সুপ্রভাত ডেস্ক »
টানা বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় কয়েকদিনের দুর্দশা শেষ না হতেই এখন নতুন ভোগান্তির সামনে চট্টগ্রাম নগরবাসী; কয়েকদিনের পানিবন্দি সড়কে বেরিয়ে আসছে একের পর এক সড়কের ক্ষতচিহ্ন।
সড়কের বিভিন্ন সড়কের অনেক অংশ ভেঙে গেছে। কোনো কোনো সড়কের মাঝে বড় ধরনের গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। কিছু সড়কের বড় অংশের পিচ উঠে গিয়ে কর্দমাক্ত হয়ে পড়েছে। এতে যানবাহন চালাতে গিয়ে চালকরা দুর্ভোগে পড়েছেন।
নগরীতে সড়কের ক্ষত বেরিয়ে আসার পর তা মেরামতে কাজও শুরু হয়েছে। তবে পুরোপুরি মেরামত না হওয়ার আগ পর্যন্ত নগরবাসীর দুভোর্গ শেষ হচ্ছে না।
সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী আশা করছেন, এক মাসের মধ্যে মেরামতের কাজ শেষে সড়ক স্বাভাবিক চলাচলের উপযোগী হবে। খবর বিডিনিউজের। এবারের দুর্যোগে নগরীর ৫০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে জানান তিনি।
শুক্রবার নগরীতে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পরিদর্শনে কালুরঘাট এলাকায় গিয়ে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।
পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত শেষে এক মাসের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে তারা কাজও শুরু করেছেন বলে জানান মেয়র।
সেতুর বিকল্প হিসেবে কালুরঘাটে কর্ণফুলী নগীতে চালু হওয়া দুটি ফেরির মধ্য একটা নষ্ট হওয়ায় সেটি দ্রুত মেরামতে সড়ক ও জনপথ বিভাগকে নির্দেশও দেন তিনি।
এক সপ্তাহ আগে গত ৩ অগাস্ট শুরু হওয়া টানা বর্ষণে প্রায় চার দিন নগরীর বিভিন্ন এলাকা ছিল জলাবদ্ধ। কিছু এলাকায় বাড়িগুলোর নিচতলাও ডুবে যায়। দোকান ও বিপনি কেন্দ্রে ঢোকে পানি। পানিতে ডুবে যাওয়া একটি নালায় পড়ে এক কলেজছাত্রীরও মৃত্যু হয়।
দুর্ভোগময় এ পরিস্থিতিতে সিডিএ’র মেগা প্রকল্পসহ দুটি প্রকল্প, সিটি করপোরেশনের একটি প্রকল্প ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটিসহ মোট চারটি প্রকল্প চলমান থাকার পরও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি নিয়ে নানা মহলে সমালোচনা শুরু হয়।
এসব প্রকল্পের কাজ চলার মধ্যে বৃষ্টিতে নগরী ডুবে যাওয়ায় এজন্য পরস্পরকে দোষ দিচ্ছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি)।
এমন অবস্থায় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ শুক্রবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা প্রকল্পসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে জেলা প্রশাসন আয়োজিত সমন্বয় সভায় সবাইকে সমন্বয় করে কাজ করার আহ্বান জানান।
নগরবাসী এখনও জলাবদ্ধতা নিরসনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমে সরকারের নেওয়া প্রকল্পের সেটির সুফল পাওয়া শুরু করেনি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘১গতবারের বর্ষা এবং এবারের বর্ষায় যে পরিমাণ জলাবদ্ধতা হয়েছে নগরবাসীর মধ্যে কিছুটা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করছে, সেখানে সমন্বয় করার জন্য আমরা ইতিপূর্বেও বেশ কয়েকবার বসেছি। বসার পর কিছুটা সমন্বয় হয়েছে, কিন্তু আরও সমন্বয়ের প্রয়োজন।’
এদিন সকালে কালুরঘাট এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে মেয়র রেজাউল বলেন, ‘পানি নামার সাথে সাথে দ্রুততম সময়ে আমরা নগরীর ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের পরিমাণ নির্ধারণে জরিপ চালিয়ে জেনেছি নগরীতে ৫০ দশমিক ৭০ কিলোমিটার সড়ক, ২ দশমিক ১৯৯ কিলোমিটার নর্দমা, ১ দশমিক ৯৯৩ কিলোমিটার ফুটপাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
‘যা মেরামতে অন্তত ৫৯ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। আশা করছি এক মাসের মধ্যে নগরীর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হবে।’