বাড়ছে দুর্ঘটনার শঙ্কা, আলোর ব্যবস্থা নেই
শুভ্রজিৎ বড়ুয়া
নগরের খোলা ড্রেন ও খালে মানুষ পড়ে যাওয়ার ঘটনা নিত্য-নৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি এসব খাল এলাকায় সড়ক বাতি না থাকায় রাতের বেলায় সেখানে মাদকসেবীদের আড্ডা বসছে এবং চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনাও বাড়ছে।
সম্প্রতি চাক্তাই ও রাজাখালী খাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পথচারীরা খালের পাড় নির্মিত রাস্তা দিয়ে হাঁটছে, চলছে গাড়িও। খালের পাড়ে কোনো ধরনের সীমানা প্রাচীর অথবা রেলিং না থাকায় খালে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও শোনা যায় স্থানীয়দের কাছ থেকে। এছাড়া খালের পাড়ের রাস্তায় কোনো ধরনের আলোর ব্যবস্থা না থাকায় সেখানে মাদকাসক্তদের আড্ডা বসে এবং তারাই এলাকায় চুরি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
সিএন্ডবি কলোনি এলাকার বাসিন্দা মো. শফিক বলেন, ‘এখানে কোনো লাইট না থাকায় সন্ধ্যার পরে পুরো রাস্তা অন্ধকার থাকে। ঠিকাদারেরা যেখানে কাজ করছে শুধু সেখানেই লাইট রয়েছে, বাকি অংশে কোনো বাতি নেই। আশেপাশের এলাকা থেকে মাদকসেবী বখাটের আনাগোনা বাড়ে এলাকায়। এরাই বিভিন্ন সময়ে এলাকায় বিভিন্ন ধরনের চুরি, ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতেও সাধারণ মানুষ ভয় পায়।’
চাক্তাই খালের মাস্টারপুল এলাকার বাসিন্দা শাহারিয়ার খালেদ অভিযোগ করেন, ‘খালগুলো সংস্কার হলেও খালের পাড়ে কোনো নিরাপত্তা বেস্টনি না থাকায় এগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। আট দিন আগেও দিনের বেলায় শেফালী আকতার নামে ৩৫-৪০ বছরের একজন মহিলা খালে পড়ে যান। এতে তার পা ভেঙে যায়। তিনি সম্ভবত এখনও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
চকবাজার ফুলতলা এলাকার বাসিন্দা তপন বণিক বলেন, ‘বর্ষার সময় খাল-রাস্তা দুটোই পানির নিচে চলে যায়। মানুষ বুঝতে পারে না কোথায় রাস্তা আর কোথায় খাল। খালের কাজ যদি ভালোভাবে শেষ হয়, তাহলে হয়তো আগামীতে এসব ভোগান্তি থাকবে না। খালের পড়ে রেলিং ও লাইট থাকলে পথচারীসহ স্থানীয়দের চলাচলে সুবিধা হতো।’
এসব বিষয়ে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ আলী সুপ্রভাতকে বলেন, ‘খালের পাড়ে রেলিংয়ের যে বিষয়টি এসেছে, তা আসলে আমাদের মূল প্রকল্পে ছিলো না। এরপরও যেসব জায়গায় সমস্যা বেশি হচ্ছে, সেটা সার্ভে করে দেখা হবে। ফিল্ডে গিয়ে সার্ভে না করে আমি কিছু বলতে পারবো না। সমস্যা চিহ্নিত হলে কিছু কাজ প্রকল্পের বাইরে হলেও সেটা আমরা অবশ্যই বিবেচনা করবো। প্রয়োজনে কিছু অংশ রেলিং করতে হলে সেটা আমরা করবো।’
আলোর ব্যবস্থা না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আলোর ব্যবস্থা নেই, এটা ঠিক। কিন্তু এই কাজটা আমাদের এখতিয়ার না। আমরা কাজটা সিডিএকে বুঝিয়ে দেওয়ার পর, তারাও হয়তো এগুলোর ব্যবস্থাপনা তাদের কাছে রাখবে না। তখন আলোচনা স্বাপেক্ষে সিডিএ বা সিটি করপোরেশন এ কাজ হয়তো করবে।’
নিরাপত্তা বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘যেসব জায়গায় লাইট নেই, সেগুলো সিটি করপোরেশনের দেখা দরকার। অন্ধকারে পুলিশ টহল টিম কাজ করতেও সমস্যা হয়। এছাড়া অন্ধকারে ঝুঁকিও বাড়ে। তাই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করলে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও যথাযথভাবে জোরদার করা সহজ হবে।’



















































