সুপ্রভাত ডেস্ক »
দেশের প্রতিটি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিকে একটি করে মডেল ইলেকট্রিক ভেহিকল চার্জিং স্টেশন করার নির্দেশ দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। অর্থাৎ সব মিলিয়ে দেশে ছয়টি স্টেশন স্থাপন করা হবে। এরমধ্যে রাজধানীতে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) অধীনে স্টেশনটি হতে যাচ্ছে রাজধানীর আব্দুল গনি রোডের বিদ্যুৎ ভবনে।
বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, দেশে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চললেও দ্রুতগতির ইলেকট্রিক গাড়ি এখনও আনা সম্ভব হয়নি। ব্যক্তিগত উদ্যোগে কেউ কেউ টেসলার মতো ব্র্যান্ডের গাড়ি দেশে আনছেন, তবে সেটা সংখ্যায় হাতে গোনা। এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে দেশে ব্যাটারি চার্জিং স্টেশন নেই। অর্থাৎ অবকাঠামো না থাকায় দেশে ইলেকট্রিক ভেহিকল বা ইভি আসছে না।
জানা যায়, সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) একটি ইভি চার্জিং স্টেশন নীতিমালা স্থাপন করলেও দেশের বেসরকারি খাত এখনও এই বাণিজ্যে এগিয়ে আসেনি। খবর বাংলাট্রিবিউনের।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, মডেল ইলেকট্রিক ভেহিকল চার্জিং স্টেশন স্থাপনের জন্য পিডিবি চট্টগ্রামে সম্ভাব্য জায়গা নির্ধারণ করেছে। এ ছাড়া পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড নারায়ণগঞ্জে পবিস-১ (পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি)-এর মোগরাপাড়া সোনারগাঁয়ে, ডিপিডিসি জায়গা না পাওয়ায় রাজধানীর আব্দুল গনি রোডের বিদ্যুৎ ভবনে, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) যশোরের চাঁচড়ায়, নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) রংপুর ও রাজশাহীতে দুটি ইভি চার্জিং স্টেশন নির্মাণ করবে। এ জন্য স্থান নির্ধারণে দরপত্র আহ্বান করেছে তারা। তবে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) এখনও চার্জিং স্টেশন নির্মাণের জমি পায়নি।
এদিকে ডিপিডিসি জানিয়েছে, জায়গার সংস্থান না থাকায় তারা বিদ্যুৎ ভবনে একটি চার্জিং স্টেশন স্থাপনের জন্য পিডিবি চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন। এ ছাড়া গ্রাহকের আঙিনায় গ্রাহকের উদ্যোগে এ ধরনের স্টেশন স্থাপনের জন্য উৎসাহমূলক প্রচারণা ও যোগাযোগ করছে কোম্পানিটি।
চার্জিং স্টেশন স্থাপনে বিদ্যুতের মূল্য হার নির্ধারণ, স্থান নির্বাচন ও সার্ভিস চার্জ নির্ধারণের বিষয়টি সুরাহার জন্য কারিগরি কমিটির সভা গত ২৯ মে অনুষ্ঠিত হয়। এ বিষয়ে কোম্পানিগুলোর সমন্বয়ে কার্যক্রম অব্যাহত আছে। স্রেডার চেয়ারম্যান এ বিষয়ে সভাকে সর্বশেষ অগ্রগতি অবহিত করতে পারেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সারা বিশ্বেই এখন ইলেকট্রিক ভেহিকলের জয়জয়কার। একটি সাধারণ গাড়ি যেখানে প্রতি কিলোমিটার রাস্তা পার হতে ১২ থেকে ১৫ টাকা খরচ হয়, সেখানে একটি ইলেকট্রিক ভেহিকল গড়ে কিলোমিটারপ্রতি খরচ করে ৫০ পয়সা থেকে এক টাকা। সেই হিসাবে ইলেকট্রিক ভেহিকলকে সবচেয়ে সাশ্রয়ী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে ইলেকট্রিক ভেহিকলের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, একবার চার্জ শেষ হলে সেটি আবার চার্জ করে চালাতে একঘণ্টার বেশি সময় প্রয়োজন হয়। দেশের বাইরে এমন চার্জিং স্টেশন রয়েছে, যেখানে চার্জ দেওয়ার সঙ্গে মানুষ নিজের কাজগুলো সেরে নিতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে চাই। সে জন্য ইলেকট্রিক ভেহিকল দেশে আনতে চাই। এখন সরকার সেই উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী দিনের বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশের ভিশন ঘোষণা করেছেন। ইলেকট্রিক ভেহিকল আমাদের যেন সেই নবযাত্রার সঙ্গী হয়, সেই চেষ্টাই করছি।’