নিজস্ব প্রতিনিধি, মহালছড়ি »
খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়িতে মাধ্যমিক ও নি¤œ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে সারা দেশের ন্যায় মহালছড়িতেও মাধ্যমিক ও নি¤œমাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে।
এই অবস্থায় বেকায়দায় পড়েছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা। কারন এই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয় ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে উত্তোলিত বেতন থেকে। করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের সিদ্ধান্তানুযায়ী স্কুল বন্ধের কারণে গত দেড় বছর যাবত বেশির ভাগ স্কুলেই বন্ধ রয়েছে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে বেতন উত্তোলন কার্যক্রম। স্কুলে এস্যায়েনমেন্ট চালুর ফলে কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্বল্প পরমাণে বেতনউত্তোলনকরতেপারলেও, করোনাসংক্রমণবাড়ারফলেতাআবারবন্ধহয়েযায়। যার ফলে শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতনও বন্ধ হয়ে যায়।
মহালছড়িমাধ্যমিকশিক্ষাঅফিস সূত্রে জানাযায়, মহালছড়িতে পাঠ দানের অনুমতিপ্রাপ্ত নন-এমপিও মাধ্যমিক, নি¤œমাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদ্রাসা পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮ টি। স্কুল গুলো হলো বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আবদুর রউফ উচ্চ বিদ্যালয়, চাইল্ড কেয়ার মডেল স্কুল, দূর্পয্যানাল নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শহীদ ক্যাপ্টেন আফতাবুল কাদের উচ্চ বিদ্যালয়, এপিবিএন আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, মহালছড়ি টেকনিক্যাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ ও মহালছড়ি ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা।
বীর শ্রেষ্ঠ মুন্সি আবদুররউফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউনুস মজুমদার বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দেড় বছর ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে কোন বেতন উত্তোলন করতে না পারায় ১২ জন শিক্ষক-কর্মচারী সবার বেতন বন্ধ রয়েছে।
সরকারি-বেসরকারি কোনো সহযোগিতা পেয়েছেন কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন গত বছর নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুদান জন প্রতি ৫ হাজার টাকা করে পেয়েছেন।
এছাড়া গত বছর খাগড়াছড়ি জেলাপ্রশাসকের পক্ষ থেকে প্রতি ১ হাজার টাকা করে পেয়েছেন। দ্বিতীয়বারের মত প্রধানমন্ত্রীর অনুদান পেয়েছেন কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, তাদের স্কুলে ১১ জন শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে মাত্র ৩ জনপদের মাধ্যমে টাকা পেয়েছে বাকিরা এখনও পাননি, কেন পাননি তাও তিনি জানেন না।
মহালছড়ি এপিবিএন স্কুল এন্ড কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল মারুফ উজ জামান ও দূর্পয্যানালা নি¤œমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উদয়ন চাকমা বর্তমান পরিস্থিতি স্বীকার করে বলেন, করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাতে শিক্ষক ও কর্মচারীরা দুর্বিসহ জীবনযাপন করছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা ১ম বারে সব শিক্ষকরা পেলেও দ্বিতীয়বারে প্রধানমন্ত্রীর যে প্রনোদনা দেওয়ার কথা তাদের প্রতিষ্ঠানেও দুই তিনজন ছাড়া বাকিরা কেউ এখনও প্রণোদনার টাকা পাননি।
প্রণোদণার বিষয়ে মহালছড়ি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসার (অ:দা) সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মহালছড়ির নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের সব তথ্য পাঠানো হয়েছে।
পর্যায়ক্রমে সবাই প্রণোদনার টাকা পাবে। তবে যে সকল প্রতিষ্ঠানে জনবল কাঠামোর বাইরে শিক্ষক-কর্মচারী আছেন তারা প্রণোদনার আওতায় আসবেন না।
এ বিষয়ে মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোবাইদা আক্তার বলেন, নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি নির্দেশনানুুযায়ী তালিকাভুক্ত সবাইকে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে প্রনোদনা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতেসরকারীভাবেআরোবরাদ্দ আসলে আবারো সবাই সহযোগিতা পাবে।