজে অংশ নেন।
বিজয় দিবসের র‌্যালিটি নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে লালদিঘী ময়দানে গিয়ে আবার স্টেডিয়ামে ফিরে শেষ হয় নগরীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, সামাজিক প্রতিষ্ঠান, স্কাউট, রোভার স্কাউট, গার্লস গাইড ও শিশু-কিশোর সংগঠনের শিক্ষার্থী ও সদস্যরাও অংশ নেন কুচকাওয়াজে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১১টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এছাড়া বেলা ১১টার পর বিজয় দিবস শোভাযাত্রা বের হয় নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম থেকে। নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে লালদিঘী ময়দানে গিয়ে আবার স্টেডিয়ামে ফিরে শেষ হয় সেই শোভাযাত্রা।
আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস, কারারক্ষীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের কর্মীরা শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।
আউটার স্টেডিয়াম ও লালদিঘী ময়দানসহ বিভিন্ন জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যাবস্থা করা হয়েছে বিজয় দিবস উপলক্ষে।
জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উপসানালয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।
হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, শিশু পরিবার ও ভবঘুরে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
এছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, আলোচনা, সিম্পোজিয়াম এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও থাকছে বিজয় দিবসে। বন্দর নগরীর শিশু পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানাও জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত থাকছে সবার জন্যে।