
নিজস্ব প্রতিবেদক »
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ঐতিহ্যবাহী দ্বিতল সড়কের ওপর র্যাম্প নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে নতুন নকশায় রেলওয়ের জায়গায় র্যাম্প নামানোর পরিকল্পনা করছে।
চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল নির্মান কাজ একেবারেই শেষ পর্যায়ে। তবে বাকি রয়ে গেছে বিভিন্ন স্থানের র্যাম্প নির্মাণের কাজ। র্যাম্প হচ্ছে এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি ওঠা ও নামার পথ। ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ১৫টি র্যাম্প থাকবে।
১৫টি র্যাম্পের মধ্যে দুটি রয়েছে নগরের টাইগারপাসে। এর একটি হচ্ছে আমবাগানমুখি রাস্তার প্রান্তে বা নেভি কনভেনশন সেন্টারের পাশে। এই র্যাম্প দিয়ে পতেঙ্গার দিক থেকে আসা গাড়ি নামতে পারবে। যার নির্মাণ কাজ প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন উপলক্ষে অনেক আগেই শেষ করা হয়েছে। আরেকটি র্যাম্প পলোগ্রাউন্ড থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী সড়কে গাড়ি ওঠার জন্য নির্মাণের কথা ছিল।
চট্টগ্রাম নগরীর অনন্য সুন্দর রাস্তা হচ্ছে মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী সড়ক। ঐতিহ্যবাহী দ্বিতল এই সড়কটি সবুজে ঘেরা। এই সড়কের একটি অংশ গেছে পাহাড় ঘেঁষে। আরেকটি অংশ নিচে। মধ্যবর্তী পাহাড়ি ঢালে রয়েছে ছোট-বড় শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প বা গাড়ি ওঠার পথ নির্মাণ করতে গাছগুলো কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সিডিএ। এ জন্য বন বিভাগের অনুমোদনও নেয় তারা। এই সড়কের ছোট-বড় ৪৬টি গাছ কাটা হবে—গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রকাশিত হলে নগরবাসীর মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।
১ এপ্রিল থেকে নাগরিক সমাজ ও পরিবেশবাদী কর্মীদের আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনের মুখে ২ এপ্রিল আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন সিডিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ওই দিন নকশা সংশোধনের আশ্বাস দেন সিডিএর চেয়ারম্যান।
টাইগারপাসে পরিবেশের ক্ষতি করে কোনো ধরনের স্থাপনা চান না নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও পরিবেশবাদীরা। তাঁরা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে টাইগারপাসের র্যাম্প বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন। গাছ কেটে ও পরিবেশের ক্ষতি করে র্যাম্প নির্মাণ না করতে সিডিএকে নির্দেশ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
পরিবেশের ক্ষতি না করে কীভাবে র্যাম্প নির্মাণ করা যায়, তা নিয়ে কাজ করছে সিডিএ। নতুন নকশা নিয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আবারও বৈঠকের কথা রয়েছে সিডিএর। সেখানে র্যাম্প নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা হবে।
সিডিএর প্রকৌশল বিভাগ আগের নকশা সংশোধন করে একটি খসড়া নকশা প্রণয়নে কাজ করছে। এই নকশা অনুযায়ী র্যাম্পটি এখন আর দ্বিতল সড়কের ওপর দিয়ে নামানো হবে না। এখন মূল সড়কের বাইরে রেলওয়ের জায়গায় এই র্যাম্প নামানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। র্যাম্পটি এখন নামানো হবে মূল সড়কের পাশের ফুটপাতের বাইরের অংশ দিয়ে। এ জন্য কিছু স্থাপনা ভাঙতে হবে এবং পাঁচ-ছয়টি গাছ কাটা যাবে।